পর্যটন বিকাশে ইতিবাচক মানসিকতা, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও সমন্বিত উদ্যোগের দরকার মন্তব্য করে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং বলেন, পার্বত্যাঞ্চলে পর্যটন বিকাশে মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। পাশাপাশি এখানকার বসবাসরত স্থানীয় জনসাধারনের জীবনযাপন ও কৃষ্টি-কালচারের প্রতিও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আয়োজনে শনিবার দিনব্যাপী রাঙ্গামাটির পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে টেকসই ও দায়িত্বশীল পর্যটন উন্নয়ন শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন হবে, তবে কাউকে বা কোন সম্প্রদায়কে বঞ্চিত করে নয়। পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বিভিন্ন জাতির গোষ্ঠীর জীবনমান, কৃষ্টি-কালচারকে সামনে রেখে এবং ভৌগলিক অবকাঠামো অক্ষুন্ন রেখে পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন ও বিকাশ ঘটাতে হবে। তবে সে উন্নয়ন হতে হবে টেকসই ও দায়িত্বশীল। যদিও বা উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা পরিষদ এ অঞ্চলের অবকাঠামো ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। তবুও বলতে হয়, উপযুক্ত উদ্যোগ ও পরিকল্পনার অভাবে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা থাকলেও প্রত্যাশিত উন্নয়ন হচ্ছে না।
তিনি বলেন, এটি এমন একটি অঞ্চল, পর্যটন বিকাশের ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় একটি গুরুত্বপুর্ণ অঞ্চল। এ অঞ্চলে পর্যটন বিকাশের সাথে সাথে পরিবর্তন ঘটবে এখানকার জীবনমানের, অর্থনীতির চাকাও সচল হবে। কর্মসংস্থানের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হবে। তবে, সবার আগে প্রয়োজন পর্যটন বান্ধব মানসিকতা। এখনো এ অঞ্চলে পর্যটন বান্ধব মানসিকতা তৈরি হয়ে উঠেনি। পর্যটকদের আগ্রহ বাড়াতে স্থানীয়দের আচার-আচরণে পরিবর্তন ঘটাতে হবে। ব্যবসায়ীদের গলাকাটা দামের প্রবনতা কমাতে হবে। পর্যটন মৌসুমে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার স্বপ্ন পরিহার করতে হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, তিন পার্বত্য জেলার পৌর শহর ও পর্যটন স্পটগুলোকে কিভাবে আরো আকর্ষনীয় হিসেবে গড়ে তোলা যায় সে লক্ষ্যে পরিকল্পনা করতে যাচ্ছি। তিনি এজন্য তিন জেলা পরিষদ ও পৌরসভাকে তাগিদ দিয়ে বলেন, উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নিন, আমাকে ব্যবহার করুন। যেখানে যেখানে যাওয়ার বা বলার আমি বলবো।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরার সভাপতিত্বে সেমিনারে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. প্রদানেন্দু বিকাশ চাকমা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান আখতারুজ জামান খান কবির প্রমুখ। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাতত্য আর্কিটেকচার ফর গ্রিন লিভিং এর প্রধান স্থপতি রফিক আজম ও বেস ক্যাম্প বাংলাদেশ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তামজিদ সিদ্দিক স্পন্দন। দিনব্যাপী এ সেমিনারে পার্বত্য তিনজেলার সরকারি-বেসরকারী কর্মকর্তা, উন্নয়ন কর্মী, পর্যটন উদ্যোক্তা, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও গনমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ অংশ নেন।