পার্বত্য জনপদ খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় দেখা মিলেছে শীতের। বিকেল থেকে কুয়াশায় মুখ ঢাকছে পাহাড়ের আঁকাবাঁকা মাঠঘাট,পথ। রাতভর টুপটাপ কুয়াশা ঝরছে। সকালের পরে কুয়াশা কেটে উঁকি দিচ্ছে সূর্য। এরই মধ্যে সকালের সূর্যের আলোতে ভোরের শিশির মুক্তার চমক ছড়িয়ে জানান দিচ্ছে,শীত আসছে।
আজ মাটিরাঙ্গায় তাপমাত্রা ১৭ ডিগ্রি। হঠাৎ আবহাওয়ায় পরিবর্তন। ক’দিন আগেও যেখানে বেশ গরম অনুভূত ছিল,সেই আবহাওয়ায় এখন শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। শীত আগমনের সঙ্গে সঙ্গে ভোরবেলা পড়ছে শিশির। পাশাপাশি শীতের কাপড় পড়ে শীতকে বরন করতে দেখা গেছে অনেক কে।
আজ কার্তিকের ১৭ তারিখ। এরপরেই অগ্রহায়ণ মাস। তার আগেই পাহাড়ে শীত অনুভূত হচ্ছে। আগ্রহায়নে সারাদেশে ধানকাটা শুরু হয়। ধান কাটার পরপরই গ্রাম বাংলায় শুরু হয় নবান্ন উৎসব। শিশিরভেজা সকাল আর খেজুরের মিষ্টি রসের মিতালি শুরু হয়। সকাল বেলা খেজুরের রসের পিন্নি খেতে খেতে আড্ডা দেয়া এ যেন চিরাচরিত প্রথা।
এছাড়াও মাটিরাঙ্গা বাজার সহ গ্রামের দোকানগুলোতে বাহারি স্বাদের ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা বিক্রির ধুম পড়েছে। তাছাড়া এ সময় ভাপা পিঠা না খেলেই মনে হয় যেন শীতের উপভোগ ই বৃথা।
যদিও ঋতুর হিসেবে শীত আসতে এখনও বেশ সময় বাকি। তবে বৈচিত্রের কারণে গ্রাম বাংলায় অনেক আগেই শীতের দেখা পাওয়া যায়।
এবছর শীতের আগমন কার্তিকেই। প্রতিদিন রাত ও ভোর থেকে ঘন কুয়াশার চাদর ঢেকে যায়, সড়কে যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। সকালে পথঘাট হালকা কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায়। আমন ধানের পাতা আর ঘাসের ওপর ঝরছে শিশির কণা। শিশির ভেঙে চাষি ছুটে যান সবুজ ধানের ক্ষেতে। রোদের আলোয় ঘাসের ওপর ঝরে পড়া শিশির বিন্দু চকচক করে ওঠে।
শীতের আগমনী বার্তায় প্রস্তুতিও শুরু করেছে পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষের। যত্নে রাখা গরম কাপড় বের করতে শুরু করেছে ইতিমধ্যে। সন্ধ্যায় ও ভোরে হাঁটা-হাঁটি শেষে জমছে চায়ের আড্ডা।
মাটিরাঙ্গা সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আব্দুল হামিদ বলেন,গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ করেই বেশ শীত অনুভুত হচ্ছে। যদিও শিতকাল অল্প সময়ের জন্য আসে তথাপি আমরা সেটা বেশ উপভোগ করি। শিতকালে সিজনাল সব্জি,বাহারি রকমারি পিঠা পুলি পাহাড়ের লোকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি উপ-সহকারি কর্মকর্তা মোঃ আমজাদ হোসেন জানান,আশ্বিন মাসের শেষে মৌসুমি বায়ু কম সক্রিয় থাকায় ও উত্তরীয় বায়ুর কিছুটা প্রভাব থাকায় শেষ রাতে শীত নেমে এলে ঠাণ্ডা অনুভূত হয়। বিশেষ করে মৌসুমি বায়ু যখন বাংলাদেশের ওপর আর সক্রিয় থাকবে না তখন হালকা ধরনের শীত পড়বে।