প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখান না, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন : বীর বাহাদুর

purabi burmese market

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্ন দেখান না, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পার্বত্য তিন জেলায় ১০ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পরিকল্পনা বিভাগে আরও ১ হাজার কোটি টাকার বিদ্যুৎ প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। তা অনুমোদিত হলে পার্বত্য অঞ্চলের অধিকাংশ বিদ্যুৎবিহিন এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে।

গতকাল শুক্রবার রাঙ্গামাটি জেলার সদর উপজেলাধীন বালুখালী ইউনিয়নের মরিশ্যা বিল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে দুর্গম এলাকার ৬৩৯ সুবিধাভোগী পরিবারের মাঝে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সোলার হোম প্যানেল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর এসব কথা বলেন।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমার সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যের মধ্যে পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস-চেয়ারম্যান নুরুল আলম চৌধুরী, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য-প্রশাসন ইফতেখার আহমেদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য-বাস্তবায়ন ও প্রকল্প পরিচালক মো. হারুন-অর-রশিদ, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমা বিনতে আমীন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় বসবাসরত ৪০ হাজার অনগ্রসর দরিদ্র পরিবারের মাঝে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আজ ৬৩৯ পরিবারের ঘরে সৌর বিদ্যুতের আলো পৌঁছে যাবে। গতকাল কাপ্তাই উপজেলাধীন দুর্গম ওয়াগ্গা ইউনিয়নের ১১৫টি পরিবার সোলার প্যানেলের আলো ভোগ করা শুরু করেছে। পার্বত্য অঞ্চলের ছেলে মেয়েরা যাতে আলো, বাতাস পায় সে ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সোলার প্যানেল বিদ্যুৎ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এর জন্য কাউকে কোনো টাকা পয়সা দিতে হবে না।

dhaka tribune ad2

পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, প্রথম পর্যায়ে বিদ্যুতের আলো বঞ্চিত ১১ হাজার পরিবারকে সোলার হোম সিস্টেম বিতরণ ও স্থাপন করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ৩১ হাজার সোলার হোম প্যানেল বিতরণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট ৯ হাজার সোলার হোম সিস্টেম চলতি বছরের মধ্যে বিতরণ ও স্থাপন প্রদান কাজ শেষ হবে।

মন্ত্রী বলেন, এই সোলার প্যানেল সঠিকভাবে ব্যবহার করলে অন্তত ২০ বছর পর্যন্ত প্রত্যেকটি পরিবার বিনামূল্যে বিদ্যুতের আলো, ফ্যান ও মোবাইল চার্জারের সুবিধা পাবেন। মন্ত্রী বলেন, উপকারভোগীদের সোলার প্যানেলের ব্যবহারবিধি ভালোভাবে জানার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী প্রত্যেক উপকারভোগীকে নগদ আরো ৬৫০ টাকা করে দেওয়া হবে বলে জানান পার্বত্য মন্ত্রী।

মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি পার্বত্য শান্তি চুক্তির ইস্যু টেনে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো একটি গুলি খরচ না করে, হানাহানি না ঘটিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের দীর্ঘদিনের বিরাজমান সমস্যা শান্তিপূর্ণভাবে রাজনৈতিক ইস্যুতে সমাধান করেছেন।

তিনি বলেন, অতীতের ২০০ বছরের ব্রিটিশ শাসনামল, ২৩ বছরের পাকিস্তানের শাসনামল এবং বাংলাদেশের ৫১ বছরের শাসনামলে কোনো সরকারই মানুষের কল্যানের কথা চিন্তা করে নাই। সেইসময়ে বয়স্ক মানুষ, বিধবা, প্রতিবন্ধী সবই ছিল কিন্তু কোনো সরকারই ঐসমস্ত অসহায়, গরিব, দুঃখী মানুষকে কোনো প্রকার ভাতা বা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করে নাই। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর পরই এসমস্ত গরিব, দুঃখী, অসহায় মানুষের জন্য বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতার ব্যবস্থা করেছেন। সরকারের উন্নয়ন চিত্র জনগণের কাছে তুলে ধরে মন্ত্রী বীর বাহাদুর বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে পার্বত্য তিন জেলায় স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, খিয়াম, গীর্জা, মসজিদ, রাস্তাঘাট, ব্রীজ, কালভার্ট, বিদ্যুৎ, মানুষের জীবন মান উন্নয়ন সব কিছু হয়েছে। মন্ত্রী বীর বাহাদুর দৃঢ়তার সাথে বলেন, এ সরকারের মেয়াদকালের মধ্যেই পার্বত্য অঞ্চলের ১৪৪টি বিদ্যালয়কে সরকারীকরণের আওতায় আনা হবে।

মন্ত্রী বীর বাহাদুর বালুখালী সোলার প্যানেল হোম সিস্টেম বিতরণ শেষে নানিয়ারচর উপজেলাধীন বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফ এর সমাধীস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বীরশ্রেষ্ঠ শহীদের সমাধীস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। স্মৃতিস্তম্ভে দাঁড়িয়ে তিনি কিছু সময় নিরবতা পালন করেন এবং বীরশ্রেষ্ঠ শহীদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।