প্লীজ, পাহাড়ের শ্রমজীবী মানুষদের প্রতি মানবিক হোন

NewsDetails_01

পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের মোট আয়তনের এক দশমাংশ এলাকা জুড়ে অবস্থিত হলেও এ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষদের জীবিকার তাগিদে থাকতে হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে। মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ রোধে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নিম্নআয়ের শ্রমজীবী মানুষদের রুটিরুজির ভরসাস্থল অধিকাংশ কলকারখানা বন্ধ।

বেতন ভাতা দেয়নি সিংহভাগ প্রতিষ্ঠান। তার উপর যোগ হয়েছে বাড়িওয়ালাদের অমানবিক আচরণ। চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলের আশপাশের এলাকাগুলোতে বসবাস এসব নিম্নআয়ের শ্রমজীবীদের।

একদিকে শিল্প মালিকদের দায়িত্বহীনতা ও অন্যদিকে বাড়ির মালিকদের অমানবিকতার মাঝামাঝি রয়েছে পাহাড়ের এসব মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে বিগত কয়েকদিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চট্টগ্রাম, ঢাকা, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারসহ বিভিন্ন শিল্পাঞ্চল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে ফিরছে হাজারো মানুষ। গণপরিবহন বন্ধ থাকার পরও পায়ে হেটে, পণ্যবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আসছে তাঁরা। এতো পথ পাড়ি দিয়ে নিজের জেলায় প্রবেশের বেলায় তারা আবারও মুখোমুখি হচ্ছে কঠিন বাস্তবতার। এই যেন ত্রিমুখী বিপদের মুখে পাহাড়ের এসব মানুষ। তাঁরা যেখানে স্বল্প মজুরিতে শ্রম দেয় সেখানকার জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসন যদি তাদের পাশে ছায়া হয়ে দাঁড়ায় তাহলে তাদের বাড়ি ছেড়ে, খাবারের অভাবে শত মাইল পাড়ি দিয়ে পাহাড়ে আসতে হয় না।

NewsDetails_03

সরকার করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যেসব সম্মুখ যোদ্ধাদের লড়াই করছেন তাদের প্রতি বাড়িওয়ালা কিংবা সমাজের নেতিবাচক আচরণ না পড়ে সে লক্ষে সজাগ থাকতে সংশ্লিষ্টদের নজর রাখতে বলেছেন। সে সাথে যদি স্বল্প মজুরির খেটে খাওয়া এসব শ্রমজীবীরা যেন এ সময়ে নিষ্ঠুরতা শিকার না হয় সে দিকে নজর দেয়ার অনুরোধ করছি।

চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে বসবাসরত পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষদের জন্য যদি সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিরা দুই বেলা আহারের ব্যবস্থা ও মাথা গুজার ঠাঁই নিশ্চিত করে দিতে পারে তাহলে তাদের ঝুঁকি নিয়ে আর পাহাড়মুখী হতে হবে না। এতে করে যেমন মানুষগুলো ভাল থাকবে, ভাল থাকবে সবুজ বেষ্টিত পার্বত্য চট্টগ্রাম। মানুষগুলোর মজুরি স্বল্প হতে পারে, জীবন স্বল্প নয়। তারাও আমাদের মতো মানুষ, তাদের প্রতি মানবিক হওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আর এ কাজে যদি সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধিরা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় চান তবে পার্বত্য বীর মাননীয় মন্ত্রী কখনও না করবেন না বলে ভরসা রাখতে পারেন।

জুয়েল চাকমা
সাধারণ সম্পাদক, জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও সদস্য, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ।

প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। পাহাড়বার্তার -এর সম্পাদকীয় নীতি/মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই এখানে প্রকাশিত লেখার জন্য পাহাড়বার্তা কর্তৃপক্ষ লেখকের কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনও ধরনের কোনও দায় নেবে না।

আরও পড়ুন