সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি বছরের ২১ মে সহকারী প্রকৌশলী মো. কামাল হোসেনকে বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে পদায়ন দিয়ে বদলি করা হয়। বান্দরবান জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের সব দায়িত্ব নতুন পদায়নকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী কামাল হোসেনকে হস্তান্তর করার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নতুন পদায়নকৃত কামাল হোসেনের যোগদানপত্র গ্রহণ না করায় তিনি যোগ দিতে পারেননি।
পরবর্তীকালে ১১ জুলাই স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. খাইরুল ইসলাম মো. কামাল হোসেনকে বান্দরবানের পরিবর্তে খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে পদায়ন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেন। একই সঙ্গে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে সোহরাব হোসেনকে বান্দরবানে বহাল রাখা হয়।
এ দিকে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর না করলে ২৮ জুলাই দুপুরের পর খাগড়াছড়ির নির্বাহী প্রকৌশলী (অ.দা.) সোহরাব হোসেন স্ট্যান্ড রিলিজ হিসেবে গণ্য হবে। কিন্তু এখনও দুই জেলায় নির্বাহী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন মো. সোহরাব হোসেন।
খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী কামাল হোসেনের যোগদানপত্র গ্রহণ না করায় তিনি খাগড়াছড়িতেও যোগদান করতে পারেননি। উল্টো খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে কামাল হোসেনের পদায়নের আদেশ বাতিল করার জন্য অনুরোধ জানান চেয়ারম্যান।
২৫ জুলাই খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ কর্তৃক স্থানীয় সরকার বিভাগ বরাবর প্রেরিত চিঠিতে দাবি করা হয়, মো. সোহরাব হোসেন পার্বত্য জেলায় বিভাগীয় কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে দূরদর্শিতা ও দক্ষতা রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে পদায়নকৃত কর্মকর্তার (কামাল হোসেন) যোগদানপত্র গ্রহণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নতুন পদায়নকৃত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামাল হোসেন বলেন, বর্তমানে খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে দায়িত্বরত নির্বাহী প্রকৌশলী সোহরাব সাহেব খুব অভিজ্ঞ, দূরদর্শী এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের খুব এক্টিভসহ নানা কারণ দেখিয়ে জেলা পরিষদ আমার যোগদানপত্র গ্রহণ করেনি।
এ সময় তিনি আরও বলেন, চাকরিজীবনে আমি এর আগে বান্দরবানের দুর্গম রুমা থানচিতে কাজ করেছি। দীর্ঘদিন কক্সবাজারের তিন উপজেলায় সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। কিন্তু পার্বত্য এলাকায় বিচক্ষণতা নেই এমন অজুহাতে আমার যোগদানপত্র গ্রহণ করা হয়নি।
এ সময় কামাল হোসেন দাবি করেন, সোহরাব হোসেন ব্যক্তিগত প্রভাব খাটিয়ে প্রশাসনকে প্রভাবিত কয়ে এ সব কাজ করিয়েছেন। একই কারণে বান্দরবানে আমি যোগদান করতে পারেনি।
এ বিষয়ে জানার জন্য খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের বদলির আদেশপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী (অ.দা.) সোহরাব হোসেনকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
এ ছাড়া খাগড়াছড়ি জনস্বাস্থ্য অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি। অফিসের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি বেশ কয়েকদিন ধরে ঢাকায় রয়েছেন।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের পার্বত্য চট্টগ্রাম সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. জহীর উদ্দিন দেওয়ান জানান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদায়নকৃত প্রকৌশলীর যোগদানপত্র গ্রহণ করলে সমস্যা সৃষ্টি হতো না।
দুই জেলায় একই সমস্যা হওয়াকে প্রশ্নবোধক উল্লেখ করে তিনি বলেন, সোহরাব হোসেন বর্তমানে দুই জেলায় একই দায়িত্ব পালন করছেন। এতে প্রশাসনিক কাজে অসুবিধা হচ্ছে। বিভাগের পক্ষ থেকে স্টেপ (পদক্ষেপ) নেয়া হচ্ছে। কিন্তু জেলা পরিষদ ঝামেলা করছে বিধায় কার্যকর হচ্ছে না। তবে এ ব্যাপারে ডিপার্টমেন্ট এবং মিনিস্ট্রি অনেক স্ট্রং হয়।