বর্ষায় এক ভিন্ন রূপেই দেখা যায় এই পর্যটন শহরকে। আমাদের দেশের ভ্রমণ প্রিয়াসুরা ভ্রমণের জন্য শীত মৌসুমকে উপযুক্ত হিসাবে বেছে নেয়। হয়ত অনেকেই জানেন না, বৃষ্টির সময়ে পাহাড় ঘেরা জেলাটি যেন একটি সবুজ কার্পেটের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। যেদিকে দু’চোখ যাবে সবুজে সবুজে বর্ণিল এক নতুন সাজে ধরা দেবে আপনার কাছে।
অবিরাম বর্ষণের জলধারার পরশে পাহাড়ের বৃক্ষরাজি নব যৌবন লাভ করে। মেঘ আর পাহাড়ের সম্পর্কের কথা তো নতুন করে বলার কিছুই নেই। তবুও বলতে হয়, পাহাড়ের সাথে আকাশের সারি সারি মেঘ-ভেলার সর্ম্পকের নতুন মাত্রা এনে দেয় এই ঝুম বরষার সময়। পাহাড়ের বুক চিরে শত শত ঝর্না ধারা আপনাকে নিয়ে যাবে যেন কোন অচেনা ও নতুন কোন রাজ্যে। এছাড়া শহরের কাছের নীলআচল, চিম্বুক, জীবননগর আর নীলগিরির ওপর দাঁড়িয়ে মেঘ স্পর্শ করার ইচ্ছে হলে আপনাকে অবশ্যই ভ্রমণের জন্য বেছে নিতে হবে বান্দরবানকে।
নিশ্চয় মন চাইছে মেঘের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে। তবে আর দেরি কেন, জীবনের ছক থেকে বেরিয়ে হারিয়ে যেতে পারেন নীলাচলের মেঘে ঢাকা পাহাড়ে, মেঘলা লেকের স্বচ্ছ জলে, ভাসাতে পারেন ডিঙ্গি নৌকা অথবা ঘুরে আসতে পারেন চিম্বুক পাহাড়ের ম্রো আদিবাসীদের গ্রামে বা নীলদিগন্তে। ক্লান্ত শরীরকে জুঁড়িয়ে নিতে পারেন এই আদিবাসীদের মাচাং ঘরে। এছাড়া কৃষি প্রধান দেশের বিভিন্ন জেলার চাষাবাদের চেয়ে পাহাড়ে ভিন্ন চাষাবাদ জুমচাষ আপনার নজর কারবে নি:সন্দেহে।
২৬ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বাংলার দার্জিলিংখ্যাত চিম্বুক পাহাড়, চিম্বুক থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে নীলদিগন্ত পর্যটনস্পট। যেখান থেকে দেখে নিতে পারেন পাহাড়ের গা বেয়ে ভেসে বেড়ানো সারি সারি মেঘমালার চিত্র। এই ধরণের শত শত পাহাড় তার রুপ প্রদর্শনে ভিন্ন বাহার নিয়েই যেন আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। এই পাহাড়গুলোতে না উঠলে বান্দরবান ভ্রমণের মূল আনন্দই অধরা থেকে যাবে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা ভারতের দার্জিলিংয়ে বেড়াতে যান। অথচ পর্যাপ্ত আধুনিক সুযোগ সুবিধা বাড়ালে এবং জেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো আরও উন্নত করা গেলে আমাদের বান্দরবানের সৌন্দর্য ভারতের দার্জিলিংকেও হার মানাবে।
যাতায়াত : ঢাকা থেকে ট্রেনে বা বাসে চট্টগ্রাম তারপর চট্টগ্রাম থেকে সোজা বান্দরবান। বাংলাদেশের অনেক জায়গা থেকে সরাসরি বান্দরবান যাওয়া যায়। ঢাকা থেকে বান্দরবান পর্যন্ত সরাসরি নন এসি ভাড়া জনপ্রতি ৬২০ টাকা, এসি ১২০০ থেকে ১৫০০টাকা। এস আলম, হানিফ, ইউনিক, শ্যামলি, সেন্টমার্টিন ইত্যাদি বাস ছাড়ে ফকিরাপুল ও সায়েদাবাদ, কমলাপুর রেল স্টেশনের বিপরীত কাউন্টার থেকে।
চট্টগ্রাম থেকে বান্দরবান : বহদ্দারহাট টার্মিনাল থেকে পূরবী এবং পূর্বাণী নামক দুটি নন এসি বাস আছে। ৩০ মিনিট পরপর বান্দরবানের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ভাড়া জনপ্রতি ১১০ টাকা।
কোথায় থাকবেন : হোটেল ফোর স্টার, হোটেল হিলটন, হোটেল হিলভিউ ,হোটেল সাঙ্গু, হোটেল থ্রি স্টার, হোটেল প্লাজা , হোটেল গ্রীন হিল, হোটেল হিল বার্ড, হোটেল পূরবী,হোটেল রয়েলছাড়া আরো অনেক হোটেল আছে। ভাড়া ৪শ থেকে ৫হাজার পর্যন্ত যেখানে আপনি অনাসয়ে থাকতে পারেন।