সন্ত্রাসী আনাইয়্যা শ্রমিকদের সামনে প্রকাশ্যে আরো বলে, মঙ্গলবার থেকে রাবার বাগানে কষ আহরণ ও সকল কর্মকান্ডের নিষেধাজ্ঞা জারী করে দিলাম। যদি কোন শ্রমিককে সে মঙ্গলবার থেকে বাগানে আসতে দেখে, তাহলে খুন, গুম-অপহরণসহ অন্য ব্যবস্থা নিবে। এই কথা গুলো বলছিল, ৬ আগষ্ট সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার সময় বাইশারী-আলীক্ষ্যং সড়কের মাল্টাবাগান নামক স্থানে।
প্রত্যক্ষদর্শী চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানার মালিকানাধীন রাবার বাগানের সহকারি ম্যানেজার মনির হোসেন লালসহ অর্ধশতাধিক রাবার বাগানের শ্রমিকরা জানান, প্রতিদিনের ন্যায় ভোরে নিজ নিজ বাড়ী থেকে বাগানে যাওয়ার পথে মাল্টা বাগান নামক স্থানে পৌছলে একটি সন্ত্রাসী দল তাদের সামনে এসে বাগানে যেতে নিষেধ করে। সেই সন্ত্রাসীদলের নেতৃত্বে রয়েছে আনোয়ার প্রকাশ আনাইয়্যা ডাকাত। ঐ সময় অর্ধশতাধিক শ্রমিককে অস্ত্র উচিয়ে প্রকাশ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং সন্ত্রাসী আনাইয়্যা তাদেরকে বলে, আজকের মত কষ আহরণ করে চলে যাও। তবে আগামীকাল থেকে কোন শ্রমিক বাগানে কষ আহরনে আসতে পারবে না।
শ্রমিকেরা আরো জানায়, ঐ সময় সন্ত্রাসীদের হাতে দেশীয় তৈরী লম্বা বন্দুক ও দা ছিল। উক্ত ঘটনায় শ্রমিকসহ বাগান ম্যানেজাররা বিষয়টি সাথে সাথে বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ও ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করেছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে নাজমা খাতুন রাবার ইষ্টেটের সিনিয়র ব্যবস্থাপক আল আমিন জানান, বিষয়টি তিনি শ্রমিকদের শুনার সাথে সাথে সহকারী পুলিশ সুপার লামা সার্কেল আবু সালাম ও নাইক্ষ্যংছড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোঃ আলমগীরকে জানিয়েছেন।
বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম বলেন, শ্রমিকদের বাগানে যেতে নিষেধের বিষয়টি তিনি শুনার সাথে সাথে স্থানীয় প্রশাসনসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন।
এ বিষয়ে বাইশারী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপরিদর্শক আবু মুসা জানান, বিষয়টি তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে শুনেছেন, তবে কোন রাবার বাগান মালিকের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কেউ তাকে বিষয়টি অবহিত করে নাই। তারপরও তিনি সঙ্গীয় ফোর্স সহ ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকায় টহলের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদার করেছেন। তিনি আরো বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে শ্রমিকদের রাবার বাগানে যেতে কোন বাঁধার সৃষ্টি যেন না হয়, তার জন্য পুলিশ টহল জোরদার করা হবে।
উল্লেখ্য, বাইশারী-আলীক্ষ্যং সড়কের উভয় পাশে হাজার একর রাবার বাগান রয়েছে। উক্ত রাবার বাগানে প্রতিদিন পাঁচশতাধিক নিয়মিত/অনিয়মিত শ্রমিক কাজ করে থাকে। রাবার বাগান থেকে সরকার প্রতি মাসে কয়েক লাখ টাকার রাজস্ব আদায় করে। সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে বাগান বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে এলাকায় নেমে আসবে চরম দূর্ভোগ। তাই সচেতন মহল শীর্ষ সন্ত্রাসী আনোয়ার প্রকাশ আনাইয়্যা ও তার সহযোগীদের সাড়াশী অভিযানের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনার দাবী তুলেন। শীর্ষ সন্ত্রাসী আনাইয়্যার বিরুদ্ধে রামু, নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজার থানায় খুন, গুম, অপহরণ, চাঁদাবাজী, ডাকাতি সহ দুই ডজনের অধিক মামলা রয়েছে। তারপরও প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়ানোতে আতংকে রয়েছে স্থানীয় সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীসহ বাগান মালিকেরা।