বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা দূর্গম জনপদ বাইশারী ইউনিয়নের দূর্গম জনপদে স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দিতে নতুন দিগন্তের সূচনায় অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে কমিউনিটি ক্লিনিক।
কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইটাররা শুক্রবার এবং সরকারী ছুটির দিন ব্যতিত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিকে উপস্থিত থেকে প্রজনন স্বাস্থ্য পরিচর্যার আওতায় আন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের প্রসবপূর্ব প্রতিষেধক ঠিকাদান, প্রসব পরবর্তী সময়ে নবজাতকসহ মাকেও বিনা মূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে থাকেন। তাছাড়া সময়মত যক্ষা, কাশ, পোলিও, হাম, নিউমোনিয়া টিকাদানসহ শিশু ও কিশোরদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হয়।
বর্তমান সরকার সারা দেশের ন্যায় বাইশারী ইউনিয়নকে ৩টি জোনে ভাগ করে ৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেন। নারিচবুনিয়া, লম্বাবিল এবং দূর্গম এলাকা ক্যাংগারবিল কমিউনিটি ক্লিনিকে প্রশিক্ষিত সিএইচসিপির মাধ্যমে পাহাড়ী-বাঙ্গালীদের মাঝে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করে আসছে। এছাড়া আলীক্ষ্যং এ আরো একটি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এসব ক্লিনিকে দেখা যায়, রোগীদের ভীড়। পুরুষ ও মহিলারা পৃথকভাবে চিকিৎসা সেবার সুযোগ নিচ্ছেন। এতে রোগীরা বাড়তি সুবিধা পাওয়ায় দূরবর্তি শহর বা অন্য জায়গায় যেতে হচ্ছে না। যার কারণে ক্লিনিকের সেবার পরিধি ধীরে ধীরে জনপ্রিয় ও প্রশংসিত হচ্ছে। যেখানে সরকারী ভাবে ঔষুধ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন সুবিধা পাচ্ছে রোগীরা।
সেবা নিতে আসা আথুইমং পাড়া আবিং মার্মা ও ক্যাংগারবিল এলাকার আমেনা খাতুন জানায়, এলাকা থেকে পল্লী চিকিৎসকদের চেম্বারে যেতে প্রায় ২শত টাকা মোটর সাইকেল ভাড়ার প্রয়োজন হয়। তাছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক হওয়ায় কমিউনিটি ক্লিনিকে এসেই চিকিৎসা সেবা নিই। তাছাড়া এখানে সব ধরনের ঔষুধ বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। সত্তোর্ধ নাজির হোসেন জানায়, তিনি কমিউনিটি ক্লিনিকে আসছেন ঔষুধের জন্য।
সিএইচসিপি জহির উদ্দিন ছোট্ট বলেন, প্রতিদিন ক্লিনিকে পাহাড়ী-বাঙ্গালী মিলে প্রায় অর্ধশতাধিক সাধারণ লোকজন চিকিৎসা নিয়ে থাকে। তবে সরকারী ভাবে প্রাপ্ত ঔষুধের পরিমাণ কম হওয়ায় পর্যাপ্ত সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও রোগীদের চিকিৎসা প্রদানে সাধ্যমত চেষ্টা অব্যাহত আছে।
পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মোঃ আলম বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে অতি সাধারন মানুষের দৌরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। যার কারণে বর্তমানে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার অনেকটাই কমে গেছে এবং পরিবার পরিকল্পনা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আলম বলেন, বর্তমান সরকার মানুষের হাতের নাগালে চিকিৎসা সেবা পৌঁছিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছেন। তাই তিনি বাইশারীবাসীর পক্ষ থেকে সরকারের ভাল কাজের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।