বাঙালহালিয়ার গ্রামে গ্রামে বন্য হাতির উৎপাতে আতঙ্ক গ্রামবাসী

NewsDetails_01

রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার বাঙালহালিয়া গ্রামগুলোতে ফের বন্য হাতির উৎপাত শুরু হয়েছে। ভারত থেকে সীমান্ত পেরিয়ে ৪০ থেকে ৫০টি বন্য হাতি রাজস্থলী উপজেলার বাঙালহালিয়ার অধিকাংশ গ্রামে অবস্থান নিয়েছে। হাতির পাল গ্রামে প্রবেশের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার মানুষ।

গত কয়েক বছর ধরে মানুষ ও হাতি একে অপরকে তাড়া করে বছরের পর বছর পার করলেও সমস্যাটির স্থানীয় সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি কেউ। হাতির হাত থেকে ক্ষেতের ধানসহ বিভিন্ন ফসল রক্ষা করতে এসব গ্রামের লোকজন হতাহতের শিকার হচ্ছেন।

এদিকে আবারও দু’দিন ধরে বন্য হাতির পাল রাজস্থলীর বাঙালহালিয়া এলাকায় দেখতে পান স্থানীয় লোকজন।

বন বিভাগ বলছে, ধান, কাঁঠাল ইত্যাদি খাওয়ার জন্য বাংলাদেশে প্রবেশ করছে ভারতীয় বন্য হাতির পাল। রাজস্থলী উপজেলাটি পাহাড় ঘেঁষা। উপজেলাটির সদর ইউনিয়ন ও বাঙালহালিয়া ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামই পাহাড়ের কাছাকাছি। কয়েক বছর ধরে ভারত থেকে বন্য হাতির পাল সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে বাংলাদেশে আসতে শুরু করে। ফলে হাতির কারণে আতঙ্কে ও বেকায়দায় পড়েছেন রাজস্থলী উপজেলা, রাঙ্গুনিয়াসহ কাপ্তাইর রাইখালী এলাকার হাজার-হাজার মানুষ।

NewsDetails_03

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধান মৌসুম শুরু হয় তখন রাঙ্গুনিয়া কোদালা খুরুশিয়া সীমান্ত দিয়ে আসে হাতির পাল। প্রতি পালে ৪০ থেকে ৫০টি হাতি একবারে রাজস্থলী উপজেলার বাঙালহালিয়া এলাকায় প্রবেশ করে। হাতির তাণ্ডব থেকে নিজেদের রক্ষায় গ্রামের মানুষ পটকা ফাটানো, মশাল ও টর্চ লাইটের আলো জ্বেলে শব্দ করে তাড়ানো চেষ্টা চালাই। চলতি বছর বেড়েছে বন্য হাতির উৎপাত। গ্রামের যুবক ও বড়রা মিলে পাহারা দিচ্ছেন দিনে ও রাতে।

স্থানীয় কৃষক মংসুইলা, সানুচিং, রিমাপ্রু মারমা জানান, গত কয়েক বছর ধরেই হাতিগুলো ভারতীয় সীমান্ত পার হয়ে কাপ্তাই হরিণছড়া, চিৎমরম, শিলক, কোদালা সরভভাটা হয়ে খাবারের সন্ধানে আমাদের এলাকায় নেমে আসে। হাতির তাণ্ডবে আমরা রীতিমতো অতিষ্ঠ। ক্ষুধার্ত হাতির পাল খাবারের খোঁজে কর্ণফুলীর মুখ পার হয়ে আমাদের ফসল ও বাড়িঘর ভাঙে। মানুষের উপর আক্রমণও করেছে কয়েকবার এতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

গত সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত উপজেলার ১নং ঘিলাছড়ি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জয়নুল তালুকদার বাঙালহালিয়ার ড্রাগন বাগান সংলগ্ন রাত সাড়ে নয় টায় পৌছালে হাতিরপাল সামনে পড়ায় গুরুতর আহত হন।

রাইখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. জাহেদুল আলম বলেন, হাতির তাণ্ডব থেকে রক্ষা পেতে বাড়ির পাশে কাঁটা জাতীয় গাছ লাগাতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে পাশাপাশি গ্রামের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

রাজস্থলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শান্তনু কুমার দাশ বলেন,বাঙালহালিয়া ইউনিয়নে মাঝে মধ্যে হাতির উপদ্রব বেড়ে যায়। ক্ষুধার্ত হাতির পাল খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে নেমে আসে। তবে হাতির তাণ্ডব থেকে রক্ষা পেতে গ্রামের মানুষকে সতর্ক থাকতে হবে।

আরও পড়ুন