বান্দরবানে ভ্রমনে আসা পর্যটকদের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে আনন্দদায়ক ভ্রমন করার লক্ষে বান্দরবানে মাইক্রোবাস, জীপ ও পিকআপ মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড নামে একটি সমিতি ২০০৩ সালে যাত্রা শুরু করে। আর প্রাথমিক ভাবে শুরুতে ৩৬জন সদস্য, ৩৬ হাজার টাকা এবং ৩৬টি গাড়ী নিয়ে বান্দরবানে ভ্রমনে আসা পর্যটকদের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ভ্রমনের জন্য বান্দরবানে বান্দরবান মাইক্রোবাস, জীপ ও পিকআপ মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড কাজ শুরু করে।
সুত্রে জানা যায়, এই সংগঠনের মাধ্যমে যাতে এলাকায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা সার্বিক সহযোগিতা পায় সেজন্য এই সংগঠনে যুক্ত হয় পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএমে জাহাঙ্গীরসহ বান্দরবানের স্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও ব্যবসায়ীরা।
সুত্রে আরো জানা যায়, দীর্ঘদিন জেলায় ভ্রমনে আসা পর্যটকদের জীপ, পিকআপ, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন চাঁদের গাড়ীর মাধ্যমে বান্দরবানের বিভিন্ন পর্যটনস্পটে ভ্রমনের সুযোগ করে দিলেও করোনা ভাইরাস আর লকডাউন এর কারণে সমিতির কার্যক্রম কিছুদিন স্থবির হয়ে পড়ে আর এই সুযোগে কিছু বহিরাগত মালিক এবং চালক সমিতির কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই পর্যটকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় সমিতির ধার্য্যকৃত ভাড়া থেকে অতিরিক্ত অর্থ। শুধু ভাড়া বেশি নেওয়াই নয়, পাশাপাশি পর্যটকদের হয়রানি আর সমিতির শৃংঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করে অনেকেই সমিতির সুনাম নষ্ট করে।
এদিকে করোনা আর দীর্ঘ লকডাউন শেষে আবারোও পর্যটক যাত্রীদের উন্নত সেবা দেওয়ায় জন্য সকাল থেকেই বান্দরবান মাইক্রোবাস, জীপ ও পিকআপ মালিক সমবায় সমিতির সদস্যরা অবস্থান নেয় জেলা সদরের প্রবেশমুখে সমিতির কার্যালয়ের সামনে। সকাল থেকে সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক আর অন্যান্য সদস্যরা প্রতিটি পর্যটকদের সুন্দরভাবে বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ভ্রমনের জন্য সমিতির নির্ধারিত ভাড়া প্রদান মাফিক সিরিয়াল ভিত্তিক গাড়ীগুলোতে তুলে দেয়ার কাজ শুরু করে। এসময় সমিতির নেতৃবৃন্ধরা সমিতির বাইরে থাকা গাড়ীগুলোকে সমিতির অন্তভুক্ত হওয়া এবং বেশিভাড়া নিয়ে যাত্রীদের হয়রানি না করার জন্য সর্তক করে।
সুত্রে আরো জানা যায়, বান্দরবানের দুর্গম পয়েন্টগুলোতে যাতে সমিতির চালকরা গাড়ী নিয়ে পর্যটকদের নিয়ে যেতে পারে এবং কেউ যাতে কোন অন্যায় করতে না পারে তার জন্য বান্দরবান-নীলগিরি এবং বান্দরবান-রোয়াংছড়ি সড়কে ৪ জন চেকার নিয়োগ করা হয়।
এদিকে দীর্ঘদিন পরে সমিতির এই শৃংঙ্খলায় খুশি মালিক ও চালকরা। সমিতির সদস্য ও মাইক্রোবাসের মালিক মিনারুল হক জানান, দীর্ঘদিন পরে আমরা সবাই একসাথে সড়কে অবস্থান করে বান্দরবানে বেড়াতে আসা পর্যটকদের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি, আমরা চাই সমিতির শৃংঙ্খলা রক্ষা করা এবং বাইরের কোন গাড়ী যাতে পর্যটকদের হয়রানি করে যাত্রী পরিবহন না করে।
বান্দরবানে মাইক্রোবাস, জীপ ও পিকআপ মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেড এর লাইন পরিচালক মো.কামাল হোসেন জানান, ১লা ডিসেম্বর থেকে আমরা আমাদের পুরোনা রীতি মাফিক কার্যক্রম শুরু করেছি এবং পর্যটকরা যাতে সমিতির অফিসের সামনে থেকে গাড়ী ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে ভ্রমন করতে পারে সেজন্য আমরা সুদক্ষ চালক ও আধুনিকমানের গাড়ীগুলো তাদের ভাড়া দিয়ে যাচ্ছি।
লাইন পরিচালক মোঃ কামাল হোসেন আরো জানান, নতুনভাবে সিরিয়াল মাফিক গাড়ীগুলো চলাচলের ফলে সমিতির চালকদের মধ্যে আগেরমত শৃংঙ্খলা ফিরে এসেছে।
সমিতির অর্থ সম্পাদক মো.হানিফ জানান, ২০০৩সালে সৃষ্টি হওয়া এই সংগঠনে বর্তমানে প্রায় ৪০০জন সদস্য অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আর সমিতির প্রায় ৪শ গাড়ী বান্দরবানে পর্যটকদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন করোনায় নিয়মের কিছু হেরফের হলে ও এবার আগের নিয়মে গাড়ীগুলো চলাচলের জন্য আমরা সিরিয়াল করেছি এবং সমিতির মালিকদের নিয়ে আমরা প্রতিদিন সকাল বিকাল বিভিন্ন পয়েন্টে আমাদের গাড়ী ও চালকদের নিয়ন্ত্রণ করছি।
সমিতির সভাপতি মো.নাছিরুল আলম বলেন, দীর্ঘদিন করোনার কারণে অচলাবস্থা ছিল তবে আবার আমরা এক হয়ে সড়কে অবস্থান নিয়ে যাত্রীদের সেবায় কাজ করে যাচ্ছি এবং যারা সমিতির অন্তভুক্ত নয় এবং পর্যটকদের বিভ্রান্ত করে যাত্রী নিয়ে বিভিন্ন পয়েন্টে ছুটে যাচ্ছে তাদের সমিতির অন্তভুক্ত করা এবং যাত্রীদের হয়রানি না করার জন্য অনুরোধ করছি।