গত জুলাই মাসে পাহাড় ধসের ঘটনা, বিরুপ আবহাওয়া ও চলতি মাসে রোহিঙ্গা সংকটের কারনে বান্দরবান জেলা পর্যটক না আসায় সংকটময় সময় পাড় করছে জেলার পর্যটনের সাথে সংশ্লিষ্টরা। এ সংকট কাটাতে হোটেল মোটেল গুলোতে এবার পর্যটক টানতে ৪০% ছাড় ঘোষনা করেছে হোটেল মোটেল মালিক সমিতি।
হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সূত্র পাহাড়বার্তাকে জানায়, গত কয়েক মাস ধরে বান্দরবান জেলায় পর্যটক আগমনের সংখ্যা বেশ কমে যাবার কারনে অলস সময় কাটছে তাদের, ব্যাপক ক্ষতির সন্মুখিন হবার কারনে পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা পর্যটকদের জন্য হোটেল মোটেলের সিট ভাড়ায় বিশেষ ছাড় ঘোষনা করেছে। গতকাল রোববার ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে হোটেল মোটেল মালিক সমিতির আওতা ভুক্ত জেলা শহরের ৪৫টি হোটেল মোটেলে আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর ১০ দিন এই এই ছাড় থাকবে।
সূত্র জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আশানুরুপ পর্যটক না আসার কারনে মন্দা ভাব বিরাজ করছে জেলার বিকাশমান পর্যটন শিল্পে। অর্থসংকটের কারনে হোটেল-মোটেলগুলোর মালিকরা তাদের কর্মচারীদের মাসিক বেতন মেটাতে পারছেনা, মূলত এ কারনেই শহরের বিভিন্ন হোটেল-মোটেলে ছাড় দেবার মধ্যে দিয়ে পর্যটক টানতে চেষ্টা করছে পর্যটন ব্যবসায়িরা।
জেলা শহরের হোটেল গ্রিনহীলের ম্যানেজার আশিষ ধর পাহাড়বার্তাকে বলেন, এক সপ্তাহ ধরে হোটেলের রুমের মাত্র ২টি রুম ভাড়া হয়েছে, আয় না হবার কারনে খুব সংকটে আছি আমরা।
বান্দরবানের পর্যটন শিল্পের বিকাশকে কেন্দ্র করে অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান এবং দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরালেও ফের বেকারের খাতায় নাম লেখাতে হচ্ছে স্থানীয় যুবকদের। জেলার হোটেল থেকে কর্মচারী ছাটায় করে অর্থ সংকট কাটানোর চেষ্টা করলেও অনেক যুবক বেকার হয়ে যাবার কারনে তাদের পরিবারে হতাশা বিরাজ করছে।
অন্যদিকে হোটেল-মোটেলগুলোর মতো দূর যাত্রার ভ্রমনের জন্য জীপ,হাইস, মাইক্রো গাড়ী উচ্চ ভাড়া দিয়ে পাওয়া দূস্কর হলেও এখন ডিসকাউন্ট দিয়ে যাত্রী পাচ্ছেনা বলে জানা গেছে। শহরের মেঘলা, নীলাচল, ন্যাচারেল পার্ক, বৌদ্ধ জাদী, চিম্বুক, শৈলপ্রপাত, মিলনছড়ি এখন অনেকটা পর্যটক শুন্য থাকার কারনে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা পড়েছে বেকায়দায়। সকাল থেকে স্পটগুলোতে তারা তাদের বিভিন্ন ধরণের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসলেও কোন ক্রেতা পাচ্ছেনা।
এই ব্যাপারে পর্যটকবাহী জীপ চালক জসিম উদ্দিন বলেন, বর্ষা মৌসুমও বিভিন্ন কারনে জেলায় পর্যটক নেই বললেই চলে, এখন কম ভাড়া দিয়ে গাড়ি কেউ নিচ্ছেনা।
আরো জানা গেছে, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে জেলার প্রাকৃতিক পরিবেশ, পাহাড় চূড়ায় ভেসে বেড়ানো মেঘের ভেলা দেখার জন্য দিনে হাজার হাজার পর্যটক আসলেও বর্তমানে শতাধিক পর্যটক আসছে বান্দরবানে। ফলে পর্যটন ব্যবসায়িরা তাদের ব্যবসায় ক্ষতির সন্মুখিন হচ্ছে, অন্যদিকে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
এই ব্যাপারে বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম পাহাড়বার্তাকে বলেন, আমাদের ছাড়ের এই ঘোষনা, আশাকরি পর্যটকরা লুফে নিয়ে বান্দরবানে ভ্রমনে আসবে পরিবার পরিজন নিয়ে।