বান্দরবানে অপ্রয়োজনে হচ্ছে করোনা পরীক্ষা ! রিপোর্ট পেতে দীর্ঘ জট
১৫০৮ নমুনা টেস্টে আটকে আছে ৫৮৪ রিপোর্ট
অপ্রয়োজনে করোনার নমুনা সংগ্রহ ও সক্ষমতার চেয়ে বেশি নমুনা সংগৃহীত হওয়ায় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের (কমেক) পিসি আর ল্যাবে বান্দরবান জেলার ৫৮৪ জনের নমুনার জট সৃষ্টি হয়। কিন্তু এর এই ল্যাবের ওপর নির্ভর করছে কয়েকটি জেলা-উপজেলার উল্ল্যেখযোগ্য সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা।
বান্দরবানে অনেকেই কোন করোনা রোগীর সংস্পর্শ আসলে কোন উপসর্গ ছাড়া, একটু জ্বর/কাশি হলে নিজেকে শারীরিক দূর্বল মনে করে বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি,বিভিন্ন সরকারী উচ্চ পর্যায়ে কর্মকর্তা, সিভিল সার্জন ও ডাক্তারদের অনুরোধ করে অপ্রয়োজনে করোনা পরীক্ষা করাছেন। যার কারণে করোনা উপসর্গ থাকা রোগীদের রিপোর্ট পেতে জট লেগেই আছে, ফলে নমুনা রিপোর্ট আসতে ১০ থেকে ১৮ দিন পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে, তৈরি হচ্ছে জট।
বান্দরবানে একজন নারী নাম-পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,করোনা ভাইরাসের উপসর্গ থাকায় এক সপ্তাহ আগে তিনি নমুনা দিয়েছেন। কক্সবাজার ল্যাবে রিপোর্ট পেতে তদবির ও করেছেন, কিন্তু পরীক্ষার রিপোর্টের এখনো না আসাতে তিনি আতংকে দিন কাটাচ্ছেন।
বান্দরবানের স্থানীয় বাসিন্দা মেডিকেল কলেজের ছাত্রী বেনেজীর জাহাঙ্গীর বলেন, বান্দরবানে ল্যাব প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এ সমস্যা সমাধান সম্ভব না। আমরা এর সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে আইসোলেশন সেন্টারকে দেখছি- যেমন, লক্ষণ প্রকাশ শুরু হওয়ার পর নমুনা সংগ্রহ করে রিপোর্ট আসার আগ পর্যন্ত রোগীকে আইসোলেশনে রাখতে হবে। এতে ২টি সমস্যা সমাধান হবে।
তিনি আরো বলেন, রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সে পর্যবেক্ষণে থাকবে এতে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হবে ও সংক্রমণ ঠেকানো যাবে। সকলের পক্ষে বাসায় আইসোলেশনের ব্যবস্থা নাও থাকতে পারে। আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা থাকলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে।
বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা: অংসই প্রু মারমা পাহাড় বার্তা’কে বলেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যই করোনা পরীক্ষা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। বান্দরবান থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহ করে কক্সবাজার ল্যাবে পাঠানো হয়, এতে আমাদের রোগীদের রিপোর্ট আসতে আমরা তিন দিন সময় আশা করলেও বেশ একটা লম্বা সময় রিপোর্ট পেতে লেগে যায়।
তিনি আরো জানান,কক্সবাজার থেকে দ্রুত রিপোর্ট পেতে হিমশিম খেতে হয়। যদি দ্রুত রিপোর্ট পেলে করোনা রোগীদের আলাদা করতে পারতাম।
এব্যাপারে জানতে চাইলে পাহাড় বার্তাকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. অনুপম বড়ুয়া বলেন, কক্সবাজারেও করোনা রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলছে, সাথে পরীক্ষাও, তার ভেতর রয়েছে রোহিঙ্গাদের করোনা পরীক্ষার চাপ। বলতে গেলে কক্সবাজার ল্যাবে সক্ষমতার চেয়ে বেশি নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে।
এদিকে করোনা পরীক্ষার দ্রুত প্রতিবেদন পেতে বান্দরবানে করোনা ল্যাব স্থাপনের জন্য গত ৯জুন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে জরুরী পত্র পাঠান সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ এপ্রিল কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের (কমেক) পিসিআর ল্যাবে বান্দরবানে প্রথম করোনা পরীক্ষা শুরু হয়। বান্দরবান জেলায় বর্তমানে করোনা রোগীর সংখ্যা ৭৬ জন। করোনায় মারা গেছে ১ জন।