বান্দরবানে উ চ হ্লা ভান্তের মরদেহ আনা হবে সোমবার

NewsDetails_01

বৌদ্ধ ধর্মীয় ধর্মগুরু উ চ হ্লা ভান্তের মৃত্যুর দিনক্ষন ও তার মরদেহ বান্দরবানে আনা নিয়ে ভান্তের পরিবারের ও ভান্তের শিষ্যরা ব্যাপক ধুম্রজাল তৈরী করলেও অবশেষে চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা প্রশাসন ২৪ ঘন্টার মধ্যে মরদেহ রাউজান এর বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আল্টিমেটাম প্রদান করলে টনক নড়ে ভান্তের শিষ্য ও স্বজনদের। আর এরি প্রেক্ষিতে আগামী সোমবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে বান্দরবানে উ চ হ্লা ভান্তের মরদেহ আনা হবে। আর এনিয়ে এস বাসু দাশ এর এক্সক্লুসিভ প্রতিবেদন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (১০এপ্রিল) চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় উ চ হ্লা ভান্তে মারা গেলেও তান্ত্রিক ক্ষমতার বলে তিনি জীবিত হবেন এই আশায় তার পরিবার ও শিষ্যরা গত ১৩ এপ্রিল (সোমবার) পর্যন্ত লাইফ সাপোর্টে রেখে ভান্তেকে মৃত ঘোষনা করে। মৃত ঘোষনার পর বান্দরবানের ভিক্ষু পরিষদ ও খিয়ংওয়া কিয়ং রাজ বিহার কমিটিসহ জেলার সিনিয়র নেতাদের অগোচরে ভান্তের নিজ মাতৃভূমি বান্দরবানে মরদেহ না এনে চট্টগ্রামের রাউজানের খৈয়াখালি বৌদ্ধ বিহারে নিয়ে যাওয়া হয়।

আরো জানা যায়, আর এর ফলে করোনা পরিস্থিতির কারনে একদিকে রাউজানে বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে ব্যাপক সন্দেহের সৃষ্টি হয় এবং প্রশ্ন দেখা দেয়, বান্দরবানে মরদেহ না নিয়ে কেন রাউজানে আনা হলো। একপর্যায়ে রাউজান প্রশাসন থেকে খৈয়াখালি বৌদ্ধ বিহারে আল্টিমেটাম দেওয়া হয় ২৪ ঘন্টার মধ্যে মরদেহ সেখান থেকে (রাউজান) সরানোর জন্য। এরি প্রেক্ষিতে বান্দরবানে মরদেহ আনার জন্য জেলা শিষ্য বৌদ্ধ নেতাদের তদবির শুরু করে ভান্তের পরিবার ও তাদের শিষ্যরা। এর ফলে আজ শনিবার (১৮এপ্রিল) রাত থেকে মরদেহ আনার প্রক্রিয়া শুরু করে জেলার শীর্ষ বৌদ্ধ অনুসারী নেতারা এবং তা রাউজান উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়, যার কারনে রাউজান উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি মেনে নেয়।

NewsDetails_03

আরো জানা গেছে, একদিকে বান্দরবানের বৌদ্ধ অনুসারী শীর্ষ নেতাদের গোপন করে মরদেহ সেখানে গোপনের নেওয়ার কারনে ব্যাপক ক্ষোভের দেখা যায় মার্মা সম্প্রদায়সহ স্থানীয় বৌদ্ধ ভিক্ষুদের মধ্যে। অন্যদিকে রাউজান প্রশাসনের আল্টিমেটামের কারনে ভান্তের শিষ্য ও স্বজনরা জেলার শীর্ষস্থানীয় বৌদ্ধ অনুসারী নেতাদের মরদেহ আনার অনুরোধ জানালে তারা উদ্দ্যেগ গ্রহন করে। এর প্রেক্ষিতে জেলার শীর্ষ নেতাদের ঘরোয়া বৈঠকের পর বান্দরবানের জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগকে অবহিত করেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা। আর সেই হিসাবে কাল রোববার থেকে মরদেহ আনার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

এই ব্যাপারে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা পাহাড়বার্তা’কে বলেন, শ্রীমৎ উ পঞঞা জোত মহাথের (উচহ্লা ভান্তে)র মরদেহ যথাযথ মর্যাদায় আগামী সোমবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে বান্দরবানের আনার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

প্রসঙ্গত,গত শুক্রবার (১০ এপ্রিল) উ চ হ্লা ভান্তের মৃত্যুর সংবাদ প্রকাশের বিষয় কয়েকজন ব্যক্তির বাধার কারনে ভেঙ্গে যায়। আর এই ব্যক্তিরা হলেন, ভান্তের পরিবারের সদস্য ভান্তের ভাই নু চ প্রু,কাস্টম কর্মকর্তা, চ থুই প্রু কালচারাল অফিসার, ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠি সাংস্কৃতিক ইনিস্টিটিউট ও থুই থুই প্রু এনজিওতে কর্মরত এবং তাদের দুই বোন হ্লা হ্লা চিং, কি কি প্রু । এই বিষয়ে তাদের মধ্যে, খিয়ংওয়া কিয়ং রাজ বিহারের সাধারণ সম্পাদক বাঁচা মং মার্মা, ভান্তের ভাই নু চ প্রু কাস্টম কর্মকর্তা ও বোন হ্লা হ্লা চিং সবচেয়ে কঠোর অবস্থান গ্রহন করে। এরফলে ভান্তের মৃত্যুর দিনক্ষন ও মৃত্যু নিয়ে ব্যাপক গুজব ছড়িয়ে পড়ে, জন্ম দেয় ব্যাপক রহস্যেরও।

আরও পড়ুন