বান্দরবানে করোনার জালে শিশুদের বন্দি জীবন
করোনা ভাইরাসে নাকাল গোটা বিশ্ব। সারা বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জ্যামিতিক হারে দেশব্যাপী বাড়ছে করোনা আক্রান্তের হার। দীর্ঘ তিন মাস অন্য জেলাগুলোর মতো বান্দরবান জেলাও লকডাউন ছিলো। সরকারের নির্দশনা অনুযায়ী বর্তমানে সীমিত আকারে দোকানপাট, বাস চলাচল শুরু হলেও ঝুঁকি থাকার কারনে ঘর থেকেই যেন বের হতে পারছেনা শিশুরা।
বান্দরবানে দিন দিনে বাড়ছে করোনা ভাইরাসের শনাক্তের সংখ্যা। আর এ ভয় থেকে বাইরে নেই বান্দরবানের শিশু শিক্ষার্থীরাও। শিশুদের মাঝেও বিরাজ করছে আতঙ্ক। প্রায় শিশু শিক্ষার্থীরা বড়দের চেয়েও বেশি নিজেকে যেন ঘরবন্দি করে রেখেছে। আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিনোদন কেন্দ্র খোলা থাকলেও শিশুদের ঘরের বাইরে যাওয়া হলেও এখন এসব বন্ধ থাকার কারনে কার্যত তারা ঘরবন্দি।
জানা গেছে, ঘরেই খেলা, ঘরেই খাওয়া, সব কিছুতেই যেন চার দেয়ালের মধ্যে তারা। করোনার ভয়ে অভিভাবকরাও তাদের ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছে না কোনভাবেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণার পর থেকেই শিশু শিক্ষার্থীরা হয়ে পড়েছে গৃহবন্দি। নেই স্কুল, নেই টিউশনি, ইচ্ছা থাকলেও দেয়া হচ্ছেনা বন্ধুদের সাথে আড্ডা আর খেলা তো নেই বললেই চলে। প্রায় গত ৩ মাস ধরে শিশু শিক্ষার্থীরা রয়েছে গৃহবন্দি হয়ে।
দিন যত যাচ্ছে, তত বেড়েই চলেছে করোনা আতঙ্ক। যে শিশুরা সারদিন ঘর বাহিরের স্কুল মাঠ, ক্লাস মাতিয়ে রাখতো, সব এখন হয়ে গেছে বন্ধ তা জানিয়ে অভিভাবকরা বলেন, অদৃশ্য এই ভাইরাস যা দেখাও যায়না, সাথে সাথে অনুভবও করা যায় না এই পরিবেশে কি শিশুদের বাহির নিয়ে যাওয়া বা বাহিরে অন্যের সাথে খেলতে দিতে মন চায় বলেন?
জেলা শহরের ওয়াপ্দা ব্রিজ এলাকার শিশু শিক্ষার্থী দিবা বলে, স্কুল বন্ধ, বাহিরেও খেলতে যেতে পারছি না, ঘুরতেও যেতে পারছি না। সারাদিন ঘরে থাকতে হচ্ছে ঘুম, খাওয়া, টিভি দেখা, মোবাইলে গেমস খেলা এই ভাবে চলছে।
অপর শিক্ষার্থী সেগুন বাগিচা এলাকার চুরাইব চৌধুরী জানায়, ঘরে সব সময় থাকতে ভালো লাগছেনা কিন্তু করোনার কারনে তো বের হতে দিচ্ছে না। এছাড়াও পড়াশুনাও করতেও ইচ্ছে করছেনা।
বান্দরবান শিশু একাডেমী বেশ কিছু শিশু শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারাও জানায়, বন্দি জীবনের কথা, স্কুলের না যেতে পারাসহ খেলতে না পারার দুঃখের কথা। আবার অনেকে জানান, স্কুল বন্ধ, তাই বন্ধুদের সাথে বসে বিস্কুট খাওয়াও বন্ধ।
এই সময়ে শিশুদের যত্নের ব্যাপারে বান্দরবান সদর হাসপাতারের আরএমও ডাক্তার জসিম উদ্দীন পাহাড় বার্তাকে বলেন, নিয়মিত গোসল করানো,বার বার হাত ধোয়ার অভ্যাস করা,পুষ্টিকর খাবার দেয়া বিশেষ করে ডিম, দুধ, মাছ, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল যেমন কমলা, মাল্টা, লেবুর জুস দেয়া উচিত।
তিনি আরো বলেন, আইসক্রিম/ফ্রিজের ঠান্ডা খাবার পরিহার করতে হবে, বাইরে বের করা থেকে বিরত থাকা, বের হলে মাস্ক ব্যবহার করা, শিশুদের বাসার ছাদে নিয়ে রোদে সময় কাটানো, বিশেষ করে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত।