সুত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জায়গা-জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে নুরনাহার বেগমের সাথে তার মেয়ে জান্নাতুল ফৌরদোস খুশি এবং মেয়ের জামাই নাজমুল ইসলামের মধ্যে। প্রায় সময় তাদের মধ্যে জায়গা সম্পত্তি নিয়ে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত।
এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে নিউগুলশান এলাকায় ঘরের মেইন দরজা খোলা নিয়ে নুরনাহার বেগমের সাথে তার মেয়ে জান্নাতুল ফৌরদোস খুশি এবং মেয়ের জামাই নাজমুল ইসলামের মধ্যে ঝগড়া হয়। আহত নুরনাহার বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমি ঘরের বাইরে গিয়ে টিভি দেখে আবার ঘরে ফেরত এসে ঢুকতে চাইলে দেখি ঘরের মূল ফলকে তালা আটকানো,তখন আমি দরজা খোলার জন্য ঢাকাঢাঁকি করলে মেয়ে জান্নাতুল ফৌরদোস খুশি এবং মেয়ের জামাই নাজমুল ইসলাম এসে আমার সাথে খারাপ আচরণ করে এবং গেইট না খুলে বন্ধ করে রাখে এবং এক পর্যায়ে আমাকে ধাক্কা মারলে আমি মাটিয়ে পড়ে গিয়ে আঘাত পায়,পরে এলাকার লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে আমার ছেলেকে খবর দিলে ছেলেরা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে নাজমুল ইসলাম বলেন,“ এটা সম্পূর্ন মিথ্যা কথা,এ ধরনের কোন ঘটনা আমি বা আমার স্ত্রী করে নাই,আমরা এ ব্যাপারে কিছু জানিও না। জায়গা নিয়ে ঝামেলা চলছে তাই আমাদের কে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা নাটক করে অভিযোগ করা হচ্ছে”।
নুরনাহারের ছেলে মো:ফরিদ আহম্মদ বলেন,“ দীর্ঘদিন ধরে আমার বোন জান্নাতুল ফৌরদোস খুশি এবং এবং জামাই নাজমুল ইসলামের সাথে জায়গা নিয়ে আমাদের সমস্যা চলছে।অনেকবার বিচার শালিস হয়েছে, কিন্তু তারা কিছুতেই কিছু মানছে না। এর আগেও তারা আমার ছোট ভাইয়ের উপর হামলা চালিয়েছে। যেখানেই বিচার হোক না কেন আমার বোনের জামাই প্রথমে সব মেনে নেয়,পরবর্তীতে সে বিচার মানে না ও কারো কথা শুনে না।
মো:ফরিদুল আলম আরো বলেন ,আমরা দীর্ঘদিন বান্দরবানে বসবাস করছি আর ২০০০ সালে আমার বোন জান্নাতুল ফৌরদোস খুশিকে বিয়ে করে নাজমুল ইসলাম । পরে সে বান্দরবানে কোন কাজ কর্ম না করে বেকার থাকায় প্রায় সময়ই আমাদের কাছে যৌতুকের জন্য চাপ দেয়।এক পর্যায়ে আমার বাবা মেয়ের জামাইর ভবিষ্যতের জন্য একটি ঠিকাদারি লাইসেন্স করে দেন এবং লাইসেন্স করতে গিয়ে স্থায়ী বাসিন্দার সনদ নিতে গিয়ে আমার পিতার নামে রেকর্ডভুক্ত ৩১৩ নং মৌজার ৫৮২ হোল্ডিং থেকে ৫শতক জমি তাকে বিক্রি করার জন্য নামমাত্র মুল্যে একটি বায়না সম্পন্ন করা হয়। কিন্তু প্রতারক নাজমুল ইসলাম মিউটিশান মামলার আবেদন কপিতে ছলচাতুরী করে চৌহদ্দি পরিবর্তন করে ৫৮২ হোল্ডিং এর পরিবর্তে ৬৪২ হোল্ডিং এর জমি দাবি করে বসে। মূলত নাজমুলকে আমার পিতা যে জমি বিক্রির জন্য বায়না করা হয় সেটা ছিল দক্ষিন ক্যাচিংঘাটায়,কিন্তু সে প্রতারণামুলক ৬৪২ হোল্ডিং এর জমি দাবি করে যেটা বর্তমানে নিউগুলশান এলাকায় রয়েছে।এই নিউগুলশান এলাকায় বিয়ের পরই তাকে ভাড়াটিয়া হিসেবে আশ্রয় দেন আমার পিতা কিন্তুু পরবর্তীতে সে লোভের বশবর্তী হয়ে আমাদের হয়রানি শুরু করে। ফরিদ আহম্মদ আরো বলেন ,নাজমুল দীর্ঘদিন ধরে আমাদের হয়রানি করছে এবং আমাদের বিরুদ্ধে উল্টো বিভিন্ন জায়গায় মামলা দিয়ে আমাদের সর্বস্বান্ত করছে,আমরা নাজমুলের প্রকৃত বিচার চাই । ’
এ ব্যাপারে বান্দরবান সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: গোলাম ছরোয়ার বলেন,“ এটা তাদের পারিবারিক ব্যাপার মা-মেয়ের মধ্যে ধাক্কা-ধাক্কির ঘটনা ঘটেছে,এ ব্যাপারে বান্দরবান সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে,ঘটনার তদন্ত হচ্ছে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে”।