বান্দরবানে ডাইরিয়ায় ১০ জনের মৃত্যু !
আক্রান্ত ২০০ জন
বান্দরবানের আলীকদমের করুকপাতা ইউনিয়নের ৩ গ্রামে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুকিশোর ও বয়স্কসহ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত ২শ বলে জানান স্থানীয় ও ইউপি চেয়ারম্যান। অন্য দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা জানান, মৃতের সংখ্যা ৭ জন। ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ ও সেনাবাহিনীর যৌথ মেডিকেল টিম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার (১৪ জুন) সন্ধ্যা পর্যন্ত ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করেন, কুরুকপাতা ইউনিয়নের মাংরুম পাড়ার মাংদম ম্রো, ঙানলি ম্রো, রেংচেং ম্রো, ইয়ুংচা পাড়ার রামদন ম্রো, কাইসার ম্রো ও তুমলত ম্রো, সংরিং ম্রো ও সুংপুর ম্রো, অন্য দুইজনের নাম জানা সম্ভব হয়নি।
৪নং করুক পাতা ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো বলেন, এ পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে ১ শিশু, ৫জন মহিলা ও ৪ জন পুরুষ রয়েছে।
আরো জানা গেছে, বান্দরবানের থানচি, আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি,রুমাসহ বিভিন্ন উপজেলার পাহাড়ী গ্রামগুলোতে বিশুদ্ধ পানির তীব্র পানির সংকটের কারনে ঝিড়ি ও ঝর্ণার পানি পান করতে হয় স্থানীয়দের। এর ফলে ডাইরিয়া, পেটের পিড়াসহ বিভিন্ন ব্যাধিতে আক্রান্তের এবং মৃত্যু খবরও পাওয়া যায় প্রতি বছর, এবারও এর ব্যাতিক্রম হয়নি।
করুকপাতা ইউপির বাসিন্দা সাকনাও ম্রো বলেন, মেনলিউ (ইয়ুংচা) পাড়া,মাংরুম পাড়ায় এখন পর্যন্ত ৯ জন ও সোনাবি পাড়ায় ১ জন মারা গেছে।
৪নং করুক পাতা ইউপি চেয়ারম্যান ক্রাতপুং ম্রো আরো বলেন, মেনলিউ (ইয়ুংচা) পাড়া ও মাংরুম পাড়ায় সবচেয়ে বেশী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। আরও ৭ গ্রামে ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। দূর্গম ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় স্থায়ীদের কাছ থেকে মুঠোফোনে যা তথ্য পাচ্ছি তা জানাচ্ছি।
এদিকে মঙ্গলবার আইএসপিআর জানায়, সেখানে কয়েকজন মৃত্যুবরণ করলেও ১৩৬ জন নারী, পুরুষ ও শিশু ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মুমর্ষ অবস্থায় আছে। সেখানে খাবার পানি, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। আলীকদম সেনা রিজিয়নের একটি টিম সেখানে কাজ করছে, একটি ফিল্ড হাসপাতাল তৈরীর উদ্দ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী জানান,গত সোমবার দুপুর থেকে সেনাবাহিনী ও স্বাস্থ্য বিভাগ যৌথ ভাবে চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। মোটামুটি সবাই সুস্থ, শুধু দুই জনের অবস্থা গুরুতর,অবস্থা উন্নতি না হলে তাদের উপজেলা সদরে আনা হবে। তিনি আরও বলেন, আমার পাওয়া তথ্যে সাত জন মারা গেছে,আমার মেডিকেল টিম সেখানে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।
আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সায়েদ ইকবাল জানান,সেনাবাহিনী সেখানে অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্প স্থাপন করেছে। সেখানে অসুস্থদের চিকিৎসা সেবা চলবে। স্যানিটাইজার,হ্যান্ডগ্লাভসসহ কিছু উপকরণ পাঠানো হবে।
এদিকে বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা: অংসুই প্রু বলেন, আলীকদম- থানচি সীমান্ত এলাকায় কয়েকটি পাড়ার লোকজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। সেখানে মেডিকেল টিম কাজ করছে, দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ মে জেলার থানচি উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তের পাতওয়া ম্রো পাড়ায় ১৬ পরিবারের মধ্যে ৯-১০ পরিবারের সব সদস্য ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং সেখানে পাঠানো হয় মেডিকেল টিম, এরপর সেখানে ডাইরিয়া পরিস্থিতির উন্নতি হয়।