বান্দরবানে নিখোজ দুই যুবক, নিখোঁজ যুবকদের খুজঁছে পুলিশ

NewsDetails_01

news5দেশের বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলার ঘটনার পর পুলিশ বান্দরবানে নিখোজ ব্যক্তিদের বিষয়ে খোজ খবর নেয়া শুরু করেছে। পুলিশের তদন্তে এখনো পর্যন্ত বান্দরবান জেলা সদরে ২ যুবক নিখোজ হওয়ার সংবাদ রয়েছে। নিখোজ হওয়া ব্যক্তিরা কোথায় বা তারা কোন জঙ্গি গোষ্ঠির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পরেছে কিনা তার খোজ খবর নিচ্ছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

বান্দরবান পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের আর্মি পাড়ার বাসিন্দা চা দোকানদার মোঃ হারুন গাজির ছেলে লিটন গাজি বয়স ২৪। গত ৯ মাস ধরে নিখোজ রয়েছে এই লিটন গাজি। পরিবারের সাথে যোগাযোগ নেই দীর্ঘদিন। স্ত্রী ও এক সন্তানকে ফেলে হঠাৎ উধাও হয়ে যায় এই যুবক । দেশের নানা স্থানে খোঁজ করে ও মিলেনি তার সন্ধান। সন্তান ফেরত পাওয়ার আশায় বান্দরবান সদর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে হতভাগ্য পিতা মো:হারুন গাজি। বান্দরবানের আর্মি পাড়ায় একটি ছোট চা দোকান নিয়ে বর্তমানে দুই ছেলে ,এক মেয়ে আর নিখোঁজ লিটন গাজির স্ত্রী ও এক পুত্রকে নিয়ে কষ্টে দিন যাপন করছে হারুণ গাজি।

এদিকে প্রতিনিয়ত লিটন গাজীর ফেরার প্রত্যাশায় বাবা মা ,স্ত্রী ,পুত্র পথ চেয়ে বসে থাকলে ও দীর্ঘ নয় মাসে সন্ধান নেই এই যুবকের। পিতা মো:হারুন গাজি জানান , আমার ছেলেকে আমরা ফেরত চাই , সরকারের সহযোগিতায় তাকে আমরা উদ্বার করতে চাই । ছেলেকে ছাড়া আমরা অনেক কষ্ট আছি । নিখোজ লিটন গাজির মা মাজেদা বেগম জানান, আমরা থানায় ডায়েরি করেছি কিন্তু পুলিশ এখনো আমার ছেলেকে উদ্বার করতে পারেনি।

এদিকে জেলা সদরের মধ্যমপাড়া এলাকার বরিশাল পাড়ার মির আহম্মদের ছেলে মোঃ মাইনুদ্দিন। দিন মজুরি করে দুই ভাই এক বোনের সংসারে মা ফিরোজা বেগমকে নিয়ে ভালই ছিল । কিন্তু একদিন মা ও বোনকে কিছুই না জানিয়ে ১৮ বছরের এই মাইনুদ্দিন এপিল মাসে নিখোজ হয়ে যায়। পরিবারের দাবি বিভিন্ন জায়গায় খোজ নিয়ে ও সন্ধান মিলেনি তার।

নিখোঁজ মাইনুদ্দিনর বোন কুলসুমা জানান , আমার ভাই কোথায় রয়েছে আমরা জানি না । দিনমজুরী করে আমাদের পরিবার চালাত সে ,কিন্তু সে হারিয়ে যাওয়ায় আমাদের পরিবার নিয়ে চলতে অনেক কষ্ট হচ্ছে।

NewsDetails_03

নিখোঁজ অনেকের পরিবারের সদস্যরা থানায় নিখোজের সাধারন ডায়রীও করেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন নিখোঁজ থাকায় একরকম ভুলে গিয়েছিল তাদের পরিবার । সম্প্রতি বান্দরবানের নাইক্ষংছড়িতে রাতের আধাঁরে এক বৌদ্ব ভিক্ষু ও এক আওয়ামীলীগ নেতাকে গলা কেটে হত্যা, বান্দরবানের লামায় এক ব্যবসায়ীকে হত্যাসহ জেলায় বিভিন্ন অপহরন হত্যায় জনমনে ভীতির সংঞ্চার হয়েছে।

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে দেশব্যাপী বিভিন্ন জঙ্গী হামলায় নিখোঁজ যুবকদের সম্পৃত্তা থাকার খবর পত্র প্রত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় আতংকিত হচ্ছে জনগন। নিখোঁজ স্বজনদের তাই ফেরত পেতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে অনেকেই। আর্মি পাড়ার বাসিন্দা ও ওয়ার্ড কমিশনার রাহিমা বেগম জানান, নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজে আমরা দেশের নানা স্থানে খবর নিচ্ছি ।

এদিকে নিখোজ হওয়া ব্যক্তিরা কোথায় বা তারা কোন জঙ্গি গোষ্ঠির সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পরেছে কিনা তার খোজ খবর নিচ্ছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। শুধু বান্দরবান সদরেই নয় জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্য উপজেলা গুলোতে ও কারা নিখোজ রয়েছে তার অনুসন্ধানে নেমেছে পুলিশ । বিভিন্ন জায়গায় জঙ্গি ও সন্ত্রাস বিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি , নিখোঁজ যুবকদের জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখছে পুলিশ।

বান্দরবান সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: রফিকউল্লাহ জানান , নিখোঁজের বিষয়ে বান্দরবানে তিনজনের নামে জিডি করা হয়েছিল । আমরা চেষ্টা চালিয়ে একজনকে উদ্বার করেছি , আশা করি বাকি দুজনকে উদ্বার করতে সক্ষম হব। নিখোঁজ যুবকদের পাশাপাশি এলাকায় কেউ কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত থাকলে তার বিষয়ে খবর দিতে ও জানান এই কর্মকর্তা।

স্থানীয়দের প্রত্যাশা নিখোঁজ যুবকদের উদ্বারে আরো বেশি তৎপর হবে প্রশাসন, আর নিখোঁজ যুবকরা আবার ফেরত এসে পরিবারের হাল ধরবে ।

আরও পড়ুন