বান্দরবানে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী

উদ্বেগ উৎকন্ঠা

NewsDetails_01

বান্দরবানে সারা বছরই ম্যালেরিয়ার প্রকোপ থাকে, তবে এবার নতুন করে হঠাৎ করে জেলা সদরসহ উপজেলাগুলোতে বৃদ্ধি পেয়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,পার্বত্য জেলায় মশাবাহিত রোগের কারণে সবসময় ম্যালেরিয়া ও সিভিয়ার ম্যালেরিয়া হয়ে থাকে, তবে এবার মশাবাহিত রোগের কারণে বান্দরবানে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী আর এতে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বিরাজ করছে রোগী ও স্বজনদের মাঝে।

সরজমিনে গিয়ে বান্দরবান সদর হাসপাতালে দেখা যায়, মশারি টানানো অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছে বেশ কয়েকজন। এদের মধ্যে কথা হয় রোয়াংছড়ি উপজেলা থেকে আসা ডেঙ্গু রোগী গিয়ার নাগ বম এর সাথে।

তিনি জানান,গত পাঁচদিন আগে জ্বর হয় সাথে সঙ্গে মাথা ও প্রচন্ড কোমর ব্যথা হচ্ছিল। প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েও জ্বর না সারায় রোয়াংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হই এবং পরে অবস্থা খারাপ হলে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। এখনো চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানান তিনি।

হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ভর্তি বান্দরবান পৌরসভার বালাঘাটার বাসিন্দা মো. রাশেদুল ইসলাম জানান, কয়েকদিন ধরেই শরীর ও মাথা অসংখ্য ব্যথাসহ জ্বর শুরু হয়,পরে হাসপাতালে এসে করোনা, ম্যালেরিয়া আর ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়ে দেখি ডেঙ্গুর জীবানু পাওয়া যায় আমার শরীরে।

মো.রাশেদুল ইসলাম আরো জানান, চিকিৎসকের পরামর্শে সদর হাসপাতালে ভর্তি হই এখন কিছুটা সুস্থ।

NewsDetails_03

বান্দরবান পৌরসভার ইসলামপুর এলাকা থেকে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত মো.সাজ্জাদ ইসলাম এর স্বজন জানান, হঠাৎ করে আমাদের পরিবারে সবাই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে পড়ছে, এতদিন ম্যালেরিয়ার ভয় ছিল পাহাড়ে এরপর এলো করোনা ভাইরাস এখন আবার ডেঙ্গু সব মিলিয়ে আমরা সবাই আতংকিত।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে,গত সেপ্টেম্বর মাসে বান্দরবান জেলা সদরেই শুধু ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৩৮জন। প্রতিদিনই এ রোগের লক্ষণ নিয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অনেক রোগী আবার অনেকেই আক্রান্ত হয়ে ডাক্তারের চিকিৎসাপত্র গ্রহণ করে বাসায় চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছে।

বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: এস এম ইকবাল হোসাইন বলেন, বান্দরবানে প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে। সদর হাসপাতালে প্রতিদিনই প্রায় ৩০-৪০ জন রোগী জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রক্ত পরীক্ষা করছে। অনেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।

আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: এস এম ইকবাল হোসাইন আরো বলেন, ডেঙ্গু রোগ থেকে বাঁচতে আমাদের সকলকে ঘুমাতে গেলে অবশ্যই মশারি টানাতে হবে এবং মশা যাতে না কামড়ায় সেদিকে নজর রাখতে হবে। জ্বর,শরীর ব্যাথাসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিলে দেরী না করে নিকটতম হাসপাতাল গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করে ওষুধ সেবন করতে হবে।

ডা: এস এম ইকবাল হোসাইন আরো বলেন, জানুয়ারী মাস থেকে এই পর্যন্ত ১৮৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বান্দরবান সদর হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করেছে এবং বর্তমানে ৯ জন রোগী সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে,তবে এই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বান্দরবানে কোন ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়নি।

এদিকে বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা:নীহার রঞ্জন নন্দী বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টিতে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে সবার মাঝে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করছি। বান্দরবানের ৭টি উপজেলার চিকিৎসক ও নার্সদের রোগীদের পর্যাপ্ত সেবা ও চিকিৎসা দেয়ায় নির্দেশনা দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, সাধারণ জনগণ যাতে ডেঙ্গু আক্রান্ত না হতে পারে সেজন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরী। রোগের উপসর্গ দেখা দিলে আতংকিত না হয়ে সবাইকে চিকিৎসকরে শরানপন্ন হতে হবে।

আরও পড়ুন