মিয়ানমারে জাতিগত নিধনের কারণে গত বছরের ২৫আগস্টের পর থেকে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছে সীমান্ত উপজেলা উখিয়া ও টেকনাফে। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে আশ্রিত এসব রোহিঙ্গাদের দেয়া হচ্ছে চাল, ডাল, সবজিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী। কিন্তু চাহিদার তুলনায় বেশি ত্রাণ পাওয়ায় কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে কম দামে এসব ত্রাণ সংগ্রহ করে বান্দরবানে নিয়ে এসে বিক্রি করছে। নিম্মমানের সাবান,পেস্ট,পুষ্টি পাউডার,তেল,ডাল,ইলেক্ট্রনিক লাইট,ফ্যান, প্লাস্টিকের তেরপালসহ বিভিন্ন মেয়াদ উর্ত্তীণ মালামাল ফুটপাতে রেখে যেনতেনভাবে বিক্রি করছে স্থানীয়দের কাছে।
বান্দরবান বাজারে রোহিঙ্গাদের মালামাল বিক্রেতা মো: লোকমান বলেন, আমরা কম দামে রোহিঙ্গাদের দেয়া পণ্যসামগ্রী কিনে বাজারে বিক্রি করি, আর তাতে আমরা অল্প লাভ করে এই ব্যবসা করে বেশ ভালোই চলছি।
এদিকে কমদামে এইসব মালামাল কিনতে পারায় সাধারণ জনসাধারণ ভীড় জমাচ্ছে এইসব ফুটপাতের দোকানে। রোহিঙ্গাদের দেয়া মালামাল কিনতে আসা পলাশ রায় বলেন,কম দাম তাই রাস্তার ধার থেকে রোহিঙ্গাদের দেয়া মালামালগুলো কিনে নিচ্ছি।
রোহিঙ্গাদের এাণের পাশাপাশি অসাধু ব্যবসায়ীরা নিম্মমানের টুটপেস্ট,সাবান,মসুর ডাল ও বেশ কিছু সামগ্রি বিক্রি করছে আর এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সাধারণ জনসাধারণ ও প্রকৃত ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানান, রোহিঙ্গাদের মালামাল যেখানে সেখানে বিক্রি হওয়ায় পন্যের মান কমে যাচ্ছে এবং প্রকৃত ব্যবসায়ীরা নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
বান্দরবান বাজারের টাইম এন্ড সাউন্ড দোকানের কর্মচারী সুজন বলেন,আমরা ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ভালো মানের ইলেক্ট্রনিক মালামাল কিনে দোকানে বিক্রি করি কিন্তু রোহিঙ্গাদের বিতরণকৃত অনেক সামগ্রীর মেয়াদও নেই, যা তারা অশিক্ষিত মানুষককে ঠকিয়ে বিক্রি করে দিচ্ছে।
বান্দরবান বাজারের ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন বলেন, আমরা বৈধভাবে লাইসেন্স নিয়ে ভ্যাট দিয়ে ব্যবসা করে ও ক্রেতা হারাচ্ছি দিন দিন। নিম্মমানের পণ্য কিনে ক্রেতারা প্রতারণার শিকার হচ্ছে। আমরা চাই শীঘ্রই প্রশাসন রোহিঙ্গাদের পণ্য বিক্রিকারী ব্যবসায়ীদের কঠোর শাস্তি প্রদান করবে।
এদিকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা জানান, ফুটপাতে বিক্রি করা যে কোন খোলা খাবার ও প্রসাধনী সামগ্রী স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ,আর এইসমস্ত খোলা খাবার ও প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহারে জনগণকে আরো বেশি সচেতন হতে হবে।
বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার প্রত্যুষ পল ত্রিপুরা বলেন,সড়কের ধারে ফুটপাতে বিক্রি করা যেকোন দ্রব্য কিনতে আমাদের সচেতন হতে হবে। তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের উচিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা।
নিম্মমানের এইসমস্ত নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বিক্রি হলে ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে না কোন কার্যকরি পদক্ষেপ,ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে নিম্ম মানের সামগ্রী বিক্রি করা বন্ধ করতে জোর পদক্ষেপ গ্রহনের দাবী জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
এই ব্যাপারে বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো:নোমান হোসেন বলেন, রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে কম দামে পণ্য সংগ্রহ করে বান্দরবানে বিক্রি করছে এমন তথ্য আমরা পেয়েছি, আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।