বান্দরবানের রুমা উপজেলায় কেএনএফ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে সেনাবাহিনীর এক সদস্য মারা গেছেন। এ ঘটনায় আরেক সদস্য আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে রুমা উপজেলার ছিলোপি পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
আইএসপিআর জানায়, বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ করতে গিয়ে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের বিক্ষিপ্তভাবে পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক মোন্নাফ হোসেন রাজু (২১) নিহত হয়েছেন। সেনাবাহিনীর টহল দল ছিলোপি পাড়া টিওবি থেকে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ কার্যক্রম করছিল। জেলার পাইনুমপাড়া এলাকায় যাওয়ার পথে ক্যাম্প হতে আনুমানিক ৪০০ মিটার দূরে কেএনএফ সন্ত্রাসীদের পুঁতে রাখা বোমা বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে সৈনিক মোন্নাফ হোসেন রাজু এবং সৈনিক মো. রেজাউল (২৪) শরীরের বিভিন্ন অংশে স্প্লিন্টারের আঘাতে গুরুতর আহত হন। চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে তাদের চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সৈনিক মোন্নাফ হোসেন রাজুর মৃত্যু হয়।
গত ১২ মার্চ বান্দরবানে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) এর সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে। এ ঘটনায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মাস্টার ওয়ারেন্ট অফিসার নাজিম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন এবং দুই জন সেনা সদস্য আহত হয়।
১ জুন বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সেনাবাহিনীর একটি টহল দল কেএনএফের (কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সদর দপ্তরসহ একটি গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প দখল করেছে। এসময় পুঁতে রাখা আইইডি (ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) বিস্ফোরণে সেনা সদস্য সৈনিক তুজাম (৩০) প্রাণ হারান।
গত ১৬ মে সেনা টহল দল জারুলছড়ি পাড়ার নিকটস্থ পানির ছড়ার কাছাকাছি পৌঁছালে আনুমানিক দুপুর ১টা ৩৫ মিনিটের দিকে কুকি চিন ন্যাশনাল আর্মি (কেএনএ) সন্ত্রাসীদের ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরণ ও অতর্কিত গুলিবর্ষণের মুখে পড়ে। এতে দুইজন অফিসার ও দুই সৈনিক আহত হয়। আহতদের দ্রুত হেলিকপ্টারের মাধ্যমে সিএমএইচ চট্টগ্রামে স্থানান্তরিত করা হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসারত অবস্থায় আহত দুই সৈনিক মারা যায়।
এ দিকে নিহত সেনা সদস্যের শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। দেশের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়োজিত কার্যক্রমের পাশাপাশি পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহযোগিতা প্রদান করতে গিয়ে সেনা সদস্যের এই সর্বোচ্চ ত্যাগ জাতি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ রাখবে বলে জানান সেনা প্রধান।