বান্দরবানে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের ৯৩টি পদ শূন্য

পিছিয়ে পড়ছে শিক্ষার্ত্রীরা

বান্দরবান পার্বত্য জেলার ৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চরম শিক্ষক সংকটের কারনে বিঘ্নিত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা অর্জন, ফলে ফলাফলে তারা পিছিয়ে পড়ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৭টি উপজেলায় ৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থাকলেও বছরের পর বছর ধরে শিক্ষক সংকট থাকার কারনে শিক্ষা অর্জনে পিছিয়ে পড়ছে জেলার শিক্ষার্ত্রীরা। জেলার ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের ৮টি পদের মধ্যে ৪টি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই, সহকারী প্রধান শিক্ষকের ১০টি পদের মধ্যে ৯টি শূন্য, সহকারী শিক্ষকের ১৭৬ টি পদের মধ্যে ৮০টি পদ শূন্য রয়েছে, সেই সাথে রয়েছে কর্মচারী সংকট, ফলে অনেক ক্ষেত্রে দাপ্তরিক কাজ কর্ম করতে হয় শিক্ষকদের। শিক্ষক সংকটের পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, শ্রেণি কক্ষ সংকটের কারনে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

রুমা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উয়ে সিং মারমা জানায়, শুধু শিক্ষক সংকট নয়, বিদ্যালয়ের ভবন জরাজির্ণ হওয়ার কারনে প্রতিদিন আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করতে হয় আমাদের, দ্রুত এর অবসান হওয়া উচিত।

জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি ছালেহ আহমদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের সৃষ্ট পদ ১টি হলেও তা শূন্য, সহকারী শিক্ষকের ৯টি পদ থাকলে ৫টি পদ শূন্য, রুমা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য, সহকারী প্রধান শিক্ষকের ১টি পদ থাকলেও তা শূন্য, সহকারী শিক্ষকের ৯টি পদ থাকলেও ৫টি পদ শূন্য, রোয়াংছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের ১টি পদ থাকলে তা শূন্য, সহকারী শিক্ষকের ২৫টি পদ থাকলেও ১১টি পদ শূন্য। আলিকদম উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শুন্য, সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য, সহকারী শিক্ষকের ১০টি পদ থাকলে শূন্য আছে ৪টি। লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য, সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য, সহকারী শিক্ষকের ২৫টি পদ থাকলেও ১৫টি পদ শূন্য।

NewsDetails_03

অভিভাবক সাচিং মার্মা জানান, শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষের সংকট আছে জেনেও ছেলেকে এখানে ভর্তি করেছি, আমরা গরিব তাই আমাদের আর কোন উপায় নাই।

আরো জানা গেছে, দুই শিফটের বান্দরবান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের ২টি পদ থাকলেও ২টি পদ শুন্য, সহকারী শিক্ষকের ৫০টি পদের মধ্যে ২০টি পদ শূন্য, বান্দরবান সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শুন্য, সহকারী প্রধান শিক্ষকের ২টি পদ থাকলেও ২টি পদ শুন্য, সহকারী শিক্ষকের ৪৯ টি পদ থাকলেও ২৪টি পদ শূন্য। তবে থানচি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কোন পদ খালি নেই।

লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আজিজুল হক নিজামী বলেন, শিক্ষক সংকটের কারনে শিক্ষা ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে পড়ছি, সংকট নিরসনে আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে পর্যন্ত অবহিত করেছি।

আরো জানা গেছে, বান্দরবানের সরকারি ৮টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬ষ্ট থেকে দশম শ্রেণিতে প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্ত্রী থাকলে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক না থাকার কারনে ফলাফলের ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।

এই ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সরিৎ কুমার চাকমা বলেন, শিক্ষক কম থাকার কারনে বান্দরবানের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রভাব পড়ছে, শিক্ষক ঘাটতি পূরনে সামনে কোন ভালো খবর নেই।

আরও পড়ুন