স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় বাজার গুলোতে প্রতিদিন প্রচুর লিচু বিক্রি হচ্ছে। জেলায় উৎপাদিত লিচু স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে দেশের চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায়। স্থানীয় বাজারে একশত লিচু বিক্রি হচ্ছে ১শ থেকে ১২০ টাকা। এছাড়াও চায়না থ্রি জাতের একশত লিচু বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩শত টাকা করে। তবে এবছর অনাবৃষ্টি,খরা এবং তীব্র তাপদাহের কারণে পাহাড়ে শত শত বাগানের লিচু ও এর খোসা পুড়ে ফেটে এবং কালসা (কালো) হয়ে যাচ্ছে ফলে হতাশা দেখা দিয়েছে স্থানীয় চাষী ও ব্যবসায়ীদের মাঝে।
জেলার রুমা উপজেলার লিচু চাষি চাইউগ্য মার্মা জানান,খরার কারনে চলতি মৌসুমে লিচু উৎপাদন মারাত্মক ব্যাহত হবে। লিচু বিক্রি করে লাভ তো দূরের কথা পুঁজি উঠবে কিনা,এই নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
চাষীদের মতে, বোম্বাই ও চায়না থ্রি জাতের লিচু বাজারে বিক্রি হচ্ছে,কিন্তু এ সময়ে লিচু ফেটে চির ধরেছে,খোসায় কালো দাগ পড়ে ফেটে যাচ্ছে,লিচুর আকারও চোট,গাছ থেকে প্রতিদিনই ঝরে পড়ছে লিচু। প্রত্যেকটি বাগানে যে হারে লিচু ফেটে যাচ্ছে আর ঝরে পড়ছে এতে লাভের মুখ দেখার সম্ভবনা নেই।
জেলা সদরের রাজবিলা এলাকার উপশৈ থুই মার্মা বলেন, গত বছর একশত লিচু বিক্রি করা হয়েছে প্রায় ২শত টাকা হারে। কিন্তু এবছর লিচুর দাম তেমন পাওয়া যাচ্ছেনা। একশত লিচু বিক্রি করতে হচ্ছে ১শ ও ১২০ টাকা দামে। কিন্তু খরচ পড়েছে দ্বিগুন। সেই হিসেবে লাভের মুখ দেখা যাচ্ছেনা।
জেলা কৃষি বিভাগের মতে,জেলায় প্রতি বছর লিচুসহ ফলজ বাগান বাড়ছে। চলতি মৌসুমে বান্দরবান জেলায় ১ হাজার ২শত ৩হেক্টর পাহাড়ি জমিতে বোম্বাই ও চায়না থ্রি এবং দেশিজাতের লিচুর চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার ২শ ২৮ মেট্টিকটন,তবে মাটি ও পরিবেশ অনুকুলে থাকায় বান্দরবানে প্রতিবছরই লিচুর আবাদ বাড়ছে।
বান্দরবান কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা খুরশিদা বেগম জানান,কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হতে কৃষি প্রযুক্তি, লিচুর বাগানে সময় মত মরা ডালপালা অপসারণ,সময় মত সার প্রদান, সঠিক সময়ে সঠিক মাত্রায় বালাই নাশক স্প্রে ও উন্নত জাতের চারা রোপন,পরিচর্যা করার পরামর্শ প্রদান করার কারনে বান্দরবানে আগের চেয়ে লিচুর ফলন অনেক ভাল হয়েছে।
অপরদিকে বান্দরবান সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো:ওমর ফারুক বলেন,স্বল্প খরচে পরিচর্যার মাধ্যমে অধিক লাভজনক হওয়ায় পাহাড়ে লিচু চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন স্থানীয় চাষীরা। তবে এবছর লীচুর ফলন ভালো হলেও অনাবৃষ্টি ও খরা এবং অতি উচ্চতাপমাত্রর কারণে বাগানের লিচু’র ঝরে যাচ্ছে। এসময় লীচু গাছের পাতায় স্প্রে এবং গাছের গোড়ায় পানি দেয়ার জন্য পরামর্শ দেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো:ওমর ফারুক।
