বান্দরবানে সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর না‌মে ভূ‌মি দখ‌লের প্রতিবা‌দ

বান্দরবা‌ন পার্বত্য জেলার লামার সরই ইউনিয়নে সা‌বেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ফৌজিয়া ইসলাম কর্তৃক অসহায় পরিবারের ভূমি দখল ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন ক‌রে‌ছে লামার ক্ষ‌তিগ্রস্ত পাহাড়ী বাঙ্গালী প‌রিবার।

আজ মঙ্গলবার (৩‌ডি‌সেম্বর) সকাল ১১টার সময় বান্দরবান প্রেস ক্লা‌ব মিলনায়ত‌নে তারা এ সংবাদ স‌ম্মেলন ক‌রে।

এসময় বক্ত‌ব্যে তারা জানায়, দীর্ঘ ৩০/৪০ বৎসর ধরে লামার সরই ইউনিয়নের টংগা ঝিরি, পুইট্টা ঝিরি ও দেরাজ মিয়া পাড়া এলাকায় পাহাড়ী ও বাঙ্গালি মিলে প্রায় শতাধিক পরিবার শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছে। কিন্তু ২০১৯ সাল থেকে সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ফৌজিয়া ইসলাম ক্ষমতার দাপট দে‌খি‌য়ে প্রশাসন‌কে ম‌্যা‌নেজ জালজালিয়াতির মাধ্যমে আমাদের বসবাসের জমির উপর ভুয়া কাগজ ব‌সি‌য়ে দখ‌লে নেয়। এসময় আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয় এবং স্থানীয় প্রশাস‌নের সহায়তা নি‌য়ে আমাদের সকলকে মারধর করে পাড়া থেকে বিতাড়িত করে। এভা‌বে সা‌বেক মন্ত্রী ও তার স্ত্রী আমাদের প্রায় ৩০০ একরেরও বেশি জায়গা দখল ক‌রে নেয়।

তারা আরো বলেন, আমাদের লাগানো বড় বড় সেগুন, গামারি’ সহ বিভিন্ন ফলফলাদির গাছ কেটে নিয়ে যায়। মন্ত্রীর প্রভাবের কারণে আমরা দীর্ঘদিন ধরে এর, প্রতিবাদ কর‌তে পারিনি। এমন‌কি কা‌রোর কোন সহ‌যো‌গিতাও পাইনি।

NewsDetails_03

তারা আরো জানায়, ৫ই আগষ্টের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের পর আওয়ামী নেতা‌দের সা‌থে সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ফৌজিয়া ইসলামও পা‌লি‌য়ে যায়। তখন প‌রি‌স্থি‌তি কিছুটা শান্ত থাক‌লেও সম্প্রতি তারা আবারও কুমিল্লা, লাকসাম, নরসিংদী থেকে সশস্ত্রবাহিনীর সন্ত্রাসী এনে জ‌ড়ো কর‌ছেন। তারা প্রতি‌নিয়ত আমাদের হত্যা ও মারধ‌রের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।

এরইম‌ধ্যে তারা কয়েকবার অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চা‌লি‌য়ে আমাদের বসতবাড়ি ভাংচুর ও লোকজ‌নকে আহত ক‌রেছে। তারা ব‌লেন, এখনও প্রশাসন সা‌বেক মন্ত্রীর প‌ক্ষে কাজ কর‌ছে। আর প্রশাসন‌কে সকল কা‌জে সহ‌যো‌গিতা কর‌ছে মন্ত্রী’র চাচা‌তো ভাই শাহ আলম মুকুল। তা‌দের প্রভা‌বের কার‌ণে মামলা দি‌য়েও কোন প্রতিকার পা‌চ্ছেননা অসহায় প‌রিবারগু‌লো।

সম্প্রতি মন্ত্রীর স্বজন‌দের করা মিথ‌্যা মামলায় ইসমাইল না‌মের এক রিক্সা চালক কারাগা‌রে আছে। তার পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। বর্তমা‌নে মন্ত্রীর প্রভা‌বের কার‌ণে আমরা সবাই আত‌ঙ্কে দিনা‌তিপাত কর‌ছি। অন‌তি‌বিল‌ম্বে সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ফৌজিয়া ইসলাম এবং এর সা‌থে জ‌ড়িত‌ স্বজনসহ সক‌লের শা‌স্তির দা‌বি জানান তারা।

এসময় লামা সরই ইউনিয়নের টংগা ঝিরি, পুইট্টা ঝিরি ও দেরাজ মিয়া পাড়ার পাহাড়ী, বাঙ্গালি ও সাংবা‌দিকরা উপ‌স্থিত ছি‌লেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের ২রা ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তিচুক্তি সম্পাদনের পর পার্বত্য আইন অনুসারে পার্বত্য জেলার স্থায়ী বাসিন্দা না হলে পার্বত্য জেলায় কোন ভূমি ক্রয় করতে না পারলেও সাবেক এই মন্ত্রী ও তার স্ত্রী প্রশাসনকে ব্যবহার করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বান্দরবানের লামার বাসিন্দা সেজে ভূমি ক্রয় করে আলোচনায় আসেন।

আরও পড়ুন