বান্দরবানের স্বর্ণ মন্দিরের প্রধান বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরু উপঞঞা জোত মহাথের প্রকাশ উচহ্লা ভান্তের বিরুদ্ধে খিস্টান মিশনসহ সাধারণ জনসাধারণের জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে, আর সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের সাথে সংবাদ সম্মেলন করে উচহ্লা ভান্তের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছে ভুক্তভোগী জনগণ।
আজ বুধবার সকালে বান্দরবান শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে ভুক্তভোগী জনগণ উপঞঞা জোত মহাথের প্রকাশ উচহ্লা ভান্তের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। এসময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, উপঞঞা জোত মহাথের প্রকাশ উচহ্লা ভান্তে এক বৌদ্ধ ধর্মীয় গুরুভান্তে হয়ে ও সাধারণ জনগণের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে। ধর্মীয় অনুভুতিকে কাজে লাগিয়ে তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্টান তৈরির নামে একে এক সাধারণ জনগণের জমি দখল করে নিচ্ছে, আর সাধারণ জনগন এর বিচার চাইলে উল্টো উচহ্লা ভান্তে তাদের বিরুদ্ধে মামলা ও হামলা চালিয়ে তাদের হয়রানি করছে।
এসময় বক্তারা আরো বলেন, সর্বশেষ উচহ্লা ভান্তে ২০১৪ সালের ৫এপিল বান্দরবান ফাতিমা রাণী গীর্জার ৫ দশমিক ৫৭ একর ধানী জমি জোর করে দখল করে নেয়। এই জমিতে উৎপাদিত শস্য থেকে তিনশর ও বেশি অসহায় শিশু কিশোরদের অন্নের যোগাড় হতো যা বর্তমানে জোর করে উচহ্লা ভান্তে ভোগ করে যাচ্ছে ,আর এতে বান্দরবান ফাতিমা রাণী গীর্জার অসহায় শিশু কিশোরদের অন্নের যোগাড় করতে কষ্ট হচ্ছে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আমেনা বেগম বলেন,আমরা ৫ ভাই বোন দীর্ঘদিন আমাদের জমিতে ছিলাম। আমার মা মারা যাওয়ার পর ও আমরা মায়ের কবর দিলাম আমাদের জমিতে কিন্তু উপঞঞা জোত মহাথের প্রকাশ উচহ্লা ভান্তে শক্তি প্রয়োগ করে আমাদের মত নিরীহ মানুষের জমি দখল করে নিয়েছে।
এসময় ভুক্তভোগী আমেনা বেগম আরো বলেন, এখন আমরা ঈদের দিন পর্যন্ত আমার মায়ের কবর জেয়ারত করতে পারছি না। আমাদের জমিতে আমাদের পরিবারের লোক উপস্থিত হলে মাত্রই উচহ্লা ভান্তের কান্টা বাহিনীর ছেলেরা আমাদের পাহাড়ের উপর থেকে কান্টা মারে ও ঢিল ছুড়ে তখন আমরা প্রাণভয়ে পালিয়ে আসি। আমরা প্রশাসনের কাছে উচহ্লা ভান্তের এই ধরনের নোংরা কাজের বিচার চাই।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী বড়ুয়া কল্যাণ সমিতির প্রেসিডেন্ট দিলীপ বড়ুয়া বলেন,উপঞঞা জোত মহাথের প্রকাশ উচহ্লা ভান্তে ধর্মের নামে সাধারণ মানুষের সাথে জমি দখলের কার্যক্রম চালাচ্ছে। কেউ তার বিরুদ্ধে কোন কথা বললেই তিনি তাকে মামলা দিয়ে হয়রানি করে।
দিলীপ বড়ুয়া আরো বলেন, উচহ্লা ভান্তে রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি থেকে বহিরাগত লোক এনে বান্দরবানের বিভিন্ন জায়গায় বসতি স্থাপন করে দিচ্ছে এবং তাদের সাথে নিয়ে প্রতিনিয়ত সাধারণ জনগনের জমি দখল করে যাচ্ছে। এসময় তিনি আরো বলেন,সম্প্রতি উচহ্লা ভান্তে তার মন্দিরের নির্মাণ কাজের জন্য রোহিঙ্গা নাগরিকদের কাজে লাগাচ্ছে এবং এই রোহিঙ্গা নাগরিকদের কাজ করার কোন অনুমোদন রয়েছে কিনা তা প্রশাসনের ক্ষতিয়ে দেখা দরকার?
এসময় সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা সরকারের কাছে উপঞঞা জোত মহাথের প্রকাশ উচহ্লা ভান্তের এহেন কর্মকান্ড বন্ধ করার আহবান জানান এবং সঠিক তদন্ত করে ভুক্তভোগী জনগণের জমি স্ব-স্ব মালিককে ফেরত প্রদানের জোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে এসময় উপস্থিত থেকে বক্তব্য প্রদান করেন রাজকুমার নু মং প্রু(হেডম্যান),চট্টগ্রাম কাথলিক ধর্মপ্রদেশ ফাদার জেরোম ডি’রোজারিও, বড়ুয়া কল্যাণ সমিতির প্রেসিডেন্ট দিলীপ বড়–য়া। সংবাদ সম্মেলনে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সমাজসেবক ফিলিপ ত্রিপুরা,জর্জ ত্রিপুরা,সিংইয়ং ম্রো,দিলীপ চক্রবর্তী,প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু,মনিরুল ইসলাম মনু,বুদ্ধজোতি চাকমাসহ প্রায় ৩০জন সাংবাদিকসহ ভুক্তভোগী জনসাধারণ।