বান্দরবানের ১৪১তম ঐতিহ্যবাহী রাজ পূন্যাহকে সামনে রেখে মৌজায় মৌজায় চলছে জুম খাজনা আদয়ের অনুষ্ঠান। আজ মঙ্গলবার সকালে শহরের মধ্যম পাড়ায় রোয়াংছড়ি তারাছা মৌজার হেডম্যান কার্যালয়ে প্রজাদের কাছ থেকে জুম খাজনা আদায়ের অুনষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এতে মৌজা প্রধান উনিহ্লা মারমা প্রজাদের কাছ থেকে জুম খাজনা আদায় করেন। এসময় প্রত্যেক জুমিয়াদের কাছ থেকে একর প্রতি জুম খাজনা ৬ টাকা ৭৫ পয়সা ও নানা উপঢৌকন নেন মৌজা প্রধান।
এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকার পাড়া প্রধান কার্বারিদের কাছ থেকে এক বোতল কাঞ্জি (স্থানীয়ভাবে তৈরি পাহাড়ি মদ), মুরগি ও নজরানা হিসেবে ৫০০ টাকা করে আদায় করা হয়। এতে মৌজার ১৩টি পাড়ার কার্বারি (গ্রামপ্রধান) উপস্থিত ছিলেন। বোমাং সার্কেলে রাজপুণ্যাহর মতো শতবছর ধরে খাজনা আদায়ের এ রীতি চলে আসছে। মৌজার বাসিন্দা ও পাড়া প্রধানদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা এই খাজনা আবার বোমাং রাজা বা সার্কেল চিফের কাছে হস্তান্তর করবেন হেডম্যানরা। আগামী ৮ মার্চ রাজপুণ্যাহ উৎসবে এই খাজানাগুলো রাজাকে প্রদান করবেন হেডম্যানরা।
৮ মার্চ শুক্রবারে বান্দরবান শহরের রাজার মাঠে বসবে তিন দিনব্যাপী ১৪১তম ঐতিবাহী রাজপুণ্যাহ উৎসব। উৎসবে কৃষি মন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি অতিথি হিসেবে থাকার কথা রয়েছে।
বোমাং রাজ পরিবার সূত্র আরো জানায়, বৃটিশ শাসন আমলে পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান,রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি তিন জেলাকে তিনটি সার্কেলে বিভক্ত করে খাজনা আদায় করা হতো। ১৮৬৬ সাল পর্যন্ত চাকমা রাজা পার্বত্য এলাকা শাসন করতো। ১৮৬৭ সালে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ অঞ্চলের মারমা অধ্যুষিত এলাকাকে বোমাং সার্কেল, ১৮৭০ সালে রামগড় ও মাইনি উপত্যকার এলাকাকে নিয়ে মং সার্কেল গঠিত হয়।
আরো জানা যায়, বর্তমানে রাঙ্গামাটিকে চাকমা সার্কেল, বান্দরবানকে বোমাং সার্কেল এবং খাগড়াছড়িকে মং সার্কেল হিসাবে গণ্য করা হয়। প্রায় ১৭৬৪ বর্গমাইল এলাকার বান্দরবানের ৯৫টি, রাঙামাটির রাজস্থলি ও কাপ্তাই উপজেলার ১৪টি মৌজা নিয়ে বান্দরবান বোমাং সার্কেল। দুইশত বছরের ঐতির্য্য অনুসারে বছরে একবার এই মেলা আয়োজন করা হয় বোমাং সার্কেলের পক্ষ থেকে।