পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে বান্দরবান পার্বত্য জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে জমে উঠতে শুরু করেছে কুরবানির পশুর হাট। পশুর হাট ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা, নির্বিঘ্নে যাতায়াত, সহ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট বাজার কর্তৃপক্ষ।
ঈদের আরও কয়েকদিন বাকি । এরই মধ্যে জেলার গরুর হাটবাজারগুলোতে ভীড় করছেন ক্রেতা বিক্রেতারা । ক্রেতাদের আকর্ষণের জন্য ক্রেতারা গরুকে বিভিন্নভাবে সাজিয়ে বাজারে তুলছেন । সাধ সাধ্যের মত হলেই কিনছেন পছন্দনীয় গরু । আবার অনেকে গরু না কিনলেও বাজার ঘুরে দরদাম করছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, এ বছর জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা আছে ৪৬ হাজার ৭০টি। এর মধ্যে জেলার খামারগুলোতে প্রস্তুত আছে ২৫ হাজার ৬১৭টি গরু, মহিষ ও ছাগল। বেশি রয়েছে ২১ হাজারের বেশি কোরবানিযোগ্য পশু । গত বছরের চাহিদা বিবেচনায় এ বছরের চাহিদা নির্ধারণ করেছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে বান্দরবানের কোরবানির পশুর হাটগুলোতে অন্তত ৩০০ কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে পশুর হাটে ক্রেতা সমাগম করতে প্রচার চালাচ্ছেন ইজারাদাররা।
ক্রেতাদের অভিযোগ, বিক্রেতারা গরুর দাম দিচ্ছেন বেশি। আর দাম সাধ্যে বাইরে না থাকায় অনেকে কিনতে পারছেন না পছন্দের গরু । এদিকে ক্রেতাদের এমন অভিযোগ স্বীকার করে বিক্রেতারা বলছেন, গরুর খাদ্যদ্রব্যর মূল্যে বৃদ্ধির কারণে গরুর দাম বেশি।
তবে বান্দরবানে খামারগুলো থেকে প্রতি লিটার গরুর দুধ এখনও ৭০-৮০ টাকা দামেই বিক্রি হচ্ছে। এসব দুধের বেশিরভাগই যায় মানুষের দুয়ারে দুয়ারে।
বান্দরবান সুয়ালকের বাসিন্দা রহমত উল্লাহ জানান, তাদের খামারে এবার কোরবানি উপযুক্ত ১৫টি গরু আছে।এবার হাটে গত বছরের তুলনায় গরুর দাম কিছুটা বাড়বে। কারণ গোখাদ্যের দাম বেড়েছে। এছাড়া করোনার কারণে প্রত্যেক খামারি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
আরেক খামারি কামাল হোসেন জানান, গোখাদ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। এতে করে গরু পালনে খরচও বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে গরুর ফার্মগুলো টিকে থাকা দায় হয়ে পড়বে। এ খাতকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি সহায়তা প্রয়োজন। অন্যথায় অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাবে।
উপজেলা পশু সম্পদ ডা: সুকান্ত কুমার সেন বলেন, পশুর হাট বাজারে মেডিকেল টিম দায়িত্ব পালন করছে। যেগুলো অসুস্থ গরু সেগুলোকে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।
বান্দরবান সদর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, হাট বাজারে পুলিশ মোতায়েন করা আছে। যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার জন্য আমরা কাজ করছি। এখানের শৃঙ্খলা যাতে বজায় থাকে সেদিকে সজাগ আছি।
বান্দরবান জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.মোহাম্মদ গোলামুর রহমান বলেন, আমাদের হিসেবে এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত পশু রয়েছে। এবার অন্তত ৩০০ কোটি টাকার পশু বেচাকেনা হবে বলে আমরা আশা করছি। তবে টাকার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে।’