বান্দরবানে ৩০ হাজার পরিবারকে খাদ্য দ্রব্য দিতে বীর বাহাদুরের নির্দেশ
করোনা সংক্রামনের কারনে কার্যত অবরুদ্ধ বান্দরবান পার্বত্য জেলা। ফলে কর্মহীন দু:স্থ মানুষ যাতে খাদ্য সংকটে না পড়ে সে লক্ষ্যকে মাথায় রেখে জেলার ২টি পৌরসভা ও ৩৩টি ইউনিয়নের নিন্ম আয়ের মানুষের জন্য খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ করতে নির্দেশ দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। একান্ত আলাপচারিতায় পাহাড়বার্তা’র নির্বাহী সম্পাদক এস বাসু দাশ’কে এমন তথ্য জানান, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে,করোনা সংকটের কারনে পার্বত্য মন্ত্রীর এমন নির্দেশনার পর খাদ্য দ্রব্য নিন্ম আয়ের মানুষের কাছে পৌছাতে বান্দরবান জেলার ৭টি উপজেলার ২টি পৌরসভা ও ৩৩টি ইউনিয়নের দু:স্থ পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তালিকা প্রস্তুত শেষ হলেই প্রতিটি পৌরসভা ও ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে আগামী সপ্তাহ থেকে ৩০ হাজার পরিবারকে ১০ কেজি করে চাউল দেওয়া হবে এবং এরসাথে তেল ও ডাল প্রদান করার সম্ভবনা রয়েছে।
আরো জানা গেছে,এই ব্যাপারে পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুরকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। উক্ত কমিটি এই খাদ্য সামগ্রী সুষ্ঠ ভাবে বিতরণের বিষয়টি তদারকি করবেন।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মোজাম্মেল হক বাহাদুর পাহাড়বার্তা’কে জানান, নিন্ম আয়ের মানুষ যাতে খাদ্য নিয়ে কোন সমস্যায় না পড়ে সেজন্য আমরা সব ধরণের আগাম প্রস্তুতি নিয়েছি। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে পার্বত্য মন্ত্রণালয় থেকে ৩শ মেট্রিক টন চাউল বরাদ্ধ চাওয়া হয়েছে।
আরো জানা গেছে, ইদুর বন্য ও জুম চাষ খারাপ হওয়ার কারনে ২০১২ সালে বান্দরবানের থানচি, রুমা, রাঙামাটির সাজেক, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি উপজেলায় খাদ্য সংকট দেখা দেয়। ২০১৬ সালে বান্দরবানের তিন্দু ও রেমাক্রি,বড় মদক,ছোট মদক এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দেয়।
স্থানীয়দের দেওয়া তথ্য মতে, এসব এলাকার ৯৫ শতাংশ মানুষ জুম চাষে নির্ভরশীল। জুমধান ভাল না হওয়ায় খাদ্য সংকটে পড়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ পরিবার। তবে এবার করোনা ভাইরাসের কারনে তাদের কৃষিপন্য বিক্রি করতে না পারলে পাহাড়ের আদিবাসী পরিবারগুলোতে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করছে স্থানীয়রা।
এই ব্যাপারে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা পাহাড়বার্তা’কে বলেন, দেশের এই সংকটময় সময়ে জেলার মানুষের পাশে থাকতে পার্বত্য জেলা পরিষদ সব ধরণের সহযোগিতা করবে। তিনি আরো বলেন,গরীব মানুষ যাতে কষ্ট না পায় তার জন্য বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
প্রসঙ্গত,বান্দরবানে কোয়ারেন্টিনে আছে ৫৯ জন। তারমধ্যে হোম কোয়ারেন্টিনে ৪৯জন। প্রতিষ্টানিক কোয়ারেন্টিনে ১০জন। হোম কোয়ারেন্টিন থেকে অবমুক্ত ২৩ জন। হাসপাতাল কোয়ারেন্টিন থেকে অবমুক্ত ১ জন এবং সেনা-পুলিশের টহলের পাশাপাশি লকডাউন করা হয়েছে জেলার ৭টি উপজেলার লামা,আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাকে।