এক সময়ের পিছিয়ে পড়া বান্দরবান, যেন আর পিছিয়ে নেই। উন্নয়নের মহা সড়কে বান্দরবান, বর্তমান সরকারের সময়ে জেলার শিক্ষা,স্বাস্থ্য, পর্যটন, কৃষি, সড়ক যোগাযোগসহ প্রায় প্রতিটি সেক্টরে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে,আওয়ামী লীগ সরকারের আন্তরিকতা আর পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুরের একান্তি প্রচেষ্টায় গত ৯ বছরে বান্দরবানে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পর্ন করেছে, অন্যদিকে ৩ হাজার কোটি টাকার কাজ বর্তমানে চলমান আছে। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে অপার সম্ভবনার বান্দরবান, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে নিজের অবস্থান সুসংহত করবে বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা।
আরো জানা গেছে, উল্ল্যেখযোগ্য কাজগুলোর মধ্যে বান্দরবান সদর উপজেলার রেইচা নামক স্থানে ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পিটিআই কমপ্লেক্স নির্মাণ, ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নার্সিং কলেজ,প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে অরুণ সারকী টাউন হল,আবহাওয়া পর্যবেক্ষনাগার,বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়,বান্দরবান সরকারি কলেজের একাডেমিক ভবন, থানচি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভবন,রুমা কলেজ রোয়াংছড়ি কলেজের ভবন নির্মান, জেলা পরিষদের ন্যাস্ত বিভাগের জন্য অফিস ভবন, কনফারেন্স হল নির্মান, দূর্গম এলাকার শিক্ষার্ত্রীদের জন্য উপজেলাগুলোতে ছাত্রাবাস নির্মান, স্টেডিয়ামের গ্যালারি নির্মান, প্রায় ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রুমা সাঙ্গু সেতু, ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি সাঙ্গু সেতু, অসংখ্য গার্ডার ব্রিজ নির্মান,থানচি উপজেলা পরিষদ ভবন, জেলার ৬টি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, চারটি উপজেলায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে থানা ভবন নির্মান।
আরো জানা গেছে, সেনাবাহিনী কর্তৃক সাড়ে ১২০ কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি – আলীকদম সড়ক নির্মাণ,২কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি-বলিপাড়া রাস্তা নির্মাণ, ১ কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি- রুমা -বগালেক সংযোগ সড়ক নির্মাণ, থানছি ও রুমা উপজেলায় প্রায় ১৯ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন নির্মান। জেলার ৩৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮২৮.৬৯ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১০টি ইউপি পরিষদের কমপ্লেক্স ভবন নির্মান কাজ শেষ হয়েছে। কৃষি উন্নয়নে শীলক খালের উপরে ৫.৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৮মি: দীর্ঘ রবার ড্যাম নির্মান করা হয়, যার ফলে অনাবাদি জমি হয়ে চাষাবাদযোগ্য।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ইয়াছির আরাফাত পাহাড়বার্তাকে বলেন, বান্দরবানে উন্নয়ন হয়নি এমন এলাকা নেই, জেলার আনাচে-কানাচে উন্নয়ন কাজ দৃশ্যমান।
আরো জানা গেছে, জেলায় অসংখ্য কমিউনিটি ক্লিনিক, মন্দির, মসজিদ,গীর্জা, ক্যায়াং, প্রানী সম্পদ বিভাগে সাড়ে ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কয়েকটি ভবন এবং নির্মান করা হয়েছে ২টি পৌরসভার ভবন। সরকারী করন করা হয় জেলার বেশ কয়েকটি কলেজ ও হাই স্কুলকে। অন্যদিকে আলীকদমের রোয়াম্ভু ও নয়াপাড়া বিদ্যুৎ লাইন সংযোজন,আলীকদম পানি শোধানাগার নির্মাণসহ অসংখ্য উন্নয়ন কাজ শেষ করা হয়। স্বাধীনতার পর ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিলো শুধু থানচি নয়, ক্ষোধ জেলাবাসীর জন্য ঐতিহাসিক ঘটনা। ১৫ থেকে ১৭ সালের মধ্যে ২হাজার ৩৬০জনকে সোলার প্যানেল বিতরণ করা হয়,যা এখনও অব্যাহত আছে।
বান্দরবান-রাঙামাটি সড়কের পুলপাড়া এলাকায় ৯ কোটি ১১ লাখ টাকা ব্যয়ে গার্ডার সেতু ও প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে শহরের নীলাচল সড়কে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মান কাজ শেষ পর্যায়ে। রোয়াংছড়ির থেকে রুমা উপজেলা পর্যন্ত ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে (জিওবি অর্থে) পল্লী উন্নয়ন সড়ক নির্মান করা হবে। ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বান্দরবান সদর হাসপাতাল ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। আলীকদম- জানালী পাড়া-কুরুকপাতা ঝিড়ি পোয়ামুহুরী সড়ক ৩৭৬ কোটি ও থানচি-রেমাক্রি-মদক-লিক্রি সড়ক প্রায় ৪৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মান কাজ চলমান আছে। বান্দরবান শহরের জজ কোর্ট থেকে সাঙ্গু সেতু পর্যন্ত বড় ড্রেন নির্মান কাজ চলমান রয়েছে। ১৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মান করা হবে বান্দরবান-কেরানীহাট সড়ক।
এই ব্যাপারে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং পাহাড়বার্তাকে বলেন,আগামীতে আমরা সরকার গঠন করলে উন্নয়নের ধারা অব্যহত থাকবে, বান্দরবানকে আধুনিক নগরী হিসাবে গড়ে তুলতে আরো পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।