ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৫ সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের নির্দেশ দিয়েছে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগ।
একইসাথে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ও সম্মেলন করার জন্য প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে আগামী ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈহ্লা এবং সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইসলাম বেবী স্বাক্ষরিত এক পত্রে এ নির্দেশ দেয়া হয়। সম্মেলন ও প্রস্তুতি কমিটি করার এ আদেশ সম্বলিত চিঠি জেলার সহযোগী সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইসলাম বেবী চিঠি দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন কমিটি ও নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে দলকে আরও সক্রিয় করার জন্য এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী গত ২৯ জুলাই জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরি কমিটির সভায় জেলায় সব সহযোগী সংগঠনের সম্মেলন ও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ওই সিদ্ধান্তের আলোকে গত ১০ আগস্ট সব সহযোগী সংগঠনকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বান্দরবানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই উত্তীর্ণ হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সবকটি সহযোগী সংগঠনেরই মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে কোনো মতে দল চলছে। তবে যেহেতু সামনে জাতীয় নির্বাচন। এ জন্য দলকে শক্তিশালী, নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে সাংগঠনিক ভাবে চাঙা করতে এ উদ্যোগ।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দল ক্ষমতায় থাকায় এবং রাজনীতির মাঠে শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকায় সহযোগী সংগঠনগুলো গা ছাড়া ভাব নিয়ে চলছে। দিবস ভিত্তিক কার্যক্রম ছাড়া নেতাকর্মীদের তেমন দেখা যায় না। নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের চেয়ে ঠিকাদারি ও ব্যবসা বাণিজ্য নিয়েই ব্যস্ত।
এদিকে অনেক সহযোগী সংগঠনের মেয়াদ শেষ হলেও সম্মেলন বা কমিটি গঠনে তেমন উদ্যোগ নেই। গত বছর সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা বান্দরবান সফর করে বর্ধিত ও বিশেষ সভায় ২০২১ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়। তবে এর পর আর কোনো অগ্রগতি চোখে পড়েনি।
সূত্রমতে, সহযোগী সংগঠনের অনেকগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই, অনেকগুলোর কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ। আবার কয়েকটি সংগঠন দীর্ঘদিন আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে।
সূত্রমতে, সম্মেলন ও নতুনভাবে কমিটি গঠন না হওয়ায় নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হচ্ছেনা। মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় শীর্ষপদগুলো ছাড়া অন্য পদগুলোর নেতারা প্রায় নিস্ক্রিয়। আবার নেতৃত্বে আসার সুযোগ না পেয়ে নিচের সারির নেতা ও কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে। ফলে অনেকে রাজনীতিতে নিস্ক্রিয় হয়ে ব্যবসা বাণিজ্যে ঝুঁকেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, মূল দলকে শক্তিশালী করতে সহযোগী সংগঠনের ভূমিকা রয়েছে। তাই সহযোগী সংগঠনগুলোর নিয়মিত সম্মেলন, কাউন্সিল ও নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম বেবী বলেন, বান্দরবানে এমনিতেই আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক ভাবে সক্রিয় ও শক্তিশালী। সামনে জাতীয় নির্বাচন, তাই কেন্দ্রীয় নির্দেশনার আলোকে সব সহযোগী সংগঠনকে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ নতুন কমিটি করা হলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো আরও শক্তিশালী হবে।