করোনা সংক্রামনে কর্মহীন মানুষের যেন কষ্টের শেষ নেই। ঘর বন্দী হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে অনেকে। করোনার কষ্টের দিনগুলোর বর্ণনা দিয়ে একজন শিক্ষক আকুতি জানিয়ে সহায়তার জন্য পত্র লিখেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা’র কাছে। পাহাড়বার্তা’কে পাঠানো চিঠিটি আমরা হুবহু প্রকাশ করছি।
বরাবর,
চেয়ারম্যান মহোদয়
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ।
বিষয়: করোনা ভাইরাসের কারণে ঘর বন্দী মানবেতর জীবন-যাপনকারী লামার ধুইল্যাপাড়া বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আর্থিক প্রণোদনা ও রেশনের জন্য আবেদন।
হে মান্যবর,
আমাদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন গ্রহণ করবেন। আপনি নিশ্চয়ই অবগত আছেন যে, কোভিড-১৯ বা করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বে যেভাবে ডানা বেধেছে বাংলাদেশ ও এর বাহিরে নয়। দিন-দিন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেই সাথে মৃত্যুও।
সরকারের পক্ষ থেকে নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সকল পেশার মানুষকে ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। সকল পেশার মানুষের জন্য প্রণোদনাও ঘোষণা করেছেন। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেখেছি আপনার পক্ষ থেকে বান্দরবান এলাকার হাজার হাজার অসহায় মানুষের মাঝে খাবার সামগ্রী বিতরণ করেছেন।
সেই সাথে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বরাবরের মত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বেতন ভাতা পেলেও, বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বেতন ভাতার বাহিরে। বেতন ভাতা না থাকায় জীবন যাপনের জন্য অনেক শিক্ষক /শিক্ষিকাকে পাঠদান শেষে ৪:০০ঘটিকার পর পার্ট-টাইম কাজ করতে হতো। করোনার কারণে তাও বন্ধ।
এদিকে করোনা প্রাদুর্ভাব যদি বৃদ্ধি পায় তাহলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । এমতাবস্থায় বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কর্মহীন হয়ে পড়ছে। কোন কর্ম না থাকায় জীবন-জীবিকা নির্বাহ হুমকির মুখে পড়ছে। এমনকি অর্ধাহারে-অনাহারে মানবেতর জীবন যাপন করছে। চোখ লজ্জার কারণে কারো কাছে কিছু চাইতে পারছিনা।
আপনি বান্দরবান পার্বত্য জেলার যোগ্য অভিভাবক হিসেবে ধুইল্যাপাড়া বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ জন শিক্ষক/শিক্ষিকাদের প্রণোদনা ও রেশনের সু-ব্যবস্থা করে কোন রকম দুমুঠো খেয়ে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেবেন এটা আমাদের বিশ্বাস।
শিক্ষক / শিক্ষিকাদের পক্ষে
মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন
প্রধান শিক্ষক
ধুইল্যাপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
সরই, লামা উপজেলা,বান্দরবান।