জেলা বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বান্দরবান জেলা বিএনপির সভাপতি হিসাবে মাম্যাচিং, সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সাবেক পৌর মেয়র মোঃ জাবেদ রেজাকে মনোনিত করে বিএনপির আংশিক কমিঠি ঘোষনা করা হয়েছে। কেন্দ্রিয় বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক মোঃ তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এই তথ্য জানা যায়।
বিএনপির সূত্রে আরো জানা গেছে,দীর্ঘদিন ধরে জেলা বিএনপির রাজনীতিতে মাম্যাচিং ও সাচিং প্রু জেরী গ্রুপের দন্ধের কারনে গত ৫টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এবং বিগত পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে টানা পরাজয় বরণ করে দলের প্রার্থীরা। এমনকি একে অপরে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় জড়িয়ে বিভিন্ন সময় আলোচনার জন্ম দেয়। দলের নেতাকর্মীরা একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে অনেকে বরণ করে কারাবাস। এই ঘটনার পর কেন্দ্রিয় সিনিয়র নেতারা কোন্দল নিরসনে বিভিন্ন সময়ে বান্দরবানে সফরে আসলে উভয় গ্রুপের নেতাদের সাথে বৈঠক করে, ফলে অনেকটা নমনিয় হয় উভয় গ্রুপ। কিন্তু জেলা বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষনা করার পর ফের নতুন করে দলের মধ্যে কোন্দল বাড়বে বলে মনে করছে নেতাকর্মীরা।
জেলা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক দৌলতুল কবির খান পাহাড়বার্তাকে বলেন,দাবী ছিল গনতান্ত্রিক পক্রিয়ায় সন্মেলনের মাধ্যমে কমিঠি হবে কিন্তু কেন্দ্র থেকে কমিটি চাপিয়ে দেওয়ার কারনে আমরা পদত্যাগ করেছি।
সূত্রে আরো জানা গেছে, নতুন কমিটি ঘোষনার পর বান্দরবান বিএনপির সহ-সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুছ, জেলা মহিলা দল সভানেত্রী কাজী নিরুতাজ বেগম, জেলা মহিলা দলের সাধারন সম্পাদিকা উম্মে কুলসুম সুলতানা লীনা, আলিকদম উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম,জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, সাধারন সম্পাদক দৌলতুল কবির খান সিদ্দিকী, লামা ছাত্রদলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বাবু মং, নাইক্ষংছড়ি স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নুর মোহাম্মাদ এদের মধ্যে কেউ কেউ দলীয় চেয়ারপার্সনের কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়েছেন এবং অনেকে পদত্যাগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জেলা মহিলা দল এর সভানেত্রী কাজী নিরুতাজ বেগম পাহাড়বার্তাকে বলেন, বান্দরবান বিএনপির সহ-সভাপতি, চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুছ, আলিকদম উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি চেয়ারম্যান আবুল কালাম পদত্যাগ করবেন। তিনি আরো বলেন, চোর ডাকাতের হাতে রাজনীতি চলে গেছে, এই রাজনীতি আমরা করবোনা।
বিএনপির একাংশের অভিযোগ, নতুন কমিঠির মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ২টি পদেই মাম্যাচিং গ্রুপের, জেরী গ্রুপের অনুসারীদের কেউ নেই তাই আমাদের ধারণা পূর্নাঙ্গ কমিঠিতে মাম্যাচিং গ্রুপের অনুসারীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে, সন্মেলনের মাধ্যমে কমিঠি হলে সবাই মেনে নিত, আর চাঙ্গা হতো দল কিন্তু নতুন এই কমিটি কেন্দ্রে অর্থ দিয়ে কেনা পকেট কমিটি।
নতুন কমিটির বিষয়ে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান জানান, কাউন্সিল করে ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন এসব কিছুই করা হয়নি। কেন্দ্র এখানে একটি প্রতিনিধি সভা করে, এরপর কিভাবে কমিটি গঠন করা হলো এ সম্পর্কে আমরা কিছুই জানিনা, তবে আমরা বসে এ বিষয়ে পরবর্তী সিন্ধান্ত নিবো।
এদিকে নতুন এই কমিঠিকে স্বাগত জানিয়েছে বিএনপির একাংশের নেতা নেতাকর্মীরা। তারা মনে করেন,নতুন কমিটি জামায়েত-শিবিরের প্রভাবমুক্ত কমিটি, দলীয় গ্রুপিং সামাল দিয়ে বান্দরবানের রাজনীতিতে ইতিবাচক ধারার রাজনীতি চর্চাই হবে নতুন কমিটির জন্য বড় চ্যলেঞ্জের।
এই ব্যাপারে জেলা বিএনপির নব নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক জাবেদ রেজা পাহাড়বার্তাকে বলেন, দলে কোন গ্রুপিং থাকবেনা, সবাইকে নিয়ে ইতিবাচক রাজনীতির সূচনা হবে, এর জন্য যদি আমার ত্যাগ স্বীকার করতে হয় তাতেও আমি প্রস্তুত আছি।