বান্দরবান হাসপাতালে ক্রমেই বাড়ছে শিশু রোগী

purabi burmese market

আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বান্দরবানে বাড়ছে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা, ফলে জেলা সদর হাসপাতালে রোগীর চাপও বেড়েছে।

বান্দরবান সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চলতি মার্চ মাসের ১৪দিনে নিউমোনিয়া আক্রান্ত ২৫জন ও ডায়রিয়া আক্রান্ত ২৩জন শিশু ভর্তি হয়েছে। ৪৮ জনের মধ্যে ১০জন শিশু এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে, এছাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে এ রোগের চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে অনেকেই।

গত বুধবার (১৬ মার্চ) বান্দরবান সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডে শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, এদের মধ্যে কেউ ঘুমাচ্ছে, কেউবা অসুখে কাতরাচ্ছে। এই শিশুদের বেশিরভাগ ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।

বান্দরবান সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি ৯মাস বয়সী ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু সানজিদের স্বজন হোসনেয়ারা বেগম বলেন, ‘গত পাঁচদিন ধরে সানজিদের ডায়রিয়া হচ্ছিল। প্রথমে ডাক্তার দেখিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া হয়েছিল, পরে ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে না আশায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি, এখন কিছুটা ভালো বোধ করছে সে।’

২বছর বয়সী নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিরিনের মা জোবাইদা আক্তার বলেন, ‘কিছু দিন আগে মেয়ের হালকা জ্বর ও নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল, প্রাইভেট ডাক্তার দেখিয়েছি, সুস্থ না হওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। মেয়ে এখন অনেকটা সুস্থ।’

dhaka tribune ad2

বান্দরবান সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছর (২০২১ সালে) জেলায় শিশু ও বয়স্ক মিলে সর্বমোট ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৪৪৪ জন, এর মধ্যে থানচিতে ১জন ও আলীকদমে ৬জন ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

আরো জানা যায়, চলতি বছরের গত দুই মাসে জেলায় সর্বমোট ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১হাজার ২৩১জন। পরিসংখ্যানে সব থেকে বেশি ডায়রিয়া আক্রান্ত উপজেলা হলো বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও আলীকদম উপজেলা।

আরো জানা যায়, ২০২১ সালের ১০নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৪ মার্চ পর্যন্ত জেলায় নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫৬ জন।

এদিকে বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আর এমও) ডা: জিয়াউল হায়দার বলেন, গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী বৃদ্ধি পাচ্ছে আর আমরা ভর্তিকৃত শিশু রোগীদের পর্যাপ্ত সেবা দিয়ে সুস্থ করার জন্য কাজ করছি।

তিনি আরো বলেন, আমরা হঠাৎ করে কেন শিশুরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে তার কারন অনুসন্ধান করার চেষ্টা করছি এবং প্রাথমিক ভাবে যা জেনেছি তাহলো আবহাওয়ার পরিবর্তন আর আর পার্বত্য জেলা হওয়ায় পাহাড়ের বিভিন্ন ঝিড়ি ঝর্ণায় পানি শুকিয়ে যাওয়ায় পানির ঘাটতি হচ্ছে আর অনেকেই দুষিত পানি পান করে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

বান্দরবান সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: জিয়াউল হায়দার আরো বলেন, এই সময়টায় শিশুদের বাড়তি যত্ন নিতে হবে, ডায়রিয়াসহ যেকোন রোগব্যাধি দেখা দিলে দেরি না করে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা সদর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের শরনাপন্ন হতে হবে।

আরও পড়ুন
আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।