বাবা হাঁপানি আছে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয় । প্রতি মাসে ৫টি গ্যাস লাগে । প্রতিটি গ্যাসের দাম ২৫০টাকা । আর ওষুধ লাগে প্রতি ১০ দিন পর পর ৪০০ টাকার । এই সময়ে পত্রিকার হকারি করে কোন মতে খেয়ে বেঁচে আছি। ঠিকমত ওষুধ কেনার সামর্থ এখন নেই। ওষুধ কিনতে পারি না, জানালেন বান্দরবান শহরের ষাটোর্ধ হকার মো: আলী।
আজ শুক্রবার (৩ এপ্রিল) বিকালে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কাজল কান্তি দাশ জেলার ১৪ জন হকারকে আর্থিক সহায়তার পর এই প্রতিবেদকের সাথে আলাপচারিতায় একথা বলেন, জেলা শহরের পত্রিকার হকার মো: আলী ।
ঘড়ির কাঁটা যখন রাত ১২টা, তখন পত্রিকা অফিসগুলো ব্যস্ত হয়ে পড়ে সারাদিনের ঘটে যাওয়া নানান ঘটনাগুলো দিয়ে তৈরি করা হয় প্রিন্টেড সংস্করণ। আর সেই ছাপা পত্রিকা সাত পাঁচ ঘুরে সকাল হতেই চলে আসে জেলা শহরে। পত্রিকা এজেন্টদের কাছে আসতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ে হকাররা। কিভাবে পাঠকদের কাছে দ্রুত এই পত্রিকা পৌছে দিবে। সেই হকাররা আপনার প্রিয় পত্রিকাটির কপি নিয়ে প্রতিদিনই আপনার দরজায় হাজির হয় । কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে বান্দরবানের অঘোষিত লকডাউনে মানুষ ঘর থেকে বের না হওয়ার কারনে এখন পত্রিকা বিক্রি নেই বললেই চলে, ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েছে হকাররা । মানবেতর জীবনযাপন করছেন জেলার ১৪ জন হকার ।

করোনা সংক্রমণে দেশজুড়ে অঘোষিত লগ ডাউনের কথা বলতে গিয়ে সাব এজেন্ট মো: নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ২৫ মার্চের আগে বান্দরবান সদরে পত্রিকা আসত ৩০টি । আর এখন পত্রিকা আসে মাত্র ৭টি। আর এই পত্রিকা বিক্রি করে ভালো মত কমিশন পায় না। দুজন কর্মচারীকে বেতন দিতে হয় মোট ১৪ হাজার টাকা ।
তিনি আরো জানান,পরিবারের সব চাহিদা পূরণ করতে পারি না। বর্তমানে যে পত্রিকা আসছে তা বিক্রি করে সংসারের খরচ চালাতে পারি না । দুর্যোগের এসময়ে কোন মতে চলতে পারি ।
জেলার বঙ্গ পেপারসের স্বত্বাধিকারী অসীম রায় জানান, চারিদিকে অফিস-আদালত বন্ধ, আগের মত পত্রিকা বিক্রি করতে পারি না । প্রতি দিন পত্রিকা আসত ৩ হাজার কপি। কিন্তু এখন আসে ১ হাজার কপি । এটিও বিক্রি করতে কষ্ট হয় । আর হকারদের বেতন তো দিতেই হয়। ভালো নেই কেউ ।
হকারদের কষ্টের কথা শুনে ছুটে এসেছেন বান্দরবানের পৌর মেয়র মো: ইসলাম বেবী । ছুটে এসেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ । কেউ সহায়তা করেছেন খাদ্য সামগ্রী দিয়ে আবার কেউ সাহায্য করেছেন আর্থিক সাহায্য দিয়ে ।
পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কাজল কান্তি দাশ জানান, আমি পত্রিকার হকারদের কষ্টের কথা শুনে তাদের পাশে থাকতে চেষ্টা করছি মাত্র। সমাজের বিত্তবানদের উচিত এই সময়ে ওদের পাশে থাকা।