বাড়ি-বাড়ি উঠোন বৈঠকের নির্দেশ আ. লীগের

NewsDetails_01

শুধু সভা-সমাবেশের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরার ধ্যান-ধারণা থেকে বেরিয়ে সরকারের উন্নয়ন চিত্র গ্রামে-গঞ্জের সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। কেন্দ্রীয় এ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে দলটির তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা। পরিকল্পনা অনুযায়ী সারাদেশে গ্রাম-গঞ্জে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষকে একত্রিত করে নেতাকর্মীদের উঠোন বৈঠক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সাধারণ মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে সভা-সমাবেশের চেয়ে উঠোন বৈঠক বেশি কার্যকর বলে দলটির নেতারা মনে করেন। এর মাধ্যমে নির্বাচনি প্রচারণায় এগিয়ে থাকা যাবে বলেও মনে করছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ স্থানীয়রা।

জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে মাথায় রেখে উঠোন বৈঠক করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এতে করে নৌকার পক্ষে নির্বাচনের প্রচারণা যেমন হবে, তেমনি সরকারের উন্নয়ন চিত্রও সাধারণ ও খেটে খাওয়া মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যাবে। সভা-সমাবেশের চেয়ে এই কার্যক্রম অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনের আগেই উঠোন বৈঠক কার্যক্রম শুরু ও শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।তার নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশে চিঠি পাঠানো শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে সোমবার (৩ জুলাই) এ চিঠি পাঠানো শুরু করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি।

উঠোন বৈঠকের সত্যতা স্বীকার করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবউল আলম হানিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা মনে করি, সভা-সমাবেশের চেয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে উঠোন বৈঠক অনেক বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখে। এতে করে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচারণা সাধারণ মানুষের কাছে ফুটে উঠবে এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিদের নিবিড় সখ্যতা গড়ে উঠবে এবং ভোটের আগে নৌকার প্রার্থীদের পরিচিতি ও প্রচারণাও সম্পন্ন হয়।’

NewsDetails_03

হানিফ বলেন, ‘ভোটের রাজনীতিতে উঠোন বৈঠক অনেক বেশি কার্যকর ও ফলপ্রসূ হবে।’

তিনি জানান, এই উঠোন বৈঠকে স্ব স্ব এলাকার জনপ্রতিনিধি, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কোনও এলাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোনও নেতা অবস্থান করলে, তিনিও উঠোন বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন। আওয়ামী লীগের দফতর সূত্রে জানা গেছে, দলের সাধারণ সম্পাদকের পক্ষ থেকে উঠোন বৈঠকের চিঠি ইতিমধ্যে তৃণমূলে পাঠানো শুরু হয়েছে। শিগগিরই তৃণমূলে এই কার্যক্রম শুরু হবে ।

এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘নির্বাচনকে মাথায় রেখে আওয়ামী লীগ বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এ পরিকল্পনার অন্যতম হলো উঠোন বৈঠক।’ তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের সান্নিধ্যে থাকা রাজনৈতিক দল। জনগণের সান্নিধ্য লাভ ও একইসঙ্গে বিভিন্ন সেক্টরে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডগুলো তাদের কাছে পৌঁছে দিতে উঠোন বৈঠক করা হবে।’

জানা গেছে, ওই একই চিঠিতে বিভিন্ন এলাকায় মতবিরোধের কারণে দলের যেসব ত্যাগী ও নিবেদিত নেতাকর্মী রাগ-ক্ষোভ নিয়ে ঘরে উঠে গেছেন, বর্তমান জনপ্রতিনিধিদেরকে তাদের সান্নিধ্যে যাওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া সারাদেশে এমন নিষ্ক্রিয় নেতার সংখ্যা কত জন তার তালিকা প্রদান করতেও বলা হয়েছে। এই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, যেসব জেলা, উপজেলা, ইউনিয়নে দলের কার্যালয় নেই সেসব স্থানের তালিকা তৈরি করে দ্রুত সভাপতির কার্যালয়ে পাঠাতে করতে। আর কোথায়-কোথায় ভাড়া কার্যালয় রয়েছে তারও একটি তালিকা পাঠাতে বলা হয়। দলীয় সভাপতি স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণের জন্যে আর্থিক অনুদান করবেন।

উল্লেখ্য, দলীয় কার্যালয় থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করে গত ২০ মে গণভবনে আয়োজিত বর্ধিত সভায় শেখ হাসিনা বক্তব্য প্রদান করেন। ওই সভায় তিনি বলেন, ‘সব এলাকায় আওয়ামী লীগের স্থায়ী র্কাযালয় থাকতে হবে এবং তা খোলা রাখতে হবে।’

আরও পড়ুন