বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের জমি ভরাটে নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাহাড়
জড়িত যুবদল নেতা নাজিম
বান্দরবানের বালাঘাটায় ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের জমি ভরাট করতে নির্বিচারে পাহাড় কাটা হচ্ছে। এসব পাহাড় কাটায় নিতৃত্ব দিচ্ছেন মো. নাজিম উদ্দিন।
আজ বুধবার (২৮ মে) দুপুরে থোয়াইংগ্যা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাঁচা রাস্তা বর্ষার কারণে পিচ্ছিল হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে এক্সকাভেটর দিয়ে বিদ্যালয়ের পাশের পাহাড়টি কেটে ট্রাকে করে মাটি সরানো হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে বান্দরবান সদর উপজেলার বালাঘাটা বাকিছড়া, থোয়াইংগ্যা পাড়া এলাকায় মো. নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে কাটা হচ্ছে পাহাড়।এরই মধ্যে ৫ টি পাহাড়ের অন্তত কয়েক লাখ ঘন ফুট মাটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।আর এসব মাটি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ভরাট করা হচ্ছে বালাঘাটা স্বর্ণ মন্দির সংলগ্ন নির্মাণাধীন ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের জমি। এতে দেশের প্রচলিত আইনকে অবজ্ঞা করার পাশাপাশি হুমকিতে ফেলছে পরিবেশ।
থোয়াইংগ্যা পাড়ার বাসীন্দা আপ্রু মারমা, বাকিছড়া এলাকার মো. রহিম, লেমুঝিরি এলাকার হেলাল বলেন, কতিত বিএনপি নেতা নাজিম উদ্দীন ক্ষমতার অপব্যবহার করে থোয়াইংগ্যা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী পাহাড়, জনৈক বদুরুনেছা বেগমের পাহাড়, বাকিছড়া এলাকার খায়রুর পাহাড়, লেমুঝিড়ি ইক্ষু গবেষণা কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী মোজাফরের পাহাড় কেটেছেন। যার সবকটি কাটা হয়েছে দিন দুপুরে। যা পরিবেশ ধ্বংশের পাশাপাশি পাহাড় কাটায় অন্যদেরও উৎসাহিত করবে বলে মন্তব্য করেন তারা।
থোয়াইংগ্যা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চন্দন কান্তি দেবনাথ বলেন, “বিদ্যালয়ের সংলগ্ন এলাকায় সারাদিন ধরে পাহাড় কাটা হচ্ছে। ভারী মাটিবোঝাই ট্রাকগুলো বিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে চলাচল করছে। বর্ষাকালে কাঁচা রাস্তা খুব পিচ্ছিল হয়ে যায়। একদিকে মেশিনের বিকট শব্দে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাঘাট হচ্ছে অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানান তিনি।

ট্রাক ড্রাইভার মামুন ও সাইফুল ইসলাম রিমন জানান, ২দিন ধরে ট্রাকে করে মাটি পরিবহন করছেন, প্রতিদিন প্রতি ট্রাক দিয়ে ৪০ থেকে ৫০টি ট্রিপে মাটি সরানো হচ্ছে। বর্তমানে ৫টি ট্রাক দিয়ে মাটি পরিবহন করা হচ্ছে বলে জানান তারা।
স্কেভেটর চালক জামাল উদ্দিন বলেন, তিনি বালাঘাটার বাসিন্দা নাজিম উদ্দিনের হয়ে কাজ করছেন। নাজিম প্রতি ট্রাক মাটি কাটার জন্য তাকে ১৩০ টাকা দিচ্ছেন।
এবিষয়ে বান্দরবান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারুফা সুলতানা খান হীরামনি বলেন, পাহাড়কাটার বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে তিনি যাচ্ছেন, বিস্থারিত পরে জানা যাবে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিন বলেন, বিদ্যুৎ গ্রিড উপকেন্দ্রের জমি ভরাটে স্থানীয়দের কাছ থেকে মাটি কিনে নিচ্ছেন। পাহাড় কাটায় তিনি কোন প্রকার জড়িত নয়।
বান্দরবান পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো.রেজাউল করিম বলেন, থোয়াইংগ্যা পাড়া এলাকায় পাহাড় কাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।