বিধবা নন, সন্তানহীন তবুও বান্দরবানে পাচ্ছে দুগ্ধ ও বিধবা ভাতা

সমাজ সেবা ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কান্ড

purabi burmese market

বান্দরবান পার্বত্য জেলায় দুগ্ধ ভাতা ও বিধবা ভাতা নিয়ে চলছে যেন এলাহী কান্ড। সঠিক যাচাই-বাছাই ছাড়া দেওয়া হচ্ছে দুগ্ধ ও বিধবা ভাতা। তাই বিধবা না হয়েও কেউ পাচ্ছে বিধবা ভাতা, আবার সন্তান না থেকেও কেউ পাচ্ছে দুগ্ধ ভাতা। আর এই বিষয় নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরী করেছেন- এস বাসু দাশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মালতি বড়ুয়া, পিতা হেমন্দ্র বড়ুয়া, স্বামী পটল বড়ুয়া। লেমুঝিড়ি আগাপাড়া, ৪ নং ওয়ার্ড, বান্দরবান সদর ইউনিয়নের বাসিন্দা। যার পরিচয়পত্র নং- ১৯৪২৫৯৮৭৬২। তিনি বিগত ২০১৬ সাল থেকে প্রতি মাসে ৫শ টাকা হারে বিধবা ভাতা পাচ্ছেন। অন্যদিকে ১৯-২০ অর্থ সাল থেকে প্রতিবছরে ৯ হাজার ৬শ টাকা হারে পাচ্ছেন দুগ্ধ ভাতা। আর সেই বিধবা ভাতা তিনি উত্তোলন করছেন জেলা সদরের জনতা ব্যাংক ও দুগ্ধভাতা উত্তোলন করছেন কৃষি ব্যাংক থেকে।

আরো জানা গেছে, সরকারি ভাতা প্রাপ্তির নিয়ম অনুসারে বিধবা না হলে বিধবা ভাতা ও দুগ্ধপোষ্য সন্তান না থাকলে দুগ্ধ ভাতা প্রদানের বিধান না থাকলেও এবং একই ব্যাক্তি সরকারি ভাবে ২টি ভাতা পাওয়ার নিয়ম না থাকলেও অজ্ঞাত কারনে তিনি পাচ্ছেন উভয় ভাতা। আর এই বিষয়টির দায় এড়াতে পারেনা জেলার সমাজসেবা অধিদপ্তর ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।

এই বিষয়ে উভয় ভাতা পাওয়া অভিযুক্ত মালতি বড়ুয়ার সাথে একাধিকবার ফোনে (০১৮৩৯২২৯২৭০) কথা বলার চেষ্টা করা হলে তার ফোন নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।

আরো জানা গেছে, প্রথম ও ২য় গর্ভধারণ কাল,বয়স কম পক্ষে ২০ বছরের উর্দ্ধে, মোট মাসিক আয় ১৫০০ টাকার নিন্মে, দরিদ্র প্রতিবন্ধী মা অগ্রাধিকার পাবেন,কেবল বসতবাড়ি রয়েছে বা অন্যের বাড়িতে বাস করে। নিজের পরিবারের কৃষি জমি বা মৎসচাষ নেই। কমপক্ষে ৫টি শর্ত পূরন হলে দুগ্ধ ভাতা পাওয়ার প্রাথমিক তালিকায় অন্তভূক্ত হওয়ার বিধান থাকলেও তা মানা হচ্ছেনা।

dhaka tribune ad2

অন্যদিকে বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতা প্রদান কর্মসূচি আওতায়-‘বিধবা’ বলতে তাদেরকেই বুঝানো হবে যাদের স্বামী মৃত; ‘স্বামী নিগৃহীতা’ বলতে তাঁদেরকেই বুঝানো হবে যাঁরা স্বামী কর্তৃক তালাকপ্রাপ্ত বা অন্য যে কোন কারণে অন্ততঃ দু’বছর যাবৎ স্বামীর সংগে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বা একত্রে বসবাস করেন না।

মালতি বড়ুয়া বিধবা না হয়ে এবং স্বামী পরিত্যাক্ত হিসাবে কোন প্রত্যায়ন পত্র প্রদান না করলেও তবে এই বিষয়ে জেলার সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা শফিকুর রহমান বলেন, তিনি বিধবা ভাতা নয়, স্বামী পরিত্যাক্ত হিসাবে ভাতা পাচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, শুধু মালতি বড়ুয়া নয়, বান্দরবান সদর উপজেলায় সরকারী এই দুটি প্রতিষ্ঠানে এই ধরণের অন্তত ২০-২৫ জন এই ধরণের ভাতা পাচ্ছেন। তাই স্থানীয়দের দাবি, সরকারি নীতিমালা অনুসারে প্রকৃত বিধবা ও দুগ্ধভাতা যারা পাওয়ার উপযুক্ত তারা এই সরকারি সহায়তা পেলে পূরণ হবে সরকারের ভিশন।

বান্দরবান মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আতিয়ার চৌধুরী বলেন, ভুল হতে পারে, তবে এই বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন
1 মন্তব্য
  1. Suman বলেছেন

    ধন্যবাদ প্রতিবেদক সাহেবকে! শুধু সদরে নয়, দয়া করে উপজেলা পর্যায়েও খবর নিয়ে দেখেন কী হারে দূর্ণীতি চলছে এই সকল বিভাগে। এই সকল বিভাগের কর্মকর্তাগণ এ ধরণের কাজের সাথে জড়িত বিভিন্ন বিভাগের সাথে যোগসাজশে কিভাবে দূর্ণীতি করছে। এই ভাতা পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটা পদক্ষেপে টাকা লেনদেন হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশিত হবে না।