বিপ্লবের স্বপ্ন জাগিয়ে রেখে চলে গেলেন ফিদেল কাস্ত্রো

NewsDetails_01

কমিউনিস্ট বিপ্লবের কিংবদন্তী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো
কমিউনিস্ট বিপ্লবের কিংবদন্তী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো
বিপ্লব হল আমৃত্যু সংগ্রাম৷ অতীত থেকে ভবিষ্যতের পথে যার নিরন্তর যাত্রাপথ৷ পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থার মুখের উপর এ কথা শুনিয়ে দিতে পেরেছিলেন তিনি৷ জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিপ্লব গোলাপের শয্যা নয়৷ ধনতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার মুখে তিনি যেন ছিলেন শেষ উদ্ধত অহঙ্কার৷ অবজ্ঞাভরে যিনি বলতে পারতেন, পুঁজিবাদ টাকা ব্যবহার করে৷ আমরা ছুঁড়ে ফেলে দিই৷ বিশ্ব জুড়ে বিপ্লবের শামিয়ানা টাঙিয়ে রেখে চলে গেলেন ফিদেল কাস্ত্রো৷ কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং কমিউনিস্ট বিপ্লবের কিংবদন্তী নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর৷

NewsDetails_03

৯০ বছর বয়সী এ নেতার জীবনাবসান হয়েছে বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। অবশ্য মার্কিন বার্তা সংস্থা এপিসহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ফিদেলের ভাই এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোই তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।

কিউবার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ওরিয়েন্তে প্রদেশে ১৯২৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন ফিদেল কাস্ত্রো। হাভানা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিষয়ে পড়ার সময় ফিদেল কাস্ত্রো তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। এরপর কিউবার রাজনীতিতে একজন বিখ্যাত ব্যক্তিতে পরিণত হন তিনি। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় প্রেসিডেন্ট ফালজেন্সিও বাতিস্তা এবং কিউবার উপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রভাবের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী সমালোচনামূলক নিবন্ধ লিখে।
পরবর্তীকালে কাস্ত্রো কিউবান বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন যা যুক্তরাষ্ট্রের মদদে চলা বাতিস্তার স্বৈরশাসনকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এর কিছুদিন পরই পর কাস্ত্রো কিউবার প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৬৫ সালে তিনি কিউবা কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হন এবং কিউবাকে একদলীয় সমজতান্ত্রিক দেশ হিসেবে রূপ দেন। প্রায় অর্ধ-শতাব্দী ধরে কিউবা শাসন করেছেন তিনি। ২০০৬ সালে শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর ২০০৮ সালে ছোট ভাই রাউল কাস্ত্রোর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন এ বিপ্লবী নেতা। এরপর জনসমক্ষে খুব কমই দেখা যেত তাকে। গত এপ্রিলে দেশের কমিউনিস্ট পার্টির সমাবেশের শেষ দিনে তার ভাষণটিও তেমনই একটি বিরল ঘটনা ছিল।
৪৯ বছর ধরে কিউবা শাসন করেছেন কাস্ত্রো। যে কিউবা একসময় যুক্তরাষ্ট্রের প্লেগ্রাউন্ড বলে বিবেচিত হতো, যেখানকার দরিদ্ররা সামাজিকভাবে অসমতায় বাস করতো-সেই কিউবাকে রেকর্ড মানবাধিকারের দেশে পরিণত করেছিলেন কাস্ত্রো। কারও কারও কাছে তিনি নায়ক বলে বিবেচিত হতেন। সমর্থকদের চোখে কাস্ত্রো ছিলেন এমন এক নেতা যিনি জনগণের কাছে দেশকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তবে তার বিরোধীরা বলতো, কাস্ত্রো বিরোধীদের দমন-পীড়নের ক্ষেত্রে নৃশংসতা দেখিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র এবং এর কয়েকটি মিত্র দেশের কাছে হুমকিজনক বলে বিবেচিত ফিদেল কাস্ত্রো লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবীদের কাছে সমাদৃত ছিলেন।

আরও পড়ুন