বিশ্ব মানবতা কল্যাণে মহালছড়িতে মহা হরিনাম যজ্ঞ মহোৎসব
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মহালছড়ি উপজেলার যৌথ খামার ত্রিপুরা পাড়ায় বিশ্ব মানবতা কল্যাণে মহালছড়িতে মহা হরিনাম যজ্ঞ মহোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৮ম অষ্টপ্রহর হরিনাম যজ্ঞ মহোৎসবে বিশ্ব মানবতার কল্যাণ, জীবের সুখ-সমৃদ্ধি ও জগতের মঙ্গল কামনায় এই ধর্মীয় উৎসব পরিণত হয় পাহাড়ি জনপদের এক মহামিলনমেলায়।
গত সোমবার (১০ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে আজ বুধবার ভোর পর্যন্ত চলে এই মহোৎসব। সার্বজনীন শ্রী শ্রী হরি মন্দির প্রাঙ্গণে গীতা পাঠ, হরিনাম সংকীর্তন, ভোগ নিবেদন, মহাপ্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন ধর্মীয় আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয় এই আয়োজন।
মহোৎসব পরিদর্শনে যান খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা, পরিষদের সদস্য ধনেশ্বর ত্রিপুরা ও কংজপ্রু মারমা। উৎসবের পরিবেশ দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তারা। তবে খোলা জায়গায় মহোৎসবের আয়োজন দেখে কষ্ট প্রকাশ করে চেয়ারম্যান জানান, আগামীতে মন্দিরের জন্য একটি পাকাভবন নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এ সময় আয়োজক কমিটিকে নগদ ২০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন তিনি।
আয়োজক কমিটির সভাপতি বিনন্দ ত্রিপুরা বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা ৮ম বারের মতো এই মহোৎসব আয়োজন করেছি। আমাদের প্রধান সমস্যা হলো মন্দিরের স্থায়ী নাথ মন্দির না থাকা, যার কারণে অতিথিদের বসার অসুবিধা হয়। আমরা আশা করছি ভবিষ্যতে এটি নির্মাণ হবে।”

উৎসবকে ঘিরে বসেছে নানা সম্প্রদায়ের দোকানপাট। ত্রিপুরা, মারমা, চাকমা ও বাঙালি সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীরা এনেছেন ধর্মীয় সামগ্রী, নারী ও শিশুদের জন্য পোশাকসহ নানা পণ্য।
এই মহোৎসব শুধুমাত্র ধর্মীয় আয়োজন নয়, এটি পাহাড়ি অঞ্চলের ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। ঢাকের বাদ্য, উলুধ্বনি, ধূপের গন্ধ ও রাসপূজার নৈবেদ্যতে মুখর হয়ে উঠেছে মন্দির এলাকা।
ভক্তদের বিশ্বাস, এই অষ্টপ্রহর হরিনাম যজ্ঞ মহোৎসব তাদের জীবনে শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।
যৌথ খামার ত্রিপুরা পাড়ায় এই হরিনাম যজ্ঞ মহোৎসব শুধু ধর্মীয় উৎসবই নয়, এটি পার্বত্য অঞ্চলের ঐতিহ্য ও সম্প্রীতির প্রতীক। আগামী বছর আরও বড় পরিসরে এই প্রত্যাশা করছেন স্থানীয়রা।