সরকারি তথ্য মতে, বান্দরবানের ৭টি উপজেলার ১৭৭টি, রাঙামাটির ১০ উপজেলার ৫০০টি এবং খাগড়াছড়ির ৯টি উপজেলায় বৌদ্ধ বিহার রয়েছে ২৬৩টি। সব বিহারগুলোতে পুলিশ সদস্য মোতায়নের পাশাপাশি পুলিশ বিহারগুলো পরিদর্শন করে করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখছে এবং গোয়েন্দর নজরদারী বাড়ানো হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, বৌদ্ধ পুর্ণিমা ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও যথাযথ ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীয্যের মধ্য দিয়ে উদযাপন উপলক্ষ্যে বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, গণমাধ্যম কর্মী, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের সাথে তিন জেলার পুলিশ সুপার আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা করেন। এর অংশ হিসাবে তিন পার্বত্য জেলার প্রত্যেকটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বিহারগুলোর প্রধানদের নিয়ে নিরাপত্তা সংক্রান্ত বৈঠক করেন এবং তাদের সহযোগীতা কামনা করেন।
রাঙামাটির আসাম বস্তির বুদ্ধাংকুর বিহারের সভাপতি ডা: সুপ্রিয় বড়ুয়া বলেন, হঠাৎ এই ধরণের সতর্কতার কারনে আমরা কিছুটা চিন্তায় থাকলেও নিরাপত্তা জোরদার থাকবে বলে আমাদের প্রশাসন থেকে জানানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, বৌদ্ধ পূর্ণিমায় যাতে কোন বিশেষ গোষ্ঠী বা মহল নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে না পারে সেজন্য বৌদ্ধ বিহারগুলোতে ইতিমধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে বুদ্ধ পূর্ণিমায় ব্যাগ, পার্স ও ভ্যানিটি ব্যাগ ইত্যাদি সাথে না আনার জন্য পূর্ণার্থীদের প্রতি আহব্বান জানান পুলিশ। সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে স্থাপিত চেক পোষ্টে তল্লাশীকালীন সহযোগিতার করার জন্য অনুরোধ জানান।
খাগড়াছড়ির আর্য বন বিহারের অর্থ সম্পাদক খোলারাম চাকমা বলেন, হামলার আশংখার বিষয়টি জানার পর থেকে আমরা খুব আতংকিত এবং শংকিত, বিহারের যেতে ভয় পাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, বিহারগুলোর নিরাপত্তার যাতে কোন ঘাটতি না থাকে আশাকরি প্রশাসন সেই ব্যবস্থা নিবে।
গোয়েন্দা সংস্থার একটি সূত্র জানায়, তিন পার্বত্য জেলার প্রবেশ মুখ ও উপজেলাগুলোতে স্থাপিত প্রত্যেকটি চেকপোষ্টে তল্লাশী জোরদার করা হয়েছে,যাতে নিরাপত্তার ফাক গলে কোন অপরাধী গোষ্ঠি পার্বত্য জেলায় প্রবেশ করতে না পারে। পাহাড়ে অবস্থানরত বিদেশীদের উপর নজরদারী বাড়ানোর পাশাপাশি জেলার হোটেলগুলোতে অবস্থানরতদের সন্দেহজনক গতিবীধির উপর নজর থাকবে গোয়েন্দাদের।
রাঙ্গামাটির পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর কবীর বলেন, সব বিহারে আমরা বার্তা পাঠিয়ে দিয়েছি, পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদেরও বিষয়টি জানিয়ে দিয়েছি। জেলার বৌদ্ধবিহারে পুলিশি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।
সম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ও পশ্চিম বঙ্গে জঙ্গী হামলার কথা জানিয়েছে ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি)। এই সম্ভাব্য হামলা চালাতে পারে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) বা ইসলামিক স্টেট (আইএস)। বুদ্ধ পূর্ণিমায় হামলার আশঙ্কার পাশাপাশি আইবি জানিয়েছে, বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু বা বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা চালানো হতে পারে, এরপর থেকে দেশের বৌদ্ধ অধ্যুষিত তিন পার্বত্য জেলার বিহারগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।
এই ব্যাপারে বান্দরবানের পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদার বলেন, গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।