বৃষ্টি উপেক্ষা করে পর্যটকে মুখরিত বান্দরবান

NewsDetails_01

গত ২ বছর করোনার কারনে ঈদে পর্যটকরা ভ্রমনে বের হতে না পারলেও এবার ঈদের দিন থেকে অঝোরে বৃষ্টি হলেও বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে পাহাড়ের প্রাকৃতিক দৃশ্য আর বিচিত্রময় জীবন ধারা দেখতে এবারও পর্যটকে মুখরিত বান্দরবান।

বান্দরবানে পাহাড়-পর্বত ছাড়াও এখানে রয়েছে অসংখ্য ঝিরি-ঝর্ণা, মেঘলার লেক, স্বর্ণমন্দির, নীলাচল, নীলগিরি, শৈলপ্রপাত, নাফাকুম, রেমাক্রি, চিম্বুক, নীলদিগন্তসহ সরকারী-বেসরকারী অনেকগুলো পর্যটন স্পট। সবকিছু মিলিয়ে ঈদের টানা ছুটিতে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকের পদভারে এখন মুখর হয়ে উঠছে বান্দরবান। পুরো শহর জুড়েই পরিণত হয়েছে মিলন মেলায়। পর্যটকের বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউজ, রেস্ট হাউজ মালিকসহ পর্যটনশিল্পে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

বান্দরবানের নীলাচল পর্যটনকেন্দ্রে ভ্রমণে আসা পর্যটক সালমা আক্তার জানান, সবুজ বনানী ঘেরা পাহাড়ের সৌন্দর্য্য দেখতে সত্যিই অসাধারণ বান্দরবান।

অরণ্যে ঘেরা পাহাড়ের সঙ্গে মারমা, মুরুং, ত্রিপুরা, বম, তংচঙ্গ্যা, চাকমা, চাক, খেয়াং, খুমী, লুসাই, কুকি, পাংখোসহ মোট ১১টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীর সরল জীবনযাপনের এ আবাসস্থল ধীরে ধীরে হয়ে উঠছে সৌন্দর্য্যপিয়াসী পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু। ঈদকে কেন্দ্র করে তাই পর্যটকদের আনাগোনা লক্ষনীয় জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে। জেলার পর্যটন কেন্দ্র নীলাচল, মেঘলা, প্রান্তিক লেক, শৈলপ্রপাত, নীলগীরি, চিম্বুক পাহাড়সহ প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের ভীড় বেড়েই চলেছে।

বান্দরবানের মেঘলা পর্যটনকেন্দ্রে বেড়াতে আসা পর্যটক আনিসুর রহমান রুবেল বলেন, বান্দরবানের বিনোদন কেন্দ্রগুলো বেড়াতে ভালো লাগে। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে প্রায়ই ভ্রমনে আসি এবং পাহাড়, নদী আর ঝর্ণার পাশে থেকে সময় কাটাই।

NewsDetails_03

নাগরিক জীবনের ছকে বাঁধা সময় থেকে বেরিয়ে যে কেউ এখানে হারিয়ে যেতে পারেন নীলাচলের মেঘে ঢাকা পাহাড়ে, মেঘলা লেকের সচ্ছ জলে ভাসাতে পারেন ডিঙ্গি নৌকা অথবা ঘুরে আসতে পারেন চিম্বুক পাহাড়ে। আর পা ফেললেই নীলগীরির অপরুপ শোভা দেখতে পারবেন। শহরে যানজট ও কোলাহল মুক্ত পরিবেশে একটু স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেলতে চান তাহলে অবশ্যই বেছে নিতে হবে আপনাকে বান্দরবানকে।

বান্দরবানের হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে, এবছর ঈদে অনেক পর্যটক আসছে দেখলাম। আশা করি আগামীতে আরো পর্যটক এই জেলায় আসবে।

বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় প্রায় ৫৫টি হোটেল-মোটেলে আগামী শনিবার পর্যন্ত পর্যটকের আগমন অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ট্যুরিস্ট পুলিশ বান্দরবান জোনের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল হালিম জানান, পর্যটকরা যাতে নিরাপদে ভ্রমন করতে পারে সে লক্ষে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে, এছাড়া ও বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ট্যুরিস্ট পুলিশ রয়েছে।

তিনি আরো জানান, বান্দরবান এসে কোনো পর্যটক যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সেই দিকে আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখছি।

এবারের ঈদ ভ্রমন সবার জন্য আনন্দময় হোক, আর ঈদের ছুটি শেষে বান্দরবান থেকে নিরাপদে নিজ নিজ গন্তব্যে ফেরত যাবে পর্যটকেরা, এমনটাই প্রত্যাশা পর্যটন সংশ্লিষ্টদের।

আরও পড়ুন