বেতন বৈষম্যের প্রতিবাদে কর্মবিরতীতে লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ির স্বাস্থ্য কর্মীরা

NewsDetails_01

নিয়োগবিধি সংশোধন করে বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কেন্দ্রীয় দাবি বাস্তবায়ন কমিটির ঘোষিত কর্মসূচীর অংশ হিসেবে সারাদেশের ন্যায় বান্দরবান জেলার লামা ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায়ও অনির্দিষ্ট কালের কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারিরা।

আজ বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে স্বাস্থ্য কর্মীরা লামার উপজেলা সদর ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে পৃথক কর্মবিরতীতে অংশ নেয়। একই ঘোষণা অনুযায়ী নাইক্ষ্যংছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্ত্বরে কর্মবিরতি পালন করা হচ্ছে। এসময় ঘোষিত কর্মবিরতি পালনকারীদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারি এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মো, শাহ্ জাহান(এইচ,এ), আব্দুর রহিম, কামরুল হাসান, বেলাল উদ্দীন,ফাতেমা বেগম,চিং হ্লা য়ো চাক্, হ্লা মং চিং, বিউরি মার্মা,উম্মে হাবীবা প্রমূখ।

তারা জানান, দাবি অনুযায়ী প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। এতে চলতি বছরের ৫ই ডিসেম্বর আনুষ্ঠিতব্য হাম রুবেলা ক্যাম্পেইন অনিশ্চয়তার মুখে পড়ায় উপজেলার ৩০ হাজার শিশু হাম রুবেলা টিকা না পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকার পল্লীগুলোতে হাম রুবেলার প্রাদূর্ভাব দেখা দেওয়ার পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবায় বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

NewsDetails_03

বাংলাদেশ হেলথ্ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশনের লামা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারিরা যথাক্রমে ১৪, ১৫, ও ১৬তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। নিয়োগবিধি সংশোধন করে তাদের বেতন যথাক্রমে ১১, ১২, ও ১৩তম গ্রেডে উন্নীত করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালের ৬ই ডিসেম্বর স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য সহকারিদের এক মহা সমাবেশে বেতন বৈষম্য নিরসনের ঘোষনা দিয়েছিলেন, ২০১৮ সালে ২ জানুয়ারি তৎকালিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য একটি কমিটিও গঠন করে দেন। এছাড়া চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি আমরা হাম রুবেলা ক্যাম্পেইন বর্জন করলে বর্তমান স্বাস্থ্য মন্ত্রী, সচিব ও মহাপরিচালক মহোদয় আমাদের দাবি মেনে নিয়ে লিখিত সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। আমরা এসব প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন চাই।

বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগীয় পরিদর্শক সমিতির বান্দরবান জেলা কমিটির সভাপতি নাজিম উদ্দিন বলেন, ১৯৭৯ সালে এপ্রিলে চালু করা হয় সম্প্রসারিত টিকাদান সর্মসূচি (ইপিআই)। এ কর্মসূটি আওতায় দেশের এক লাখ ২০হাজার আউটরিচ রুটিন টিকাদান কেন্দ্রের কর্মসূচি এককভাবে স্বাস্থ্যসহকারীদের ওপর ন্যস্ত করা হয়। টিকাদান কর্মসূচির মাধ্যমে স্বাস্থ্যসহকারীরা বর্তমানে ১০টি মারাত্মক সংক্রামক রোগের (শিশুদের যক্ষা, পোলিও, ধনুষ্টংকার, হুপিং কাশি, ডিপথেরিয়া, হেপাটাইসিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, নিউমোনিয়া ও হাম-রুবেলা) টিকা প্রদান করেন। এ স্বাস্থ্য সহকারীরাই ২০১৩ সালের জানুুয়ারিতে একদিনে ৯মাস থেকে ১৫বছরের কম বয়সী ৫ কোটি ২০ লাখ শিশুকে এক ডোজ হাম-রুবেলা টিকা সফলভাবে প্রদান করেন।

তিনি আরো বলেন, প্রজাতন্ত্রের পদোন্নতি বিধি অনুযায়ী একজন সরকারী কর্মকর্তা বা কর্মচারী ৩ থেকে ৭ বছর পর পর পদোন্নতি পান। কিন্তু একজন স্বাস্থ্যসহকারীরা ২০ থেকে ২৫ বছরেও পদোন্নতি পেয়ে সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক হতে পারে না। যদিওবা পদোন্নতি পান, তবুও স্বাস্থ্যপরিদর্শক হতে ৫ থেকে ৭ বছর অপেক্ষা করতে হয়। অনেকে এমন সময় পদোন্নতি পান, যখন চাকরির বয়স বাকি থাকে ৫ থেকে ৬ মাস। আবার পদোন্নতি হলেও বেতন বাড়ে না এক পয়সাও।

আরও পড়ুন