আট বছর আগে খাগড়াছড়ি থেকে নিখোঁজ মো: নুরুল ইসলাম অবশেষে ভারত থেকে ফিরে এসে এখন মা বাবার বুকে। নুরুল ইসলাম (১৫) নিজের বাড়ি ফেরায় তার বাড়িতে এখন উৎসব আমেজ। তাকে দেখতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের শালবন এলাকার বাসায় আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীসহ উৎসুক জনতা ভীড় করেছেন।
মো: নুরুল ইসলামের মা ফাতেমা বেগম বলেন, আমি আমার বুকের ধন ফিরে পেয়েছি, যখন ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম তখন (গত জুলাই মাসে) খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপারের মাধ্যমে ছেলের সন্ধান পায়। তিনি আরো বলেন, যারা আমার ছেলেকে আমাদের বুকে এনে দিয়েছেন আল্লাহ তাদের মঙ্গল করুন।
বাবা সরবত আলী, মা ফাতেমা বেগম, ছোট ভাইসহ খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশের একজন প্রতিনিধি মো: নুরুল ইসলামকে বাচ্পান বাঁচাও আন্দোলনের কাছ থেকে গ্রহণ করে। শনিবার বিকেলে খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে উদ্ধার হওয়া মো: নুরুল ইসলাম’কে মা বাবার কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে হস্তান্তর করা হয়।
দীর্ঘ আট বছর পর মা বাবার বুকে ফিরতে পেরে খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মো: নুরুল ইসলাম বলে, অপরিচিত এক লোকের সাথে কাজের সন্ধানে সে বরিশাল যায়, সেখান থেকে তাকে ঢাকা নেয়া হয়। পরবর্তীতে ঢাকা থেকে কুমিল্লা দিয়ে কাঁটা তাঁরের নিচ দিয়ে তাকে ভারতে পাঠানো হয়। ভারতে বিভিন্ন দোকানে কাজ করার সময় তাকে প্রায়ই মারধর করা হতো। ‘বাচ্পান বাঁচাও আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠন তাকেসহ বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করে বলেও জানায় সে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো: মজিদ আলী বলেন, দিল্লীর ‘বাচ্পান বাঁচাও আন্দোলন’র যোগাযোগ কর্মকর্তা পরমা আচার্যীর মাধ্যমে মো: নুরুল ইসলামের অবস্থান জানতে পারি। তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দিল্লীস্থ বাংলাদেশের দূতাবাসে যোগাযোগ করা হয়। তার অভিভাবকের নাগরিকত্ব ও জাতীয়তা অনুসন্ধান করে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরু হয়। অবশেষে সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে গত শুক্রবার যশোরের বেনাপোল চেক পোষ্ট দিয়ে তাকে দেশে ফেরত আনা হয়।
প্রসঙ্গত, মো: সরবত আলীর তিন ছেলের মধ্যে মো: নুরুল ইসলাম মেজো। অভাবের সংসার হওয়ায় তাকে বাড়ির পাশের খাগড়াপুর এলাকায় একটি চায়ের দোকানে কাজে দিয়েছিল বাবা সরবত আলী। সেখান থেকে আট বছর আগে নিখোঁজ হয় মো: নুরুল ইসলাম।