ভারী বৃষ্টি হলেই আতংকে ঘুম হারাম ওদের

বর্ষায় ভারী বৃষ্টি হলে ঝিড়িতে অতিরিক্ত মাত্রায় পানির স্রোতে বান্দরবানের থানচির মগক ঝিড়ির ভাঙনে কবলে পড়ে আতংকে দিন কাটে স্থানীয়দের। থানচি সদর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড মগক হেডম্যান পাড়া শতাধিক পরিবারের মধ্যে ২০-২৫ পরিবারে চরম আতংক বিরাজ করে। ২০১৮ সালে ভারী বৃস্টিতে প্রবল স্রোতে মগকসে ঝিড়ির ভাঙ্গনের কবলে পড়ে পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ড অর্থায়নে ইউনিসেফ তত্ত্বাবধানের টেকসই সামাজিক সেবা প্রকল্পের শিক্ষা কেন্দ্র পানিতে ভেঁসে যায়, এছাড়াও দুই পরিবারের ঘর বাড়ী অর্ধেক কেড়ে নেই, ২৫-২৯ পরিবার থাকে পানি বন্দি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পৌনে শতবছরে পুরোনো মগক হেডম্যান পাড়া বর্তমানে থানচি হেডম্যান পাড়া নামে পরিচিত। প্রায় ১২০ পরিবারের অবস্থান।

পাড়ায় প্রধান বাথোয়াইচিং মারমা জানান, পৌনে শত বছরে পুরোনো শতাধিক বাড়ী ঘর পাড়ার পূর্বে ও দক্ষিনের মগক ঝিড়ি, পশ্চিমে পাহাড়, উত্তরে শ্বশান। পূর্ব ও দক্ষিন সাইডে মগক ঝিড়ির ভাঙনের কবলে পড়লে বিশাল ব্যয় বহুল হওয়াই পাড়াবাসীদের পক্ষে রক্ষা করার সম্ভব না হওয়ায় স্থানীয়দের আবেদনের প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ দুই/তিনবার পরিদর্শন করে গেছেন। ঐতিহ্যবাহী পাড়াকে ঝিড়ির ভাঙন থেকে রক্ষা করার জরুরী প্রয়োজন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য ও হেডম্যান পাড়ার বাসিন্দা অংশৈসা মারমা বলেন, নির্বাচন আসলে প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দেয় কিন্তু নির্বাচিত হলে খোঁজ নেই তাদের। গত ২০২০ সালে ভারী বৃষ্টিতে ঝিড়ির পানির স্রোত অতিরিক্ত থাকায় স্কুল ঘরসহ অনেক ফলজ্ গাছ ভাঙনে তলিয়ে গেছে। পাড়াবাসীদের স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশ গাছ দিয়ে বাঁধ নির্মান করেছিলাম কিন্তু বছর না হতেই ভেঙ্গে গেছে।

একই পাড়ার বাসিন্দা সহকারী শিক্ষক সাঅংপ্রু মারমা বলেন, ভারী বৃষ্টি হলে শতাধিক পরিবার মধ্যে ২৫/৩০ পরিবারের ঘুম নেই।

এই ব্যাপারে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউল গনি ওসমানী বলেন, ঝিড়ির ভাঙন দেখেছি কিন্তু রক্ষা করতে রিটার্নিং ওয়াল দিতে হবে উপজেলা পরিষদের স্বল্প বরাদ্ধের ছোট প্রকল্প দিয়ে রক্ষা করার সম্ভব নয়। সেটি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে।

বান্দরবান জেলা পানি উন্নযন বোর্ড থানচি উপজেলা দায়িত্বপ্রাপ্ত সেকশন অফিসার মির্জানুল হক বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদের অনুরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবানে নির্বাহী প্রকৌশলী, কক্সবাজার এসি স্যার সহ ২ বার জরিপ করেছি, সাংগু নদী ও মাতা মুহুরী নদী ভাঙনে কবলে পড়ার নদী রক্ষা বাঁধ নামে প্রকল্প সংশ্লিষ্ঠ মন্ত্রনালয়ের অনুমোদনের জন্য দাখিল করা আছে।

বান্দরবান জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী অরুপ চক্রবর্তী বলেন, আমরা দুই বার পরিদর্শন করেছি। এলাকাবাসী, জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসন দাবী করেছেন,পাড়াটি রক্ষা করার প্রয়োজন, তাই সাংগু নদী ও মাতামুহুরী নদী ভাঙ্গনের জন্য কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, বান্দরবান অঞ্চলে জন্য প্রকল্প অনুমোদনে মন্ত্রনালয়ে বরাদ্ধ চেয়ে এবং প্রকল্প অনুমোদনের জন্য রিপোর্ট জমা দিয়েছি।

আরও পড়ুন