মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদীকে হুমকি

NewsDetails_01


পূর্বশত্রুতা জেরে খাগড়াছড়ির নুনছড়ি থলিপাড়া গ্রামের আলোচিত পিতা পুত্র হত্যাকােেণ্ডর চিহ্নিত আসামীরা মামলা প্রত্যাহারে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১০টায় খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাব হলরুমে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা হত্যাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশের অবহেলার তীব্র প্রতিবাদ, অবিলম্বে পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা প্রদান ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত চিরঞ্জিত ত্রিপুরা ছেলে নিহার কান্তি ত্রিপুরা।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য খেকোনেশ্বর ত্রিপুরাসহ হত্যা মামলার অন্যান্য আসামীরা দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়াচ্ছে। তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করছে। কিন্তু পুলিশ বলছে আসামীরা পলাতক। পুলিশের নীরবতার সুযোগে হত্যাকারীরা আমাদের পরিবারকে মামলা প্রত্যাহারে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। মামলা প্রত্যাহার না করলে প্রাণনাশেরও হুমকি দিচ্ছে। এতে পরিবারের সদস্যরা থলিপাড়ার গ্রামের বাড়ি ছেড়ে খাগড়াছড়ি শহরে বসবাস করছি। প্রাণনাশের হুমকি প্রদানের ব্যাপারে গত ৬ জুন খাগড়াছড়ি সদর থানায় হুমকি দাতাদের নাম উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরী করা হলেও পুলিশ এখনও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এমতাবস্থায় আমাদের পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন নিহত চিরঞ্জিত ত্রিপুরার স্ত্রী ভবেল²ী ত্রিপুরা, নিহত কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরার স্ত্রী বিজলী ত্রিপুরা, তার ছোট ভাই উমেশ কান্তি ত্রিপুরা ও ছোট বোন রিণিকা ত্রিপুরা।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও খাগড়াছড়ি সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) তারেক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান জানান, পিতা পুত্র হত্যা মামলায় ৯ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪ জন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক বাকী আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ১১ মে রাতে পূর্ব শত্রæতার জেরে খাগড়াছড়ি জেলা সদরের নুনছড়ি দেবতা পুকুর থলিপাড়া গ্রামে এলাকার ইউপি মেম্বার কালী বন্ধু ত্রিপুরার নেতৃত্বে চিরঞ্জিত ত্রিপুরা ও তার পুত্র কর্ণ জ্যোতি ত্রিপুরাকে গুলি, ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। হামলায় চিরঞ্জিতের স্ত্রী ভবেলক্ষী ত্রিপুরা ও কর্ণ জ্যোতির স্ত্রী বিজলী ত্রিপুরা গুরুত্বর আহত হয়। হামলার পরের দিন নিহত চিরঞ্জিতের ছোট ছেলে নিহার কান্তি ত্রিপুুরা বাদী হয়ে খাগড়াছড়ি সদর থানায় খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য খেকোনেশ্বর ত্রিপুরা, মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, ইউপি সদস্য কালী বন্ধু ত্রিপুরাসহ ৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১০ জনকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যাকাণ্ডের আগে গত ৭ মে চিরঞ্জিত ত্রিপুরার ওপর খাগড়াছড়ি বাজারে হামলা করে কালী বন্ধু ত্রিপুরার সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনায় চিরঞ্জিত ত্রিপুরা নিজেই হামলার দিন ১১ মে খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

আরও পড়ুন