মৈত্রী পানি বর্ষণে মাতোয়ারা বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায়
নববর্ষকে ঘিরে “সাংগ্রাই ” এর মৈত্রী পানি বর্ষণে মেতে উঠেছিল বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায়। বুধবার বিকালে জেলা শহরের রাজার মাঠে পানি বর্ষণে মেতে উঠে তারা।
মৈত্রী পানি বর্ষণ উৎসবে যোগ দিয়ে বিকাল থেকে দলে দলে মারমা তরুন-তরুণীরা নির্ধারিত মঞ্চে অবস্থান করে। এ সময় চারিদিকে মারমা সঙ্গীতের মূর্ছনা, আর নাচ-গানে আনন্দে মেতে উঠে শিশুসহ সবাই। এক একজন তরুণ একজন তরুণীর দেহে জল ছিটায়। আর ঐ তরুণীও ঐ তরুণের দেহে পাল্টা জল ছিটিয়ে তার প্রতি উত্তর দেয়। এভাবে তরুণ-তরুণীরা পানি ছিটানোর মধ্যে দিয়ে মৈত্রী পানি বর্ষণে মেতে উঠে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকালে জেলা শহরের রাজার মাঠে পানি বর্ষণ উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক পর্বের শুভ উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কেএসমং মারমা।
এসময় উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি চ নু মং মারমা, সিনিয়র সহ-সভাপতি নিনি প্রু মারমা, মানবাধিকারকর্মী ডনাই প্রু নেলীসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক এবং ক্রীড়াপ্রেমীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় হাজার হাজার পাহাড়ী-বাঙালী মৈত্রী পানি বর্ষণে উপভোগ করে। সন্ধ্যায় একই স্থানে মারমা আদিবাসীদের বিভিন্ন শিল্পীগোষ্ঠী গান পরিবেশন করে উৎসব অঙ্গনকে মাতিয়ে রাখে। সন্ধ্যার পর থেকে রাতভর চলে আদিবাসীদের ঘরে ঘরে ভিন্নধর্মী পিঠা-পুলি তৈরীর কাজ। পাড়ায় পাড়ায় প্যান্ডেল সাজিয়ে তারা একে অন্যের বাসায় গিয়ে পিঠা তৈরী করে।
পুরাতন বছরকে পেছনে ফেলে আসে নতুন বছর, আর নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে পাহাড়ের আদিবাসী পল্লীর মারমা’রা আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠে মৈত্রী পানি বর্ষণসহ সাংগ্রাই উৎসবকে কেন্দ্র করে।
পাহাড়ের আদিবাসীরা ভিন্ন ভিন্ন নামে বর্ষবরণের এই উৎসব পালন করে থাকে। ত্রিপুরাদের বৈসুর (বৈ), মারমাদের সাংগ্রায়ের (সা) চাকমাদের বিঝুর (বি) থেকে বৈসাবি হলেও বান্দরবানের মারমারা বর্ষবরণের এই উৎসবকে সাংগ্রাই বলে থাকে।
এই বিষয়ে উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি চ নু মং মারমা বলেন, বুধবার রাতব্যাপী পিঠা তৈরি উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্টান ও সবশেষে ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় বিহারে বিহারে সমবেত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে বান্দরবানে সমাপ্তি ঘটবে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসবের।