রথ বির্সজনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বান্দরবানের “ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ”

NewsDetails_01

প্রবারণা পূর্নিমার বাধ ভাঙ্গা জোসনার আলোতে শতশত ফানুস বাতির ঝিলিক। আতশবাজিতে উজ্জল রাতের আকাশ। অন্যদিকে মারমা তরুন তরুনীদের মুখে মুখে “ছংরাসিহ্ ওয়াগ্যোয়াই লাহ্ রাথা পোয়ে: লাগাইমে” (অর্থাৎ ওয়াগ্যোয়াই এসেছে, এসো সবাই মিলেমিশে রথযাত্রায় যাই)। মারমা এই গানের সুরের মুর্ছনায় মুখরিত বান্দরবানের পল্লীগুলো।
প্রবারণা পূর্ণিমায় ওয়াগ্যোয়োই পোয়েঃ এর রথ যাত্রা উৎসবে মারমা তরুন তরুনীরা এই গানটি গেয়ে রথ টেনে নিয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বান্দরবান শহরের রাজারমাঠ এলাকাটি ছিল উৎসবের মিলনমেলা। মাঠ থেকে শতাধিক ফানুস বাতি উড়ানো হয়।

অন্যদিকে তরুন তরুণীরা শহরের উজানী পাড়া মধ্যম পাড়া এলাকায় রথ টানা উৎসবে অংশ নেয়। নেচে গেয়ে ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে পালন করে প্রবারণা পূর্ণিমা। প্রবারণা পূর্ণিমাকে মারমারা বলে ওয়াগ্যোয়াই পোয়ে:। এটি মারমা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। এই উৎসবের মূল আকর্ষণই হলো মারমা তরুন তরুনীদের দল বেঁধে রথ টানা। এছাড়া পাড়ায় পাড়ায় পিঠা পুলি তৈরীর আয়োজন, নাচ-গানের আসর, পূজা-অর্চনা।

NewsDetails_03

এদিকে সন্ধ্যায় পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর রথে মোমবাতি প্রজ্জলন করেন। এছাড়া রাজার মাঠ থেকে ফানুস উড়ান। করোনার কারণে দীর্ঘ দুবছর সীমিত আয়োজনে বান্দরবানে এই অনুষ্টান হয়েছে । দীর্ঘদিন পর উৎসব হওয়ায় শত শত মানুষ ভিড় জমায় উৎসবে। পাহাড়ি বাঙ্গালীদের সম্প্রীতির মিলন মেলায় পরিণত হয় জেলা শহর। এবার ওয়াগ্যোয়াই পোয়েঃ উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে ছিল ফানুস বাতি উড়ানো, পিঠা তৈরী, হাজার প্রদীপ প্রজ্জলন ও বিহারে বিহারে পূজা অর্চনা ।

উৎসবে শুধু মারমারাই নয়,অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকজনও আনন্দ-উদ্দীপনা নিয়ে অংশগ্রহণ করেন। ফলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিলনমেলায় পরিণত হয় বান্দরবান। উৎসব দেখতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এবারও প্রচুর সংখ্যক পর্যটক বান্দরবান শহরে ভিড় জমিয়েছেন। মধ্যরাতে সাঙ্গু নদীতে রথ বির্সজনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে এবারের আয়োজন।

আরও পড়ুন