রাঙামাটিতে জেএসএসের বিরুদ্ধে আওয়ামীলীগের পোস্টারিং : জনসংহতি সমিতির প্রতিবাদ

NewsDetails_01

জেএসএস লগো
সম্প্রতি রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ কর্তৃক প্রচারিত ও প্রকাশিত “জেএসএস সন্ত্রাসীদের এ কেমন নৃশংসতা!!” শিরোনামে একটি পোস্টার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। উক্ত পোস্টারে গত ৫ ডিসেম্বর বিলাইছড়িতে ‘রাসেল মারমাকে পাশবিক ও নিষ্ঠুর নির্যাতন’ ও জুরাছড়িতে ‘অরবিন্দু চাকমাকে খুন’ এবং ৬ ডিসেম্বর ‘ঝর্ণা চাকমাকে পাশবিক হামলার’ ঘটনায় জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করা হয়। ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ এনে জনমতকে বিভ্রান্ত ও জনসংহতি সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ কর্তৃক এ ধরনের ষড়যন্ত্রমূলক পোস্টার প্রচার ও প্রকাশের ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রবিবার পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-তথ্য প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়,বস্তুত রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার নির্লজ্জ অপব্যবহার, চরম দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন, টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি, দলীয় কোন্দল, দলাদলি ও হানাহানি, জঘন্য দলীয়করণ ইত্যাদির ফলে জেলা আওয়ামীলীগ নেতৃত্বের উপর রাঙামাটি জেলা তথা পার্বত্যবাসী ক্ষুব্ধ ও অতিষ্ঠ। সর্বোপরি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি স্বাক্ষরের পর দীর্ঘ ১২ বছর ব্যাপী বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার পরও চুক্তি বাস্তবায়নে নির্লজ্জ গড়িমসি এবং রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের চুক্তি বিরোধী ও জুম্ম স্বার্থ পরিপন্থী ভূমিকার ফলে অনেক আগে থেকেই পার্বত্যবাসী জেলা আওয়ামীলীগ নেতৃত্বকে পরিত্যাজ্য করেছে।
জেলা আওয়ামীলীগের এই ব্যর্থতা ধামাচাপা দিতে ও জনমতকে বিভ্রান্ত করতেই সম্প্রতি আওয়ামীলীগ কর্মীদের উপর কে বা কারা হামলা করেছে কিংবা কি কারণে হামলা করা হয়েছে তার কোন যথাযথ তদন্ত এবং তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই এসব ঘটনা ঘটতে না ঘটতেই রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জনসংহতি সমিতিকে দায়ী করে আসছে। এসব ঘটনাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে জনসংহতি সমিতির নেতৃত্বকে হয়রানি ও নাজেহাল করা, সর্বোপরি পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্থ করার হীনউদ্দেশ্যে রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ জনসংহতি সমিতির সদস্য ও নিরীহ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে চলেছে এবং জেলা আওয়ামীলীগের যোগসাজশে সেনাবাহিনী ও পুলিশ কর্তৃক অন্তত ২৫ জন নিরীহ গ্রামবাসী ও জনসংহতি সমিতির সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে; আরো ২৬ জনকে সাময়িক আটক করে নানাভাবে হয়রানি ও নির্যাতন করা হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে সর্বশেষ এ ধরনের মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ এনে পোস্টার ছাপিয়ে অপপ্রচারে অবতীর্ণ হয়েছে, যা রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগ নেতৃত্বের রাজনৈতিক অবিমৃষ্যকারিতা ও সাংগঠনিক দেউলিয়াপনারই বহি:প্রকাশ ঘটিয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি পার্বত্য চট্টগ্রামের আপামর জুম্ম জনগণ তথা স্থায়ী অধিবাসীদের অধিকারকামী একটি রাজনৈতিক দল এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে লিপ্ত রয়েছে। রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগের ভুলে গেলে চলবে না যে, পূর্বে জনসংহতি সমিতিকে উদ্দেশ্য-প্রণোদিতভাবে ‘অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী’ হিসেবে অপবাদ দিয়ে কেউ তাদের ষড়যন্ত্রমূলক নীল-নক্সা সফল করতে পারেনি। বরঞ্চ জনসংহতি সমিতি বরাবরই পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকার বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে প্রতিনিধিত্বশীল ও নির্ভরযোগ্য একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। তাই এ ধরনের অবিমৃষ্যকারী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার জন্য এবং রাজনৈতিক হীনউদ্দেশ্যে প্রকাশিত এই ষড়যন্ত্রমূলক পোস্টার প্রত্যাহার করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি রাঙামাটি জেলা আওয়ামীলীগকে আহবান জানাচ্ছে।

আরও পড়ুন