রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেএসএস এমএন লার্মা গ্রুপের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি শক্তিমান চাকমার শেষকৃত্যে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে নিহত হয়েছেন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা কনক চাকমা (৩৮)।
গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ১৬ মিনিটে নিজের ফেসবুক পাতায় শেষ স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক দলের কেন্দ্রীয় নেতা কনক চাকমা। স্ট্যাটাসে কনক চাকমা লিখেছিলেন, ‘খেলাটা এখানেই শেষ নয় বরং হয়তো তীব্রতরভাবেই শুরু, খালি ঘরে নাম পূরণের খেলা’’
তার এ স্ট্যাটাসের নিচে কমেন্টস করেছেন অনেকেই। এর মধ্যে স্বপন চাকমা নামে একজন গালাগাল দিয়ে রীতিমতো কনক চাকমাকে স্ট্যাটাসটির জন্য তাকে হুমকি দিয়ে লিখেছেন, খালিঘর পূরণ করার ইচ্ছা যদি থাকে তাহলে তবলছড়ির কনক নামের ছেলিটির খালিঘর পূরণ করা হবে। সাবধান! এমন পোস্ট কতটা ভয়ংকর হবে তা কেউ যানে না।
উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে নানিয়ারচরের বেতছড়ি এলাকায় শক্তিমান চাকমার শেষকৃত্যে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারে নিহত হন ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) প্রধান তপন জ্যোতি চাকমা ও কেন্দ্রীয় নেতা কনক চাকমাসহ পাঁচজন।
নিহত অন্য তিনজন হলেন মহালছড়ির সেতু লাল চাকমা (৪০), সুজন চাকমা (৩০) ও খাগড়াছড়ির পানছড়ির মাইক্রোবাসচালক বাঙালি সজীব (৩৪)।
এ হামলায় আহত হয়েছেন আরও সাতজন। এর মধ্যে দিগন্ত চাকমা (৩০), অর্চিন চাকমা (২৮), অর্জুন চাকমা (৩০) ও মিহির চাকমার (২৮) অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া জীবন্ত চাকমা (৩০), শান্তিরঞ্জন চাকমা (৩৪) ও প্রীতি কুমার চাকমা (৩৮) খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জেএসএস (এমএন লারমা) কেন্দ্রীয় কমিটির রাজনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক বিভূরঞ্জন চাকমা এঘটনার জন্য প্রতিপক্ষ ইউপিডিএফ(প্রসিত) গ্রুপকে দায়ী করে বলেন, শক্তিমান চাকমাকে যারা হত্যা করেছিল তারাই ন্যাক্কারজনক এমন ঘটনা ঘটিয়েছে।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মোশারফ হোসেন জানান, গুরুত্বর আহত ৪জনকে চমেকে প্রেরণ করা হয়েছে। হাসপাতালের মর্গে নিহত ৫ জনের ময়নাতদন্ত চলছে।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আলী আহমদ খান বলেন, নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর খাগড়াছড়ি সদরের খাগড়াপুর কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে ইউপিডিএফ গণতান্ত্রিক নামে নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ করে ইউপিডিএফর সামরিক শাখার নেতা তপন জ্যোতি চাকমা ওরফে বর্মা।