রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নতুন চেয়ারম্যান অং সুই প্রু

NewsDetails_01

দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬১ জেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন নয়, ফের পূর্নঃগঠন হলো তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ। বান্দরবানে ক্যশৈহ্লা, খাগড়াছড়িতে কংজরী চৌধুরীকে বহাল রেখে নতুনত্ব আনা হলো রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে। রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমাকে সরিয়ে নতুন চেয়ারম্যান হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হলো অং সুই প্রু মার্মাকে। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র পাহাড়বার্তাকে এই তথ্য নিশ্চিত করে।

সূত্র জানায়, আইন অনুযায়ী জনগনের ভোটে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন হওয়ার কথা থাকলে বিগত বিভিন্ন সরকারের সময় থেকে সরকারদলীয় লোক মনোনয়ন দিয়ে পূর্নঃগঠন হয়ে আসছে পার্বত্য জেলা পরিষদ, এবারও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। পার্বত্য জেলা পরিষদে প্রথম ও শেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৯ সালের ২৫ জুন। এরপর আর নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। নির্বাচন অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনগণের দাবি থাকলেও সরকার তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে দলীয় লোক মনোনয়ন দিয়ে পরিচালনা করছে।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তিচুক্তির আইনে বলা আছে, পাহাড়ের স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে প্রণীত পৃথক ভোটার তালিকায় ৩ পার্বত্য জেলায় পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে ১ জন চেয়ারম্যান এবং ৩৩ জন সদস্য নির্বাচিত হবে।

আইনে আরো বলা আছে, প্রত্যেক পরিষদে সংশ্লিষ্ট জেলার জনগণের ভোটে উপজাতিদের মধ্য থেকে ১ জন চেয়ারম্যান ও ২০ জন সদস্য, অ-উপজাতি ১০ জন এবং সংরক্ষিত তিনটি মহিলা আসনে ২ জন উপজাতি ও ১ জন অ-উপজাতি সদস্য নির্বাচিত হবেন। প্রতিটি নির্বাচিত পরিষদের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। কিন্তু গত ৩০ বছর ধরে নির্বাচন না হওয়ায় পার্বত্য জেলা পরিষদগুলোত জনগণের অংশগ্রহন নিশ্চিত হয়নি।

NewsDetails_03

১৯৯৬ সালের ৫ আগস্ট নির্বাচিত তিনটি পরিষদ ভেঙে দিয়ে প্রত্যেক পরিষদে ১ জন চেয়ারম্যান ও ৪ জন সদস্য মনোনয়ন দিয়ে অর্ন্তর্বতীকালীন পরিষদ গঠন করে আওয়ামী লীগ সরকার। পাশাপাশি ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত পার্বত্য শান্তিচুক্তির শর্তে ১৯৯৮ সালে আইন সংশোধন করে পার্বত্য জেলা স্থানীয় সরকার পরিষদ থেকে ‘পার্বত্য জেলা পরিষদ’ নামে সংশোধিত হয়। এরপর আর নির্বাচন দেয়নি সরকার। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৫ মার্চ পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ১ জন চেয়ারম্যানসহ সদস্য সংখ্যা ৫ থেকে ১৫-তে উন্নীত করে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করে সরকার।

সূত্র জানায়, তিন পরিষদের সদস্য পদের ৪৫টি পদের মধ্যে বান্দরবানে পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য থোয়াই হ্লা মং ও মোস্তাফা জামাল জেলার থানচি ও লামা উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার কারনে অন্যদিকে রাঙ্গামাটিতে চান মনি তংচঙ্গ্যা, জানে আলম ২ জনের মৃত্যু জনিত কারন, অন্য ১ সদস্যকে বাদ দেওয়াসহ মোট ৫টিসহ আরো কয়েকটি পদে নতুন সদস্য নিয়োগ দিয়ে পূর্নঃগঠন হয়েছে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ থেকে পরিষদ পূনঃর্গঠনের জন্য সূপারিশ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় আর এই তালিকার পরে পার্বত্য মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠালে প্রধানমন্ত্রী গত ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার অনুমোদন প্রদান করেন, আর আগামীকাল ১০ ডিসেম্বর এই বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।

এদিকে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদে নির্বাচন না হওয়ায় দলীয় লোকজন লাভবান হলেও বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এসব জেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জোরালো দাবি জানিয়ে আসছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ স্থানীয়রা।

আরও পড়ুন