রাত নাম‌লেই পা‌ল্টায় লামার মি‌রিঞ্জা ভ‌্যালীর চেনা রূপ

চ‌লে মাদক ও জুয়ার আসর

বান্দরবা‌নের লামার আর্কষনীয় পর্যটন স্পট নাম মি‌রিঞ্জা ভ‌্যালী ‌রি‌সোর্ট এন্ড রে‌ষ্টু‌রেন্ট। দি‌নের বেলায় মি‌রিঞ্জা ভ‌্যালী থে‌কে চার‌দিক থে‌কে প্রাকৃ‌তিক দৃশ‌্যাবলী দেখ‌লে মন প্রাণ জু‌ড়ি‌য়ে যায় পর্যটক‌দের। আর তা‌তেই পাগল হ‌য়ে উঠে ভ্রমণ পিপাসু মানু‌ষেরা। কিন্তু রা‌তের আধার নাম‌তেই এটি হ‌য়ে উঠে অত‌্যান্ত ভয়ংকর। চা‌রদি‌কে নিরব নিস্তব্ধ। বিদ‌্যুৎ না থাকায় আরো ভয়ংকর হ‌য়ে উঠে এটি। পর্যটক‌দের গা ছমছম ক‌রে। হঠাৎ যেন শিউরে উঠে পর্যটকর‌া। আর এমনই ভী‌তিকর প‌রি‌বেশে সারারাত জু‌ড়ে চ‌লে বখা‌টে‌দের আসর, মদ‌্যপান, ইয়াবা সেবন ও জুয়া‌খেলা প্রতি‌দিনের নিত‌্যসঙ্গী। সব‌কিছুর নেতৃত্ব দেন উপ‌জেলা প‌রিষ‌দের সরকারী গাড়ী চালক জিয়াউর রহমান নি‌জে। আর এসব কিছু ধামাচাপা দি‌তে স্থানীয় প্রশাসন ও মি‌ডিয়া‌কে ম‌্যা‌নেজ করার কথাও স্বীকার ক‌রে‌ছেন গাড়ী চালক জিয়াউর রহমান নি‌জেই।

স্থানীয়রা জানায়, লামার মি‌রিঞ্জা ভ‌্যালী‌র মা‌লিক লামার সা‌বেক উপ‌জেলা চেয়ারম‌্যান মোস্তফা জামা‌নের গাড়ী চা‌লক জিয়াউর রহমা‌ন। প্রভাবশালী লামা আওয়ামীলীগ নেতা ও সা‌বেক উপ‌জেলা চেয়ারম‌্যান মোস্তফা জামা‌নের গাড়ী চা‌লক। তখনকার সম‌য়ে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করে অসহায়‌দের কাছ থে‌কে হা‌তি‌য়ে নি‌য়ে‌ছেন কো‌টি কো‌টি টাকা। লামায় গ‌ড়ে‌ছেন ক‌য়েক কো‌টি টাকার সম্পদ। আর এ টাকায় লামার শহ‌রের প্রবেশ প‌থে গড়ে তুলেছেন মি‌রিঞ্জা ভ্যালি রি‌সোর্ট অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট না‌মে এ রি‌সোর্ট। প্রশাস‌নিক কোন ধর‌নের অনু‌মোদন ছাড়া প্রভাব খা‌টি‌য়ে এটি গ‌ড়ে‌ছেন তি‌নি।

এদি‌কে গত দুই বছর অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে উপজেলা পরিষদের গাড়ি না চালিয়েও বেতন নিচ্ছেন প্রতি মাসে। অথচ নি‌জে পাজেরো জিপ গাড়ি কিনে সে‌টি নি‌জেই চা‌লি‌য়ে জেলাজু‌ড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নি‌জের রি‌সোর্ট ব্যবসাও দেখাশোনা করছেন তি‌নি।

তারা আরো জানায়, এটি দি‌নে দেখ‌তে আর্কষনীয় হ‌লেও রা‌তের প‌রি‌বেশ ভিন্ন। অন্ধকার নাম‌লেই গা ছমছম ক‌রে। পর্যটকরা ভো‌গেন নিরাপত্তাহীনতায়। এরই ম‌ধ্যে জিয়াউর রহমা‌নের নের্তৃ‌ত্বে সারারাত চ‌লে মদ‌্যপান, ইয়াবা সেবন পাশাপা‌শি জুয়া‌খেলা আর হৈ‌চৈ যেন যেন এরই এক‌টি অংশ।

স‌রেজ‌মি‌নে ঘু‌রে দেখাগে‌ছে, লামা শহ‌রের অদূ‌রে শহ‌রের প্রবেশ প‌থে পাহাড়ী আঁকাবাঁকা নির্জন নয়না‌ভিরাম স্থা‌নে গ‌ড়ে উঠে‌ছে মি‌রিঞ্জা ভ‌্যালী। অথচ এর আশে পা‌শে নেই আইনশৃংখলা বা‌হিনীর কোন নিরাপত্তা চৌ‌কি। শহ‌রের অদূ‌রে হওয়ায় প্রশাস‌নের নজরদারীও নেই সেখা‌নে। পর্যটক‌রা অনায়া‌সে নি‌চের ইচ্ছেমত আস‌ছে আর য‌া‌চ্ছে। কোন জবাব‌দিহীতাও নেই সেখা‌নে। কিন্তু সন্ধ‌্যা নাম‌লেই শহ‌রের অ‌নেক বখা‌টে ঝা‌কে ঝা‌কে মোটর বাইক চা‌লি‌য়ে আস‌তে থা‌কে মি‌রিঞ্জা ভ‌্যালীর দি‌কে। সারারাত সেখা‌নে মদ, ইয়াবা আর জুয়ার আসর ব‌সি‌য়ে ভোর রা‌তে ফি‌রে আসে বা‌ড়ি‌তে। অ‌নে‌কের ম‌তে সম্প্রতি রা‌তের বেলায় অ‌নেক মামলার আসামীদের দেখা মি‌লছে সেখা‌নে।

NewsDetails_03

এ বিষ‌য়ে বান্দরবা‌নের বা‌সিন্দা নুরুল হক ব‌লেন, লামার মি‌রিঞ্জা অত‌্যান্ত সুন্দর ও ম‌নোরম। ত‌বে সেখা‌নে পর্যটকদের কোন নিরাপত্তা নাই। প্রশাস‌নিক অনু‌মোদনও নাই, তারপরও কিভা‌বে এটি চল‌ছে জানা নাই।

সোহরাব হো‌সেন না‌মের একজন জানায়, আওয়ামীলীগ সরকা‌রের আম‌লে নি‌জের ভাই ও মা‌য়ের প্রভাব কা‌জে লা‌গি‌য়ে সে অ‌বৈধভা‌বে এটি গ‌ড়ে‌ছে। তার বিরু‌দ্ধে তদন্ত ক‌রে ব‌্যবস্থা নেয়া জরুরী।

লামার সা‌বেক ‌পৌর মেয়র মো: জ‌হিরুল ইসলাম ব‌লেন, জিয়াউর রহমান বে‌শির ভাগ সময়ই মদ‌্যপ অবস্থায় থা‌কে। রা‌তে আরো বে‌শি মাতাল হ‌লে সবাইকে গা‌লিগালাজ ক‌রে। তাই কেউ তার সম্পর্কে মুখ খুল‌তে চায়না। ত‌বে পর্যটক‌দের নিরাপত্তার বিষয়‌টি প্রশাস‌নের নজ‌রে রাখা উচিত।

এ ব‌্যাপা‌রে জিয়াউর রহমান ব‌লেন, আমি আর সরকারী চাকুরী কর‌তে চাইনা। আমার মি‌রিঞ্জা ভ‌্যালী‌তেই বাকী সময় পার কর‌বো। এখা‌নে পু‌রোপু‌রি নিরাপত্তা র‌য়ে‌ছে জা‌নি‌য়ে তি‌নি ব‌লেন, এখা‌নে রা‌তে কোন মদ, ইয়াবা সেবন বা জুয়ার আসর চ‌লেনা।

এ বিষ‌য়ে লামা উপ‌জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী ব‌লেন, নিরাপত্তার জন‌্য মি‌রিঞ্জা ভ‌্যালীর আশেপা‌শে কোন পু‌লিশ ফা‌ঁড়ি নেই। ত‌বে এর পা‌শেই বি‌জি‌বির এক‌টি পর্যটন কেন্দ্র র‌য়ে‌ছে। নিরাপত্তার জন‌্য ইতিম‌ধ্যে এক‌টি প‌ু‌লিশ ফা‌ঁড়িও দেবার প‌রিকল্পনা র‌য়ে‌ছে সেখা‌নে।

আরও পড়ুন